বনশ্রী রায় দাসের কবিতা 






সম্পর্কে জল ও পাথর                           

অজানা কত কাঁটাঝোপ পেরিয়ে 
উচ্ছে বাড়ির তিক্ততা, লঙ্কা বাগানের ঝাঁঝ
কখনো বেগুন বনের কাঁটা ও লাবণ্য -----
সুডৌল লেবুপাতা সুগন্ধ গড়িয়ে যায় 
সম্পর্কের মানে খুঁজে না পেয়ে চলেছি
নিরাকার .... শূন্যতার দিকে !

আমার ছোট্ট ঘরের ছাদে গোল হয়ে 
নেমে আসে সম্মোহনের নক্ষত্রপুঞ্জ ।

 অমর্শিতাঁত শাড়ির ডোরাকাটা আঁচল 
 পা মেলিয়ে বসে, আমার ঠাম্মা 
 চন্দন বাটছে ,আর বলছে সম্পর্ক হল 
এই চন্দন বাটার মতো, জল ও পাথরে   
 মেশালে তবেই ছড়াবে নিজস্ব সুগন্ধ।




 
        

স্রোতের নোলক                   

বহুদিন অপেক্ষাহীন পড়ে আছে সন্ধি-প্রহর
স্রোত বয়ে যায় অবিরাম সময়ের নোলকে 
পাড় পড়ে থাকে শূন্য খাঁ খাঁ 
নীরব পাড়ায় গাছে গাছে ঝুলে আছে 
নিভন্ত পাতার মায়াঘুর্ণি 
উপুড় হয়ে শুয়ে আছে রোমন্থন পদাবলী 
কথা শেষ হওয়ার আগে 
মাতৃ-জঠরে ঘুমিয়ে পড়লেন অভিমন্যু 

তারপর আর কোন কথা নেই পাখিও নৌকায়  
মাঝে পড়ে থাকলো নিঃসীম অপ্রকাশ।






                   

মারণ সূত্র                                 

বিড়াল তার সতর্ক থাবা গুটিয়ে নিলে 
গৃহস্থের দালানে বিপদের গন্ধ পাই ,
থম মেরে যায় একোরিয়ামের মাছ ,
বাবা-পাখি পালকে চাঁদ নিয়ে উড়ে গেলে
খাখা আগুনে অঙ্কের সূত্র খোঁজে মা-পাখি ।

নিজের ভেতর দগ্ধ হলেও বলতে পারিনি 
মেঘলাদিনের পকেটে লুকিয়ে রাখা 
উড়ন্তচুমুর আদিকাণ্ডের রহস্য , 
সেদিন আমার ফসলের ক্ষেতে ঢুকে 
কিভাবে পুরু-ঠোঁট হয়ে গেল বন্য ইঁদুর ?

বুঝিনি এটা কোন মারণ সূত্রের মধ্যে পড়ে !





                  

মৃত্যু                

পাড় ভাঙা হৃদিউপত্যকা 
অসময়ে উড়ে যায় অক্ষরা পাখি !

শুকোতে চায় না বেদনা-জল ----

প্রবল স্রোত 
বেঁধে রাখলে গ্রাম ভেসে যায় ,
থম মেরে থাকে তারছেঁড়া এস্রাজ ।

শিউরে ওঠে নদীর কঙ্কাল, 
 হে মৃত্যু !
বারবার প্রথা ভেঙ্গে কী পাও তুমি ?

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন