মন্দিরা ঘোষের কবিতা 





অনাদি


এই যে এক একটা সমীকরণ 
অঙ্ক মিলিয়ে দেবার সমান্তরাল প্রয়াস
যেখানে আকাশ মানে উচ্চতা 
নদী মানে নিরন্তর সরলতার দিকে 
ধাবমান ইচ্ছেরাশি
এই ইহলগ্ন সকাল
বর্ণে গন্ধে ডুবিয়ে রাখা মন
ব্যাপ্ত নৈঃশব্দ্যরাজিতে বেঁধে দেওয়া স্বর  
সুরের কারসাজিতে গড়িয়ে যাচ্ছে
অন্তর্লীন মুহূর্ত 
পাতায় পাতায় ভোরের সমীহ নিয়ে
বেজে উঠছে আলোর উষ্ণীক
তবু্ও কেবলই শুরুর কসরতে
ফুরিয়ে যাচ্ছে এই শুঁয়োপোকা জীবন






এই অনন্তের ঋক্ষমণ্ডল 
এই বিবৎসা গ্রাম সবুজ শস্য 
আর ঋতপ্রকৃতি তোমারই আদিষ্ট যত
ইহলগ্ন প্রাণ পূর্ণ হলো  প্রশাখায় 
স্তোতাদের দিলে ধ্বনি মন্ত্র 
ঐশীগুণ ছড়ানো  আলোর ইঙ্গিত 
সোমরসে সেবার আয়োজন
তবু্ও বিষাদজলে ছাপিয়ে গেল
দুখজাগানিয়া গাঙ
আগুনপাখির ডানা মুড়ে আসার মুহূর্তে 
নত হোলো চোখ

আমাদের ধাতুমগ্ন আধার
এই করঞ্জাস্তনের মোহ 
এত প্ররোচনা গান–
সবই কি শেষের প্রশ্রয়





 

নিটোল জলের কাছে শান্ত ধীর
বয়ে যাওয়া শিখে নিতে নদীজন্ম সার
ঘর খোঁজে পুষে রাখা যত্নের শেকল 
গ্রহ তারা গাছপালা সুখ
নারীর রমণছায়ায় বেড়ে ওঠা ভ্রূণ 
শিশুর নরম ঠোঁটে পবিত্র দুধলিপিগুলি
খেলাঘরে জন্ম জন্ম আঁক কাটা 
ঝাড়ফুঁক কবজ জীবন
 





মৃত্যু মারীচ আসে দরজার গান নিয়ে
নীরবে এঁকে যায় ছায়ার প্রণাম
ভেসে যায়  একে একে
আমাদের মেধার আকাশ
আলোর ফুলকি আঁকা শিশুকাল
কাচ কাচ আলোয় পিছলে পড়া
 একান্ত জলজকথা
 
অন্তহীন আদি জেগে থাকে একা
শেষ বলে কিছু নেই থাকা বলে কিছু নেই
 নিজেকেই আজ ভাবি কাল ভাবি
আমাকে ছাড়িয়ে আমি জেগে উঠি  
যেন আমারই অনাত্ম্য অনাদি

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন