তোমাকে যেকোনো সংখ্যা দিয়ে গুণ করা হোক
না কেন
তোমাকে
৩ দিয়ে গুণ করলে উর্বশী
৪ দিয়ে গুণ করলে মেনকা
৫ দিয়ে গুণ করলে রম্ভা আর
৬ দিয়ে গুণ করলে তুমি তিলোত্তমা হয়ে যাও।
কিন্তু আমি এসব চাই না। আমি জানতে চাইছি,
তোমাকে
কত দিয়ে গুণ করলে লক্ষ্মী
কত দিয়ে গুণ করলে সরস্বতী
কত দিয়ে গুণ করলে সাবিত্রী আর
কত দিয়ে গুণ করলে তুমি দুর্গা হয়ে যাবে?
আজ বিরহে ঘায়েল হবার পর,
তোমার দেবীত্ব বিষয়ে কোনো আগ্রহ নেই,
বুঝতে পারছি,
আমি এতদিন ভুল জেনেছি,
তোমাকে যেকোনো সংখ্যা দিয়ে গুণ করা
হোক না-কেন, উত্তর,
মাঝরাতের জ্বর।
সাদা-ফুলদানিটি যে ভুলগুলি করেছিল
আমার অনেক ধারণা মিথ্যা হয়ে যাচ্ছে।
আমি জানতাম,
ফুলদানি মিথ্যা বলতে পারে না। হিংস্র হতে
পারে না। খুন করতে পারে না।
সাদা-ফুলদানিটি যে ভুলগুলি করেছিল। তার,
১ম ভুল, সে Gloomi Sunday গানটি জ্যোৎস্নারাতে
গেয়েছিল।
২য় ভুল, সে ভূত-মাংসের রেস্তোরাঁর সন্ধান
করেছিল।
৩য় ভুল, সে হেমলক-গাছ চাষ করার স্বপ্ন
দেখেছিল।
তারই সাইডএফেক্টে সে অস্তিত্বহীন হয়ে যাচ্ছে।
মিস্টার ভ্যানগঘ সাদা-ফুলদানিটি সরিয়ে, সেখানে
বসিয়ে দিচ্ছেন, একটা হলুদ-ফুলদানি।
মর্গে যাবার পাসপোর্ট
রবিবার আমি বাড়িতে একটা বেড়াল
এনেছি। বেড়ালটা খুব বুদ্ধিমান। আর ওর
মনটাও খুব ভালো। ঠাণ্ডা স্বভাবের বলে আমি
ওর নাম দিয়েছি বরফ। ওর নাম আইসক্রিম
রাখলে ক্রিম শব্দের উদাসীনতায় ওর শরীরে
চর্বি জমে যেত।
বেড়ালটা আনার পর থেকেই ঘরের
ইঁদুরগুলো আমাকে সন্দেহ করছে। বাড়িতে দুটো
কুকুর আছে জেনে, বেড়ালটা আমাকে সন্দেহ
করছে। শুধু a + b-ই নয়, b + c -ও জানে, সন্দেহ,
একটা ব্যাধি।
এই ব্যাধির ভাইরাসগুলো টাকা না-নিয়েই
মর্গে যাবার পাসপোর্ট তৈরি করে।
বীজগণিত মাংসের রেস্তোরাঁ
সন্ধে ৬টায় রেস্তোরাঁ খোলার পর থেকেই
পুরো রেস্তোরাঁটা ভিড়ে গিজগিজ করে।
এখানে শুধু বীজগণিতের মাংস পাওয়া যায় না,
পাটিগণিত আর জ্যামিতির মাংসও
পাওয়া যায়।
তাহলে রেস্তোরাঁর নাম বীজগণিত মাংসের রেস্তোরাঁ
কেন?
দোকানের মালিক একজন গণিতবিদ। আর
খদ্দেররা সবাই গণিতের উজ্জ্বল স্নাতক।
মালিক সকলকে শিখিয়ে দেন, কীভাবে
বীজগণিতের মাংস চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে হয়।
শুধু তাই নয়, বীজগণিতে কতটা ভিটামিন প্রোটিন
আর কার্বোহাইড্রেট আছে, তাও তিনি অঙ্ক
কষে দেখিয়ে দেন।
বীজগণিতের রমরমা দেখে, পাটিগণিত আর
জ্যামিতির মাংসগুলো হতাশায় ভুগছে।
এসব দেখেই মালিক, রেস্তোরাঁর নাম বদলে
ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এবার তিনি রেস্তোরাঁর নতুন নাম দেবেন,
Math Resturant.
প্রিয় চেয়ারটির জন্য
এই চেয়ারটা একজন জাপানি
ছেলে কিনেছিল। টেবিলের ওপর খাতা-কলম
নিয়ে সে সারাদিন অঙ্ক বাজাত।
পাশেই বিছানা। বিছানাটা ওকে বলত, সাইকো।
এই বিছানাটাতেই ছেলেটি রাত ১০টার পর
তলিয়ে যেত।
ছেলেটি প্রতিদিন চেয়ারটির গায়ে পারফিউম
ছড়িয়ে দিত। দূর থেকে বাশোর হাইকু
শোনাত।
ছেলেটি নেই।
এখন রাত হলেই চেয়ার আর টেবিল জাপানি
ভাষায় গল্প করে। বিছানাটি দূর থেকে শোনে।
আমি একদিন ডাকবাক্স খুলে
বোবা। জাপানি ছেলেটি তার প্রিয় চেয়ারটির জন্য,
এক-গুচ্ছ চেরিফুলের গন্ধ পাঠিয়ে দিয়েছে।
এখানে সিরিয়াল দ্যাখার নেশা ছাড়ানো হয়
বিজ্ঞাপনে লেখা :
এখানে সিরিয়াল দ্যাখার নেশা ছাড়ানো হয়।
বিজ্ঞাপন দেখেই চেনা-অচেনা অনেকে এসেছে।
চেম্বারের সামনেই লেখা :
বাংলা সিরিয়াল দ্যাখা ছাড়ানো, ৫০০০ টাকা,
হিন্দি সিরিয়াল দ্যাখা ছাড়ানো, ৩০০০ টাকা,
ডাক্তারবাবু ভিতরে আছেন।
কম্পাউন্ডার একে একে নাম ধরে রোগীদের
ডাকছেন।
চেক-আপের পর ডাক্তারবাবু,
প্রত্যেককে একটা আই-ড্রপ লিখে দিচ্ছেন।
এই ড্রপ সন্ধ্যা ৬টায় দু-চোখে ২ ফোঁটা লাগিয়ে
সোজা ছাদে গিয়ে...
মিথ্যা বলতে পারব না, আজ রবিবার
মেহেদিপাতার ফেসওয়াশ
কিনলাম। দাম,৩২০ টাকা। আমি কিছুতেই বলতে
পারব না, ৪২০। তাহলে সবাই আমাকে
৪২০ বলবে।
মিথ্যা বলতে পারব না, আজ রবিবার।
রবিবার মিথ্যা বললে, আয়নাটির মেমোরি
হ্যাং হয়ে যায়।
তখন তার সামনে শকুন্তলা দাঁড়ালে,
প্রতিবিম্বে ভেসে ওঠে রক্ষা-কালীর মুখ। গলায়
অজস্র পাবলিকের মাথা।
রবিবার মিথ্যা বললে, আয়নাটি খুব চিৎকার
করে। সেই চিৎকারে বাড়ির বাল্বগুলো
ফিউজ হয়ে যায়।
অন্ধকার না-ভালোবাসলে, রবিবার সত্যিকথা
বলুন।
মিথ্যা বলার পর আয়নাটি যদি চুপ থাকে,
সঠিক মুখ দেখায়, জেনে নেবেন,
সে ঘুষখোর হয়ে গেছে।
জ্বরদেবী
আবার জ্বর এল।
সকালে ১০১ ছিল। বিকেলে ১০৩।
এরপর বেড়ে ১০৪ - ১০৫ - ১০৬ অথবা ১০৭
হতেও পারে।
অনেকরকম জ্বর। আমি সব নাম মনে রাখতে
পারি না। তাই বলি,
কাক-জ্বর শালিক-জ্বর দোয়েল-জ্বর
মাছরাঙা-জ্বর। আজ মাছরাঙা-জ্বর এসেছে। তাই
মৌরলামাছ খেতে ইচ্ছে হচ্ছে।
শরীর দুর্বল। মুখে স্বাদ নেই। নার্স হাত ধরে
বাথরুম নিয়ে যাচ্ছে। ফিরিয়ে আনছে। গায়ে
আগুনের চুল্লি। মনে হচ্ছে ১০০টা আরব্য রজনি
জড়িয়ে ঘুমাই। কাঁপতে কাঁপতে মনে হচ্ছে, জ্বর
কোনো পাখি নয়, রাজকন্যা। রাজতন্ত্র উঠে গেছে,
রাজকন্যাই-বা বলব কীভাবে? অতএব আমি
নিশ্চিত, জ্বর এক দেবী। তার পুজোর জন্য
আপেল আঙুর কাজু-কিসমিস জুগিয়ে যাওয়াই
নিয়ম। এই মরা সন্ধ্যায় দেখছি, ঘরশুদ্ধ
লোক তাকে গালাগালি করছে। আর সাজিয়ে
দিচ্ছে, ট্যাবলেট-ভোগ।
ঘরকুনো ইঁদুরের পিকনিকের গান
মাইনাস করতে গিয়েছিলাম।
ফিরে এসে দেখি ৩ টুকরো আপেলের ১ টুকরো
ইঁদুর খেয়ে নিয়েছে।
আমি এখন যদি বাকি ২ টুকরো খাই।
তাহলে আমার চশমাটির পাওয়ার বেড়ে যেতে
পারে। অথবা চশমার কাচে কুয়াশা
জমতে পারে।
টেবিলে পড়ে আছে, আ আর পে।
ইঁদুর ল খেয়ে নিয়েছে। মানুষ ল খেয়ে হজম
করে নিচ্ছে,
খিদেকে হঠিয়ে দিতে এটা দোষের নয়।
আমি বুঝতে পারছি, মাইনাস করতে
আরো ২ বার বাথরুম যেতে হবে।
তাহলেই ১ জন ইঁদুর পে আর ১ জন আ খেয়ে
নেবে। তারপর সারা টেবিলে পড়ে থাকবে,
ঘরকুনো ইঁদুরের পিকনিকের গান।
খেজুরগাছ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা
খেজুরগাছ তালগাছের
মাসতুতো-বোন জানার পরই আমার মরুভূমি
দ্যাখার ইচ্ছে হল।
খেজুরগাছ লম্বায় কত ফুট,
সেটা বড়ো কথা নয়। বড়ো কথা সে মেঘের
মেসেজ পড়তে পারে কিনা।
পৃথিবীতে কত রকমের খেজুরগাছ আছে,
সে কথা তার ছায়ায় বিশ্রাম করা মহামান্য উটগুলি
বলতে পারবেন।
জলে ভেজানো ৪টে খেজুর খাওয়ার পর,
যাঁরা মক্কার আজান শুনতে পায়, তাঁদের কখনো
হৃদরোগ হয় না।
শীত এসে গেছে। আসুন আমরা
খেজুরগাছের নীচে বসে, এক-গ্লাস এই
স্বর্গীয় রস পান করি। আর ভেবে দেখি,
কীভাবে রস চুরি বন্ধ করে গোফুর আলির পাশে
থাকা যায়।
খেজুরগাছ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা :
১. পিঠে চুলকুনি হলেও খেজুরগাছে পিঠ
ঘষবেন না।
২. খেজুরগাছের ছায়ায় উটের নিন্দা করবেন না।
৩. খেজুরগাছকে মরুভূমির গল্প শোনাবেন না।
৪. খেজুরগাছের গায়ে হিসি করবেন না।
৫. বউয়ের সঙ্গে ঝগড়া করে খেজুরগাছে
উঠবেন না।
না কেন
তোমাকে
৩ দিয়ে গুণ করলে উর্বশী
৪ দিয়ে গুণ করলে মেনকা
৫ দিয়ে গুণ করলে রম্ভা আর
৬ দিয়ে গুণ করলে তুমি তিলোত্তমা হয়ে যাও।
কিন্তু আমি এসব চাই না। আমি জানতে চাইছি,
তোমাকে
কত দিয়ে গুণ করলে লক্ষ্মী
কত দিয়ে গুণ করলে সরস্বতী
কত দিয়ে গুণ করলে সাবিত্রী আর
কত দিয়ে গুণ করলে তুমি দুর্গা হয়ে যাবে?
আজ বিরহে ঘায়েল হবার পর,
তোমার দেবীত্ব বিষয়ে কোনো আগ্রহ নেই,
বুঝতে পারছি,
আমি এতদিন ভুল জেনেছি,
তোমাকে যেকোনো সংখ্যা দিয়ে গুণ করা
হোক না-কেন, উত্তর,
মাঝরাতের জ্বর।
সাদা-ফুলদানিটি যে ভুলগুলি করেছিল
আমার অনেক ধারণা মিথ্যা হয়ে যাচ্ছে।
আমি জানতাম,
ফুলদানি মিথ্যা বলতে পারে না। হিংস্র হতে
পারে না। খুন করতে পারে না।
সাদা-ফুলদানিটি যে ভুলগুলি করেছিল। তার,
১ম ভুল, সে Gloomi Sunday গানটি জ্যোৎস্নারাতে
গেয়েছিল।
২য় ভুল, সে ভূত-মাংসের রেস্তোরাঁর সন্ধান
করেছিল।
৩য় ভুল, সে হেমলক-গাছ চাষ করার স্বপ্ন
দেখেছিল।
তারই সাইডএফেক্টে সে অস্তিত্বহীন হয়ে যাচ্ছে।
মিস্টার ভ্যানগঘ সাদা-ফুলদানিটি সরিয়ে, সেখানে
বসিয়ে দিচ্ছেন, একটা হলুদ-ফুলদানি।
মর্গে যাবার পাসপোর্ট
রবিবার আমি বাড়িতে একটা বেড়াল
এনেছি। বেড়ালটা খুব বুদ্ধিমান। আর ওর
মনটাও খুব ভালো। ঠাণ্ডা স্বভাবের বলে আমি
ওর নাম দিয়েছি বরফ। ওর নাম আইসক্রিম
রাখলে ক্রিম শব্দের উদাসীনতায় ওর শরীরে
চর্বি জমে যেত।
বেড়ালটা আনার পর থেকেই ঘরের
ইঁদুরগুলো আমাকে সন্দেহ করছে। বাড়িতে দুটো
কুকুর আছে জেনে, বেড়ালটা আমাকে সন্দেহ
করছে। শুধু a + b-ই নয়, b + c -ও জানে, সন্দেহ,
একটা ব্যাধি।
এই ব্যাধির ভাইরাসগুলো টাকা না-নিয়েই
মর্গে যাবার পাসপোর্ট তৈরি করে।
বীজগণিত মাংসের রেস্তোরাঁ
সন্ধে ৬টায় রেস্তোরাঁ খোলার পর থেকেই
পুরো রেস্তোরাঁটা ভিড়ে গিজগিজ করে।
এখানে শুধু বীজগণিতের মাংস পাওয়া যায় না,
পাটিগণিত আর জ্যামিতির মাংসও
পাওয়া যায়।
তাহলে রেস্তোরাঁর নাম বীজগণিত মাংসের রেস্তোরাঁ
কেন?
দোকানের মালিক একজন গণিতবিদ। আর
খদ্দেররা সবাই গণিতের উজ্জ্বল স্নাতক।
মালিক সকলকে শিখিয়ে দেন, কীভাবে
বীজগণিতের মাংস চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে হয়।
শুধু তাই নয়, বীজগণিতে কতটা ভিটামিন প্রোটিন
আর কার্বোহাইড্রেট আছে, তাও তিনি অঙ্ক
কষে দেখিয়ে দেন।
বীজগণিতের রমরমা দেখে, পাটিগণিত আর
জ্যামিতির মাংসগুলো হতাশায় ভুগছে।
এসব দেখেই মালিক, রেস্তোরাঁর নাম বদলে
ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এবার তিনি রেস্তোরাঁর নতুন নাম দেবেন,
Math Resturant.
প্রিয় চেয়ারটির জন্য
এই চেয়ারটা একজন জাপানি
ছেলে কিনেছিল। টেবিলের ওপর খাতা-কলম
নিয়ে সে সারাদিন অঙ্ক বাজাত।
পাশেই বিছানা। বিছানাটা ওকে বলত, সাইকো।
এই বিছানাটাতেই ছেলেটি রাত ১০টার পর
তলিয়ে যেত।
ছেলেটি প্রতিদিন চেয়ারটির গায়ে পারফিউম
ছড়িয়ে দিত। দূর থেকে বাশোর হাইকু
শোনাত।
ছেলেটি নেই।
এখন রাত হলেই চেয়ার আর টেবিল জাপানি
ভাষায় গল্প করে। বিছানাটি দূর থেকে শোনে।
আমি একদিন ডাকবাক্স খুলে
বোবা। জাপানি ছেলেটি তার প্রিয় চেয়ারটির জন্য,
এক-গুচ্ছ চেরিফুলের গন্ধ পাঠিয়ে দিয়েছে।
এখানে সিরিয়াল দ্যাখার নেশা ছাড়ানো হয়
বিজ্ঞাপনে লেখা :
এখানে সিরিয়াল দ্যাখার নেশা ছাড়ানো হয়।
বিজ্ঞাপন দেখেই চেনা-অচেনা অনেকে এসেছে।
চেম্বারের সামনেই লেখা :
বাংলা সিরিয়াল দ্যাখা ছাড়ানো, ৫০০০ টাকা,
হিন্দি সিরিয়াল দ্যাখা ছাড়ানো, ৩০০০ টাকা,
ডাক্তারবাবু ভিতরে আছেন।
কম্পাউন্ডার একে একে নাম ধরে রোগীদের
ডাকছেন।
চেক-আপের পর ডাক্তারবাবু,
প্রত্যেককে একটা আই-ড্রপ লিখে দিচ্ছেন।
এই ড্রপ সন্ধ্যা ৬টায় দু-চোখে ২ ফোঁটা লাগিয়ে
সোজা ছাদে গিয়ে...
মিথ্যা বলতে পারব না, আজ রবিবার
মেহেদিপাতার ফেসওয়াশ
কিনলাম। দাম,৩২০ টাকা। আমি কিছুতেই বলতে
পারব না, ৪২০। তাহলে সবাই আমাকে
৪২০ বলবে।
মিথ্যা বলতে পারব না, আজ রবিবার।
রবিবার মিথ্যা বললে, আয়নাটির মেমোরি
হ্যাং হয়ে যায়।
তখন তার সামনে শকুন্তলা দাঁড়ালে,
প্রতিবিম্বে ভেসে ওঠে রক্ষা-কালীর মুখ। গলায়
অজস্র পাবলিকের মাথা।
রবিবার মিথ্যা বললে, আয়নাটি খুব চিৎকার
করে। সেই চিৎকারে বাড়ির বাল্বগুলো
ফিউজ হয়ে যায়।
অন্ধকার না-ভালোবাসলে, রবিবার সত্যিকথা
বলুন।
মিথ্যা বলার পর আয়নাটি যদি চুপ থাকে,
সঠিক মুখ দেখায়, জেনে নেবেন,
সে ঘুষখোর হয়ে গেছে।
জ্বরদেবী
আবার জ্বর এল।
সকালে ১০১ ছিল। বিকেলে ১০৩।
এরপর বেড়ে ১০৪ - ১০৫ - ১০৬ অথবা ১০৭
হতেও পারে।
অনেকরকম জ্বর। আমি সব নাম মনে রাখতে
পারি না। তাই বলি,
কাক-জ্বর শালিক-জ্বর দোয়েল-জ্বর
মাছরাঙা-জ্বর। আজ মাছরাঙা-জ্বর এসেছে। তাই
মৌরলামাছ খেতে ইচ্ছে হচ্ছে।
শরীর দুর্বল। মুখে স্বাদ নেই। নার্স হাত ধরে
বাথরুম নিয়ে যাচ্ছে। ফিরিয়ে আনছে। গায়ে
আগুনের চুল্লি। মনে হচ্ছে ১০০টা আরব্য রজনি
জড়িয়ে ঘুমাই। কাঁপতে কাঁপতে মনে হচ্ছে, জ্বর
কোনো পাখি নয়, রাজকন্যা। রাজতন্ত্র উঠে গেছে,
রাজকন্যাই-বা বলব কীভাবে? অতএব আমি
নিশ্চিত, জ্বর এক দেবী। তার পুজোর জন্য
আপেল আঙুর কাজু-কিসমিস জুগিয়ে যাওয়াই
নিয়ম। এই মরা সন্ধ্যায় দেখছি, ঘরশুদ্ধ
লোক তাকে গালাগালি করছে। আর সাজিয়ে
দিচ্ছে, ট্যাবলেট-ভোগ।
ঘরকুনো ইঁদুরের পিকনিকের গান
মাইনাস করতে গিয়েছিলাম।
ফিরে এসে দেখি ৩ টুকরো আপেলের ১ টুকরো
ইঁদুর খেয়ে নিয়েছে।
আমি এখন যদি বাকি ২ টুকরো খাই।
তাহলে আমার চশমাটির পাওয়ার বেড়ে যেতে
পারে। অথবা চশমার কাচে কুয়াশা
জমতে পারে।
টেবিলে পড়ে আছে, আ আর পে।
ইঁদুর ল খেয়ে নিয়েছে। মানুষ ল খেয়ে হজম
করে নিচ্ছে,
খিদেকে হঠিয়ে দিতে এটা দোষের নয়।
আমি বুঝতে পারছি, মাইনাস করতে
আরো ২ বার বাথরুম যেতে হবে।
তাহলেই ১ জন ইঁদুর পে আর ১ জন আ খেয়ে
নেবে। তারপর সারা টেবিলে পড়ে থাকবে,
ঘরকুনো ইঁদুরের পিকনিকের গান।
খেজুরগাছ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা
খেজুরগাছ তালগাছের
মাসতুতো-বোন জানার পরই আমার মরুভূমি
দ্যাখার ইচ্ছে হল।
খেজুরগাছ লম্বায় কত ফুট,
সেটা বড়ো কথা নয়। বড়ো কথা সে মেঘের
মেসেজ পড়তে পারে কিনা।
পৃথিবীতে কত রকমের খেজুরগাছ আছে,
সে কথা তার ছায়ায় বিশ্রাম করা মহামান্য উটগুলি
বলতে পারবেন।
জলে ভেজানো ৪টে খেজুর খাওয়ার পর,
যাঁরা মক্কার আজান শুনতে পায়, তাঁদের কখনো
হৃদরোগ হয় না।
শীত এসে গেছে। আসুন আমরা
খেজুরগাছের নীচে বসে, এক-গ্লাস এই
স্বর্গীয় রস পান করি। আর ভেবে দেখি,
কীভাবে রস চুরি বন্ধ করে গোফুর আলির পাশে
থাকা যায়।
খেজুরগাছ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা :
১. পিঠে চুলকুনি হলেও খেজুরগাছে পিঠ
ঘষবেন না।
২. খেজুরগাছের ছায়ায় উটের নিন্দা করবেন না।
৩. খেজুরগাছকে মরুভূমির গল্প শোনাবেন না।
৪. খেজুরগাছের গায়ে হিসি করবেন না।
৫. বউয়ের সঙ্গে ঝগড়া করে খেজুরগাছে
উঠবেন না।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন