লোকটার ফাঁসি হওয়া উচিত
কে লোকটা?
আপনি?
আমি?
আমাদের ফাঁসি হওয়া উচিত
ওর বুক টিপে দ্যাখ
ওর মুখ টিপে দ্যাখ
দুধ নয়, লালা নয়, সময়ের ধারা
নিজের লিঙ্গ চেপে ধরে হ্রীং। ভাবতে চায়? ছিঁড়তে চায়? বুঝতে চায় লিঙ্গহীন জীবন কেমন! চমকে ওঠে। আদর করে, হাত বোলায়, এ কোন সম্পদ? এ কোন বারুদ? এ কোন অট্টহাসি? এ কোন চাপাকান্না? এ কোন হুহু হেহে হিহি! এ কোন হাহাকার! বউ-এর গায়ে হাত দিয়ে কেঁপে ওঠে হ্রীং। মেয়ের দিকে পেছন করে শোয়। হাঁ অনন্ত, হাঁ দন্ত, হাঁ পড়ন্ত এই মানুষবেলা… হ্রীং কি ধর্ষক নয়!
দৃশ্য: ৮
আপনি মানুষ
গালাগাল দিচ্ছেন কেন!
এই মানুষ
আবার!
এই মানুষের মতো কাজ করছিস কেন?
আমাকে মানুষের সাথে তুলনা করতে পারলেন!
আমরা সবাই মানুষ
চুপ কর! চুপ কর!
হ্রীং শুনতে পায়, হাসির শব্দে ফেটে পড়ছে চারপাশ। কাদের হাসি! হ্রীং বিনা দোষে বন্দী করেছে যাদের। গাছ নেই, পশু নেই, পাখি নেই। শুধু হাসি। হ্রীং-এর একা, একার হ্রীং, রক্ত মাংস মূত্র ন্যাড় কষ… আর ওই ঢুকিয়ে দেওয়া জ্বলন্ত বর্শা! ওই ভ্রূণ, ওই চিৎকার। নিজের যৌনাঙ্গের দিকে হাত বাড়ায় হ্রীং। একটা রড, কতগুলো ক্লিপ, আর আর আর… ছায়াটা ঘুরে যায়। মঞ্চের পতাকাটা নড়ে। পতাকা নয়, এ অন্তর্বাস। নিজেকেই ধর্ষণ করেছে হ্রীং। নিজের চিৎকার রেকর্ড করেছে সে।
দৃশ্য: ৭
তদন্ত চলছে
তদন্ত চলবে
বিচার চলছে
বিচার চলবে
শিকার সেলাই করছে কেউ
শিকারি লুকিয়ে পড়ছে আঙুলের ফাঁকে
ছায়ারাজ্যে আগুন খুঁজছে হ্রীং। খোঁজাটি অনন্ত। অনন্তর হাতবদল। ছুরি বদল।
হিমরাত : গুনছে গান্ধারী
রাতজন্ম : শুনছে ধৃতরাষ্ট্র
আর সময় হাসছে হত্যাকালে
হ্রীং খুন করলো কাকে! হাত বাড়ায়। ভিজে যায় হাত। নিজের মাংস ওজন করছে সে। হাড় চুষছে অস্ত সমস্ত মুখে। হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ… শূন্য স্ক্রিন, অসংখ্য চোখ। খবর পড়ছে হ্রীং। আত্মহত্যার খবর দিচ্ছে সে।
দৃশ্য: ৬
এ আমার প্রতিবাদ
এ আপনার ষড়যন্ত্র
We want Justice
বিষ চাই বিষ
‘তোমার কথা হেথা কেহ তো বলে না’
ধ্বংসের কথা বলে
আসুন বদলে দিই চাদর লাল নীল সবুজ গেরুয়া
হে সময় এসো, হে মুহূর্ত ঘন্টা দিন মাস বছর… এসো
লিঙ্গ অপেক্ষায় আছে
‘একটু আগুন দে’
পরিচিত হাড়, হত ক্ষত চাপ তাপ। হ্রীং ভাবে মুক্তিবেগ দিয়ে ছুঁড়ে দেবে কাকে? ১১.২… কী যেন কী যেন… নিজেকে প্রস্তুত করে সে। তীব্র খিদে। রক্তের কিউ বাইছে মাথা গা পা… শব্দ হচ্ছে ডিক ডং ডিক ডং পেকার প্রিক কক কক… তারপর মুখোমুখি, ক্যামেরাম্যান… কয়েকটা আর্তনাদের ছবি তোলা হল।
দৃশ্য: ৫
এবার কয়েকটা টব
টবে ফলানো স্তন
স্তনে ঝোলানো স্পেস
স্পেসে সাজানো xx.xx.xxxx
একটা তারিখ
তারিখটা নিহত পাশে খানিকটা থুতু
হ্রীং শুনতে পায়। শত্রুর মা গা রে সা। কণ্ঠনালীতে হাত ঢোকায়। হাত নয়! শাসক, শাসক… তীব্র যন্ত্রণায় চিৎকার করতে চায়। পারে না। কারা যেন বলছে – ‘চুপ!’। তারিখটা মনে করে হ্রীং… মুখটা কি তারই? থুতুটাও?
দৃশ্য: ৪
ছায়াকে চেটে ফেলছে ছায়া
ছুরিকে গুম করছে ছুরি
টুপিকে মাথায় রাখছে টুপি
আর!
দোষীকে ধরিয়ে দিচ্ছে দোষী
মোমবাতি জ্বলছে? তাকিয়ে আছেন পাস্তেনার্ক
আর শব্দের ভেতর ঘোড়া ছোটাচ্ছেন মায়াকোভস্কি
শিস ধ্বনি, শিস না? তবে কি শিশ্ন? দুটি চোখ, একটি পেন। গুলিয়ে যাচ্ছে সব! গোয়েন্দাবিভাগ খুঁটিয়ে দেখছে লিঙ্গটি। অসংখ্য ধ্বনি আছাড় খাচ্ছে তদন্তের গায়ে। এই চিৎকার ইতিহাসে নেই! এই বিকৃতি, ভূগোলে কোথাও! নাহ, কেউ কি বলছে – ‘এত দ্রুত কেউ তথ্য খোঁজে?’। ‘সত্য’ তবে কি মিথ? একটা কামড়, আর্তনাদ করে হ্রীং। এই তো, নিজের লিঙ্গই পরীক্ষা করছে সে।
দৃশ্য:৩
তড়িৎ
চুল্লি
লাশ লাশ লাশ
পুড়বে? পুড়বে না?
কে আগে! কে পরে!
আঙুল তুলে ঠিক করছে কেউ
ওই তো চেনা ক্ষত
ওই তো চেনা পতাকা
ওই তো আমার দেশ
আমার ছায়া কায়া, আমার ভেসে যাওয়া নাভি
অগণিত যুক্তাক্ষর ছুটে যাচ্ছে আগুনের দিকে। একটির মৃতদেহ আরেকটির মুখে। এসব দেখতে দেখতেই সরিয়ে ফেলছে বিছানা, বালিশ। খুলে নিচ্ছে জামা, প্যান্ট, অন্তর্বাস। ‘শরীরটুকু রেখে দাও গো’ – হাহাকার শুনতে পায় হ্রীং। সত্যিই তো পোড়াবে কাকে! ঝাঁপিয়ে পড়ে সে, জাপটে ধরে। এ কোন বাঁচার আকুতি! আগুন লাগে। নিজের দেহ দাহ করছে হ্রীং। নিজের নাভি ভাসিয়ে দিচ্ছে জলে।
দৃশ্য:২
হ্যাঁ পড়ো ভরবেগ
হ্যাঁ পড়ো অম্ল ক্ষার
জল পড়ো
ব্যাঙ পড়ো ব্যাঙের শরীর পড়ো
জনন পড়ো বৃদ্ধি পড়ো
মানুষ পোড়ো না
তাকিয়ে আছে হ্রীং। পড়ানোর ফাঁকে আয়নাগুলো রাখা। চোখগুলো রাখা। সদবিম্ব অসদবিম্ব। মাপ ও অবস্থান। লিঙ্গ সরে, লিঙ্গ নড়ে। অসীমে হাত বাড়ায় হ্রীং। ডিক ডং ডং ডিক। ওর আয়নাখেলা। অগুন্তি মাথা। ছোট্ট ফাঁক। একটা পেরিস্কোপ। দুটো দল। হ্রীং বনাম হ্রীং। খেলা চলছে। খেলা চলবে!
দৃশ্য: ১
ঘর্ষণ
কতটা!
তেল দাও
কতটা!
ছিন্ন বিচ্ছিন্ন কামনাপুর
শোকপতাকী
কতটা?
‘বুদ্ধিজীবী’ যতটা…
ক্ষয়ে যাচ্ছে জুতো। প্রতিবাদ চলছে। নেশাচোর, হাত রাখছে হাতে। এই প্রতিবাদে পুরস্কার আছে। মঞ্চ আছে। ক্ষমতার স্বাদ আছে। আয় আছে, আয়ু আছে। হ্রীং নড়ে চড়ে বসে। এই সুযোগ। এ সময়বিদ্ধ সুখের কামান। মলম হাতে ছুটে যায় হ্রীং। হাত বাড়ায়। টের পায় ক্ষত। এ কী! নিজের ঘায়ে মলম ঘষছে সে!
দৃশ্য:০
আপনি কে?
আমি সভ্যতা
My lord! তাকিয়ে দেখুন
ওর নাম?
ভোগ
ওর বাড়ি?
অনন্তপুর
ফোন নং
অসীম
অপরাধ?
ওর জন্ম
মিশো ডাকছেন শান্তিপ্রিয় লোকটাকে…
হ্রীং ঘুমিয়ে দেখছে না আর। হ্রীং-এর বিচার করছে হ্রীং।
অসভ্যতা গড়া যায়, হ্রীং জানেন, তাই এত লুকানো আর্তনাদ বেরিয়ে আসে।
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন