শাশ্বতী মিত্রের কবিতা 






অন্ধ

আস্তে আস্তে নিভে যাচ্ছে হাত। সংকেত ছিল মুঠোর ভিতর। উপাসনা গৃহের দেওয়াল ও চুড়ো বাতাসের চেয়েও লঘুভার! আকার তো ধরে না। প্রকারে কেবল পালক পালক ভাব ।  ঘড়ি গলে মিশে  যাচ্ছে কালো কালো শব্দে। এসময় প্রেম মেঘের মতো ভাসে, ভাঙে, আছড়ে পড়ে। ডাক দিলে বিহ্বল তরঙ্গ কাঁপে। প্রেমিকের তো নাম থাকতে নেই। তার চৌহদ্দির মানে জানতে নেই। বুঝতে নেই তার বিরহে কোথায় দানাপানি, কোথায় তার প্রতিজ্ঞা পণ নয়। আস্তে আস্তে যে হাত নিবে যাচ্ছে তার মুঠোর ভেতরেই সংকেত ছিল।

প্রেমিক বুঝেছে অন্ধ তার ঋতু








আসনপিঁড়ি 

আবছা ঘুমে তন্দ্রা হেঁটে যায় উর্বর মেঘের দিকে। তন্দ্রা ও ঘুমের মাঝে খেলা করে অবিনশ্বর মেঘ।  আর বাদল উড়ে এলে নিদ্রাপথযাত্রী মুছে দেয় লিখিত বয়ান। সাদা কাপড়ে হাওয়ার ফুলে ওঠা দেখি। আধখানা ভুল যেন তরী বেয়ে এসে আপশোস ঠেলে দেয়। গোটা ভুল ডুবে যায় বুদবুদ তুলে। যে মুদ্রা করতলে আক্ষেপ ছিল, সে খসে পড়ে ধীর বেদনায়। অলিগলি দিয়ে চলে কারা যেন ছায়াবিষণ্ণ পৃথিবীর দিকে। আস্তে আস্তে তারা চলে গেলে গেলে ঝাঁপিয়ে পড়ে আদিম তারকা।

তন্দ্রা ও ঘুমের মাঝে আসনপিঁড়ি পেতেছে আহাম্মক







মন্মথ

জীবন থেকে যাপন ঝরে গেলে পাঁজর কথা বলে। তামাদি হয়ে যাওয়া কবিতারা ছত্রাকে ধূসর। কুচিকুচি করে বিরহের নলি কেটে উগরে দিয়েছি ভালোবাসা। নিজ দহে অম্ল উদ্গারে তুমি তখন ফুঁড়ে দিচ্ছ গোলগোল রুটির সকাল। আর সাঁকোর ক্ষয়ে যাওয়ার মড়মড় পাতার মর্মরে ছয়লাপ। অপ্রিয় মধ্যাহ্নও থেমে গেছে ঘুণের কান্নায়। সাঁকোর ওপর দিয়ে যদি আসে মন্মথ!  ছত্রাক কর্পূরের মতো উবে গেলে কবিতা জাঁকিয়ে দেবে যাপনের ভার।

পাঁজর তো চায়নি কোনোদিন তোমার যাপন






ওড়না

ওড়না ভিজিয়ে দিলে, বাতাস জলীয় হল। কুলুঙ্গির প্রদীপ একা হার মেনে নিল। প্রান্তর জুড়ে কড়াক্রান্তি রোদ ওঠে। অথচ গুমরে উঠে নিরন্তর কর গোনা নামঞ্জুর করে দিলে! মধ্য থেকে ঝরে গেল অঙ্ক জুড়ে অঙ্কের হিসেব। শরীর ভর্তি তারা,  তুমি আগুনের ঘোড়ায় সওয়ার। আজানু কেশ তোমার অথৈ আলেয়ায়। ধীরে ধীরে থেমে গেল অলীক মহড়া।

মঞ্চ তো জানল না ভেজা ওড়নার কথা

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন