সুচরিতা চক্রবর্তীর কবিতা 







শহরে সকাল হলে

শশব্যস্তভাবে সকাল হয় শহরের রাস্তায়
যে কটা গাছ এখনো দাঁড়িয়ে
 চটপট শুষে নেয় আলট্রাভায়োলেট।
কে যেন খুলে রাখে জলের কল
মাটি জল খায় ভেসে যায় পিঁপড়ের সারি ।
তাড়াতাড়ি যেতে হবে কানাকড়ি ডাকে
হাঁকাহাঁকি করে ভিস্তীওয়ালা।
আমাদের বড়ো তাড়া এখুনি ফুরোবে দিন অশোধিত ঋণ
শহরের বুকচেরা কাটাকুটি খাতা।
কে রাখে হিসেব! ভুলভাল গোঁজামিল
সকালের দায় নেই অথবা রাতের
ছোটাছুটি মোটা রুটি যৌন খেলা
ঘাম জুড়িয়ে দেবে তারাদের গান চাঁদের সাম্পান।
তারপর প্রতিদিন এক-একটা সকাল।






যখন নিভিল আলো

বড়ো অসময়ে ভাসিয়া গিয়াছে পথ নিভিয়া গিয়াছে আলো
যতখানি বাসিয়াছি ভালো
তার বেশি সুখ বহিবার সাধ্য নাহি ছিলো।
আজি এ পীতাম্বর আলো - অঝোর বারিধারা
গাহিবারে গান - কাঁদিবারে প্রাণ
এ কেমনে প্রকাশি ভালোবাসা!
প্রেম আসি বহুবার কড়া নাড়ি যায়
দোর খুলি নাই, স্পর্শ পাই পাছে অবশেষ আর কি বা আছে
কেবলি এই টুকু আজন্ম চাহিবার
ভিক্ষাপাত্র খানি লুন্ঠিত থাক তোমার পায়ের কাছে।





প্রতিবিম্ব

বহু দিন পর শহর ঘুমল কাল।
আমিও পেরিয়ে গেলাম
চালচুলো হীন ইচ্ছে ঘরের চৌকাঠ ।
ধীর পায়ে এগোন আলেয়ার কফিনের দিকে
সব কথা জমে থাকে মমির ত্বকের নীচে ।
এবার ডানা মেলো আমার জলপাই রঙা মন
তুলসী কাঠে সেজে ওঠো মিথ্যের প্রলেপে।
চেনা মুখ গুলো আজ মুখ দেখে ঘষা কাচে ;
কাব্য আড়াল খোঁজে মায়া নদীটির কাছে।






ভোরের স্বপ্ন

আকাশে হেলান দিয়ে বসে আছি নিশ্চিত ফলনের আশায়
আগুন গ্রাস করছে জেনেও ক্লান্ত চাঁদ নেমে আসে বুকে।
জীর্ণ উঠোনে বৃত্ত কাটে উঁচু নিচু স্বপ্ন দেখা ভোর
নিজেকে নিজের ঘেন্না করে, ক্ষততে আয়না দেখাই।
আজ বাতাস পোঁ ধরেছে কপাল থেকে মুছে দেবে টিপ
মুহূর্তের কাছে শব্দ চাইলে ঝড় ওঠে, আমাদের পেছনের বাগান
কান্নাকাটি করে মৃত্যুর গল্প শোনায়।
ভুট্টা ঘাসে আগুন লাগলে শিশুর আর্তনাদ আমাকে সমুদ্রের কাছে নিয়ে যায়।
সমস্ত দরজা বন্ধ ; আবার আকাশে হেলান দিয়ে বসি পোড়া ফসল নিয়ে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন