ধূপকাঠিওয়ালা

হৃদয় বিদারক বারবার পার হই ধূপকাঠির শহর।

সাইকেলের চেনে মাংসল শাঁস। পথের দু’ধারে

রক্তকরবী যেন! তবুতো সুগন্ধ, বজ্রপাতে জ্যোৎস্নার

আভাস। প্রশ্নবোধক চিহ্নের চারিদিকে বুড়িমায়ের থান,

পীরের দরগা লেগে থাকে। মেঘেদের সুন্নত হলে

গাঙ্গেয় উপত্যকায় শান্তিজল ঝরে। অশোকস্তম্ভ পার

হয় নিরালা দুপুরে। কাঠির ধোঁয়ায় আলোকিত হয়

নশ্বর বেদীমূল। স্বেদের আঘ্রাণে আদর নেমে আসে

আটচালায়। শীতলার থানে কত’না গর্ভনিরোধক!

অশ্রুমতি বাতাসে তখন অগুরুচন্দনের নেশা। কেউ

যেন মিথুন সারে জলশঙ্খের অন্ধকারে।

 

ধূপকাঠির লেপ তোষকে তখন জুঁইফুলের গান…

 

 


জাহাজডুবির পর

অলৌকিক। মেঘ আর বাতাসের ঘন চলাচলের পর

রোদের পুষ্পস্তবক পরে থাকে নরম ঝিনুকের কাজললতায়।

আলোর খাঁজে খাঁজে ত্রস্ত নক্ষত্রের চলাচল।  বন্দরে বন্দরে

নাবিকের আনাগোনা। অশ্রু আর স্বেদের ভিতর আজও

কি কোনও সমুদ্র জেগে আছে, নাকি সমস্ত পথ জুড়ে
নির্ভার শিশিরের ঘনীভবন! পদশব্দে মুখরিত হয় সন্ধ্যার

বন্দরপোত। শঙ্খচিলের সমাবর্তনে রাত নেমে আসে।

 

এখন অন্ধকার। নীলাভ সবুজ শৈবালের গায়ে লেগে আছে

প্রাচীন নক্ষত্রপুঞ্জের ঘ্রাণ। জলের তরঙ্গপথ ঘিরে দাঁড়ায়

উৎসারিত হারেমের তাবায়েফরা। আহা, এক ঐশ্বরিক

সৌন্দর্য যেন! কি তার রূপ, কি তার রঙ! শীতল গহ্বরে

যেন আলোর দিকনির্দেশ। নেশা লাগে ব্যাহত কম্পাসে।

মাস্তুলে কত যুগের রেত ও রক্তের বাসনা। ডেকে ডেকে

সিস্মিক স্তবগান। জাহাজঘাটায় কোনো শোক নেই আর!

 




দুর্বাসা

মৃত্যুশোক দেবোনা আর, বরং নোড়া থেকে চেটে নিস

সর্ষেবাটার ঝাঁঝ। কান্নার আদলে তৈরী রাখিস রাজধর্ম,

কালাপানিতে ডুবে মরতে মরতে চরে ভেসে উঠবে ফুলে

ওঠা বিভীষিকা। বিষাদে নয়, মোহনবাঁশিতে! সূর্যালোকে

ঝলসে যাবে অশ্রু বিমোচনের দিন। গাভীন মেঘ ঝুলে

থাকবে আফিমগাছের ডালে। স্তন্য নীল হয়ে উঠবে ঈর্ষায়।

 

মৃত্যুশোক নয়, ক্ষুধার্ত শঙ্খচূড় উঠে আসবে, তোর নাভি

থেকে লালসা বরাবর!!

 

 


সত্য ঘটনা অবলম্বনে 

স্পষ্ট জরার লক্ষণ। তবুও দূরে দূরে সরে গেছে জনপদ

বহুগামি চলে গেছে খাণ্ডবপ্রস্থের পথ। ঝরাবকুলের গন্ধে

তটস্থ শৃগালের স্বেদে, বীর্যে ডানা মেলে অঘ্রাণ।

 

স্পষ্ট মরক। মারী ও মী্রার ভিতর একপ্রহর গান তবু।

কৃষ্ণসার হরিণের পিছনে ছুটে গেছে ঝুটোবনের মুরলীওয়ালা

গতজন্মের কান্না থেমে গেছে মেঘলাপাহাড়ের পাকদণ্ডীতে।

 

স্পষ্টত শোক এ। ভিজে যাওয়া দাবদাহে ধিকিধিকি ঘ্রাণ

সুবচনী দিনের আশায় প্রহর গোনে গোলাঘরের খরিশ

বালিশ বিছানা ভিজে ওঠে অকারণেই, রাত নামাবার

প্রয়োজন পড়েনা।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন