হেমলকের বাটি
সক্রেটিস বলেছিলেন—
সূর্য কেন দেবতা হতে যাবে!
সূর্য অগণিত নক্ষত্রের একটা,
এর চেয়ে বেশী সম্মান সূর্যও চায় নি কোনদিন।
খালি চোখে মহাশূন্যের অপর প্রান্ত থেকে
তার কোন নিশানা খুঁজে পাওয়া যাবে না।

তিনি নাকি এসব ভুল-ভাল বুঝিয়ে তরুণ সমাজকে নষ্ট করে দিচ্ছেন,
সমাজপতিরা অভিযোগ করল এথেন্সের বিচারালয়ে।
শুনানি হল।
রায় দিল তিন শ জুরি।
অধিকাংশই বললও, তিনি দোষী।
মৃত্যুদণ্ড হবে এখন হেমলক পান করে।

জেলখানায় তার স্ত্রী আত্মীয়-স্বজন দেখা করে চলে গেছে।
সক্রেটিস হেমলকের বাটি স্বচ্ছন্দে তুলে নিলেন হাতে।

সাদা জামার ওপর ধুলোবালি জমে,
আঙুলের হালকা টোকায় ঝরে পড়ে যায়।
সূর্য থেকে যায়।
সক্রেটিস বেঁচে থাকে।
হেমলকের বাটিটাও আছে হয়তো অক্ষত
পৃথিবীর কোন যাদুঘরে।






রঙ
একটা জাঙ্ক ইমেলে চোখটা আটকে গেলো
মুছে ফেলার আগে তাকিয়েছিলাম দৃষ্টি স্থির করে কয়েক দণ্ড।
গত সপ্তায় বাড়ির জন্য রঙ কিনেছিলাম
শেরউইন-উইলিয়ামস থেকে।
তারা পাঠিয়েছে সৌজন্য ইমেল।
তাদের ইমেলে লেখা — মনের মতো রঙ আজো খুঁজে ফিরো  তুমি?






অসুখ
মেয়েটা এসেছিলো বেড়াতে
বললাম তোমার সাথে জলরং করবো এবার বাইরে কোন নদীর পাশে গিয়ে
দেখে শুনে নতুন করে রঙ, তুলি কিনে আনলাম।
ছবি আঁকার সময় হয় নি মনে আছে।
কখন চলে গেলো মেয়েটা!
বু্কের ভেতর একাট ভার মোচড় দিয়ে চোখে কান্না এলো।
আমাকে বলে যায় নি যাবার সময়!
বলে যাবে না কেন?
না বলে গেলে আজন্ম কালের মতো কপালে চুমু দিলাম কি ভাবে?
ভুল আমারই কোথাও
ভুলে যাওয়া রোগ,
কিছু জিনিষ স্মৃতি থেকে হঠাৎ উধাও বেমালুম
যেন ঝরে ধূলো হয়ে যায় মরা তারাদের মতো।





আস্পর্ধা
আস্পর্ধা দিতে হয় তাকে
যে নিতে পারে
গাছের মতো ডালপালার হাত প্রসারিত হতে হতে
অসীম আকাশ ছুঁতে চায়
পারুক বা না পারুক।
কুমার নরম কাদা
সারা গায়ে মেখে মাটির তৈজসপত্র বানায়
যাদুকরী হাতের ছোঁয়ায়।

আস্পর্ধা দিতে হয় কাউকে কাউকে
যেমন বিদ্যাসাগর দিয়েছিলেন
কবি মধুসূদন দত্তকে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন