বাঁশপাতাদীর্ঘ ডানার ঝরনাগাছ। দু-একটায় বেশকিছু মাছি বসে ডিম পাড়ে। আর অণুকণায় ভরে যায় ডানার বিস্তার।
কোনো ডানায় অন্তহীন গোসাপ চরাচ্ছে ফুল্লরা। ওর কি নাওয়াখাওয়া নেই। রাঁধা। চুলবাঁধা। ফেরার সূর্যাস্ত! আর এক ডানায় ব্যাধ। নিজের দিকেই তির তাক করে নিজেরই জন্তুর সাথে বিপুল মস্করায়। কী অফুরন্ত সেই মহড়ার বর্ণালী।
কোনো ডানায় অস্থির আফেন্দি। একটা হেস্তনেস্তর কালো হাওয়া। কবর থেকে হাড়ের ডানহাত আর চোয়ালের সামান্য তুলে মরুবেশ্যাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে পাশায়।
খেজুরপাতার মুকুটে এক মরুসন্ন্যাসিনী। নিরন্তর বালিবিন্দু গোণে। আর মরুকে প্ররোচিত করে তার বিস্তারে। নির্বাণের মায়ায়।
কিছু মাছ ঠোঁটে টেনে তুলেছে অপরিসীম জলের বল্কল। একটু হাওয়া পেলেই যেন উড়বে। একটু গান পেলেই শূন্যের সঙ্গে বসবে বিয়ের ছাঁদনায়। লাখ লাখ সাপের মেখলায় স্বয়ং মনসা। নিজেই সানাই। নিজেই যন্ত্রী। হাসিতে উথলে যাচ্ছে নহবত।
ওদিকে দালিও। রং আর মহাকাব্য ঢেলে বস্তুর মাত্রা আর তলের উৎসবের জাদুকর। অবয়বের ভেতর অবয়বের পঁচিশআয়না বসিয়ে শূন্য ফোলাচ্ছে।
সিসিফাসও। পাথর মুছে নিজেই নিজেকে ঠেলে তুলছে আর গড়াচ্ছে। নিজেই নিজের পর্যবেক্ষক। পরিকল্পক। এবং প্রাচীন অভিনেতা।
স্তন দেবে বলে পাতার আড়াল থেকে মা। জিভে টিনের শিস। আলোর ব্রোঞ্জ থেকে পিলপিল বেরিয়ে আসছে মুণ্ডুছেঁড়া ছায়ার পুতুল।
উচ্চিংড়েভরতি গোধূলি। আর আলপথে বরফকালের মেয়ে। খেলনালন্ঠন আর প্লাস্টিকের ঘণ্টা তুলে ইস্কুল বসাচ্ছে। কাঠের ঘোড়ায় আসছে লালফিতের দিদিমণি। যাদের ধড়গুচ্ছ পড়ে সপ্তদশ শতকের হাড়ের গুমটিতে। লাল হাওয়ার সওয়ার বাচ্চাদের স্রোতের কবন্ধ। ব্যাঙের ছাতার নীচে দীর্ঘ চতুষ্পাঠী। সাররাত পুথির মর্মরে ডুবে যায়।
হারমোনিকার মৃত মাস্টার। ভারী সুর তুলে মৃত কুকুরদের ডাকের সন্ধেকে নামাচ্ছে খাঁচায়। বাটিভরতি ঘিলুর পাশে তাদের ঘুমে বিলি দিচ্ছে ছায়ার মাস্টার।
টিলার শূন্যে খ্রিস্টপূর্ব কাঠামোর শক্ত বেড়াল। জিভে পাথর হয়ে যাওয়া গান। আর তার থাবার বিদ্যুতে দুলে যাচ্ছে শূন্যে মেলা সুরের ফতুয়া।
শুশুকও এসেছে। মুখে কুড়িয়ে আনা মেয়েদের ছোট্ট রান্নাঘর। জোনাকিজ্বলা। মেথিগন্ধের। পিঠে আমারই কঙ্কাল। লেজে ফুরোনো হামাম।
চাঁদ কামড়ে খাওয়া হায়নার যৌনবিলাপ। অর্গান উঠছে। হাজার হাজার বছরের থুত্থুড়ে ক্রাচের আফেন্দি। কবরের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ করে-করে হাড়ের ক্লান্তিতে ধসে।
কবরের ছায়াকে তবু ক্রাচের সম্মোহন থেকে কিছুতেই সরানো যাচ্ছে না।
গীতময় গদ্য কবি সমীরণ এর মনার্ক প্রজাপতির দ্যুতি ছড়িয়ে দিচ্ছে। অথবা কুয়াশা ওড়না গায়ে জড়িয়ে নিলেই সব দুঃখ ভুলে যাবে পাঠক।
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন