সোমা দত্তের কবিতা
উপচার
এই ধ্বংসের দিনে তুমি যেন জল
শিকড় থেকে পাতায় পাতায় ছড়িয়ে পড়েছ সংশ্লেষে...
সবুজের দিন থেকে পোকার লার্ভা, প্রজাপতি, হিংস্র দাঁতাল সকলেই তোমাকে চেনে–
তবু ধ্রুব সত্য নয় বনজ সম্পদ,
কঠিন অরণ্য থেকে প্রতিশ্রুতির মতো
প্রেম ঝরে পড়ে...
তবু তার নাম নয় সংসার
স্নানঘরে জল পড়ে,
এমনি গড়িয়ে যায়...
জীবজ
আদমের ডায়েরিতে দেখেছি তোমার নগ্ন বাহুমূল। একটি ঘনিষ্ঠ ফলের মতো তার আবেদন প্রথম স্বাদের শব্দকে অর্থবহ করে তোলে। ঋতুর গোলাপি প্রবাহ গাঢ় লাল হলে আমি স্বপ্নের পরিখায় ঢেকে রাখি নিজস্ব উন্মাদনা। চিরকাল জেগে থাকা রিপুর সংযোগে আমাদের মিলনকাল এক মহাজাগতিক অক্ষর। বিস্ফোরণে ছিটকে পড়া অমৃতকণা। ওই দেখো জল ও আগুনের সমাবর্তন। দ্যাখো ব্রজবাসী অনিন্দ্য চিত্তে নিলেন রাধানাম। দেখো ওই পেশীর আণবিক প্রক্রিয়া, উত্থান-ছন্দ। মেঘের ভ্রুকুটি। শীতের ক্রোড়পত্রে চিঠি লিখে জানাও তোমার বিরহ একটি চূড়ান্ত শারীরিক অসুবিধা...
ছবি
সরে যাওয়া যেভাবেই হোক,
দ্বিখন্ডিত হবে যুগ্ম সময়ঘড়ি–
শব্দ হবে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাওয়া জীবনেরও
মৃদু স্বরে উত্তাপ, পারদের উত্তল রেখা ছুঁয়ে,
ফিরে যাবে বিবিধ ফাটল রেখে–
দুঃখের সেইসব ফিরে যাওয়া, উদ্ধত মুখ,
তুমি দেখেছ কি?
বৃষ্টিদিন
বৃষ্টি পড়ছে তাই আমি যাব না সেখানে
ছত্রাক যত বেড়ে ওঠে ভেজা পথে
কুয়োতলা, কলপাড় জুড়ে,
প্রলম্বিত ঘাসের বাহার,
ফুলপাতা আঁকে–
কারুকাজে ভরে দিয়ে আমার শ্রাবণ,
সুঁচ ফেলে-দিলে, ধূসর মাটিতে–
কোন পথে যাব সেই ঘরে...
অতসী ফুটেছে, বেল আর
কাঁঠচাপা– ব্যাকুল গন্ধ যত...
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন