খাঁচার বাইরে
চারিদিকে ধর্মের খাঁচা বানিয়ে রেখেছে
আমি কোন্ খাঁচায় ঢুকব তবে?
পাখি হয়ে নিজেকে দেখছি
বাঘ হয়ে নিজেকে দেখছি
শিম্পাঞ্জি হয়ে নিজেকে দেখছি
অথবা আরও যা যা ভাবতে পারি আমি
খাঁচা নাকি নিরাপত্তার ঘর
ঝড়-বৃষ্টি-বজ্রবিদ্যুৎ অথবা সামাজিক অরণ্যের ভেতর
দিব্যি ঘুমানো যায়
আহার-নিদ্রা-মৈথুন আর হরপ্পার মতো গভীর স্নানাগার
সব আছে সেখানে
পূর্ণিমাও আসে, রাতজাগা অথবা কোলাহল
বক্তৃতা দিতে চাইলে মঞ্চ আছে
মঞ্চে মঞ্চে কী সুন্দর চেয়ার
হাততালিও আছে
কখনও কখনও নিজেকে নিজেই ঘোষণা করা যায় ধর্মের ষাঁড়
দীর্ঘবাক্যে ক্রিয়াপদ বিশেষণ আলো হয়ে বসে
দাঁড়ি-কমাবিহীন পোশাক-আশাক মদ-মাংস
মেদও বাড়তে পারে, গাড়ি-ঘোড়া ইন্টারনেট অনলাইন শপিং
খাঁচার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে-থাকতে
পাখিদের কলকাকলি শুনি
বাঘেরও গর্জন শুনতে পাই
হ্রেষা—বৃংহণ—বুক্কন—কৃজন—রা
শুনতে শুনতে আমার রাত হয়ে যায়...
মাছ
'এত মৎস্য তবু তুমি মৎস্য শিকার করো নাই'
রঙিন জলে নামতে পারি না
মাছেরা বুড়বুড়ি তুলছে
পুচ্ছের তাড়নায় ঢেউ দিচ্ছে জলে
মাছেরা কী দারুণ ঐশ্বর্যময়!
বিভোর দোলাচালে
এই আমার সামাজিক পথ
যদিও চকিতে উদ্ভাসিত বিড়ম্বনা
যদিও হৃদয়ে জমে অনুতাপ
আলোছায়ার দংশনে
অদ্ভুত বিপন্ন সংগ্রাম
থেমে যেতে চায় - -
তবু দেখি বিলোল জোছনায়
আলতা মাখা মাছ!
নামতে পারি না
ছোট্ট নৌকাটি সামঞ্জস্যহীন
ভরসা নেই, ভরসা নেই
এই বর্ষায় প্রেমিক হবার
নতুন কোনো রাস্তা নেই
কোনো দিকেই নতুন কোনো রাস্তা নেই
দু-একটি প্রাচীন রাস্তায়
আমাদের সন্তান সম্ভাবা দিন চলে গেছে
আমরা সবাই নীলপদ্ম লালপদ্ম তুলে
নিজের দাওয়ায় বসে আছি
অন্ধকারে কে আসবে আমাদের ঘর?
অসুখী জীবন শুধু তোলপাড় করে
ডেকে ডেকে ফিরে যায় অবেলার কাক
আজ সব কথারা চুপচাপ
ডাকার ভাষাও নেই কারও
সব সম্পর্কের ভেতর অন্ধকার
কে নামাল এমন বিচ্ছিন্ন করাত?
মেঘলা জীবন
মেঘলা জীবন ঘুমিয়ে আছে
কলরোলের পাশে
মৃত্যুগন্ধ উড়ছে চতুর্দিকে
রক্তফেনায় বৃষ্টি বজ্রে অসংযমী আলোয়
কে কার কাছে যাবে?
এখানে সব দ্বিমুখী উপমা
ক্রিয়াগুলি তবুও দোলে লাল নীল সংকেতে
খেলার মাঠে উঠছে বাতাস
হাততালিও বাজে
এবারও কি নতুন শারদীয়া ?
শিউলি যদি না ফোটে তো ফুটুক
এখনও অনেক খেলা বাকি আছে!
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন