রত্নদীপা দে ঘোষের কবিতা 




চাঁদের কবিতারা 


২৪ 

শীতের ক্ষেতে চাঁদ যেন কুয়াশার মটরশুঁটি। 
হালফ্যাশনের শিফনপরা কক্ষপথে সজনীগো শিশির। 
উত্তরদিকের জানালায় ছিট কাপড়ের চাঁদ শুনে বুঝেছি, ঈশ্বরের আঁকা অয়েল পেইন্টিংরা
কৃষকের রুগ্ন শরীরে সেলাই করা মাতৃভাষার কাঠকুটো। ছলছলাৎ কদমঘাটে উদ্বাহু চাঁদ উথলে মিটিমিটি ময়ূর। ম্যাজিক আর ম্যাজিশিয়ানের ভেলকি টপকে দরমার চাঁদ যেন রতিদিগন্তে বিয়েদম্পতি। পিঠের উল্কায় প্রথম অর্গাজম খিলখিলিয়ে!




২৫ 

কতোবার যে চাঁদের চামড়া খুলে মাংস সরিয়ে চাঁদের লালায় পাক খেয়ে চাঁদের হাহাকারে মগজের বরফ গলিয়ে চাঁদের রক্তরসে লেবেঞ্চুসের খোসা ছাড়িয়ে চাঁদের পাশায়, লুডোখেলার ঊরুতে, সালসা হরিণের ভুরুতে, লালসামেঘের বাঘচিহ্নে,কতোবার চাঁদের শালপাতায় ভিজে সূর্যের ভুল বকায়, মিশরীয় নিঃশ্বাসে পিরামিডের জ্যাকেট খুলে সাবোটাজের সাবমেরিনে, নিমকের হারামিপনায়, হিমায়িত হুমড়ি পান করে ইরোটিক জ্বরগহ্বরে, কতোবার যে চাঁদের বিরাশি সিক্কা খেয়ে গ্রহণের যাঁতাকলে! 





২৬ 

চাঁদের সঙ্গে আশ্চর্য একটা সম্পর্ক আমার! কেমন একটা যেন। ঠিক ভাষায় প্রকাশ করতে পারি না। কখনো মনে হয় চাঁদ এলোচুল বিহঙ্গ। আমি উষ্ণস্তন জড়ানো আলুথালু ব্রেসিয়ার। 
ঈষৎ নোনতারং সেক্সটম্বুর চাঁদ! আমি গেলাস ভরা মাস্টারবেশন। চাঁদ হলেন মরুভূমি পাড়ি দেওয়া উটমাখির যৌনতা। আমি বালির গেরস্থালিতে মশগুল মরীচিকার যৌনাঙ্গ। 
চাঁদ যেন বাজিকর! আমি জাগ্লারির মৌরসিপাট্টা! চাঁদ খুব স্পর্শকাতর একজন শেষরাত। আমি আঠারোর রাতশেষ,আঠালো সোলাঙ্কি। 
চাঁদ আর আমি – বর আর বউ!  বারো লক্ষ বছর ধরে শানবাঁধানো শিলভাঙায় ফুড়ুৎ! 





২৭ 

চাঁদের সংসার গোলাকার মৃৎপাত্র। সাদা ধনুকের সমুদ্রে হেমাঙ্গিনী স্রোত।শ্বাস আর বায়ুর সামঞ্জস্য রেখে  কনে দ্যাখা লালজাহাজ। পলিমাটির লাভা। জমাট বাঁধে না এমন ফসফরাস।জল টলটলে মেরুন বিজলিবাতি। চাঁদের সংসারে সরু গলি নেই একটিও। লম্বা চওড়া ঈশ্বরের আমলে তৈরি পিচরাস্তা। পল্লীগীতির মতো দেখতে পাখিরিক্সারা এ পাড়া ও পাড়া! 
মাথার ওপরে  বিশ্রামস্ট্রীট! মানুষের শুনশান। মেয়েমানুষের সামিয়ানা।
চাঁদের সংসারটি কাঁখে নিয়ে নিসর্গের পাঁজরে হিজাবের মতো মিলিয়ে যাচ্ছে ধ্রুবতারা! 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন