আলোর ভূমিকায় অন্ধকার

একটা বাজে বকার খাতায় অজস্র ফিসফাস 
আর চিৎকারনির্মিত অনুগল্পগুলো এখন আর গোপন নেই 
যে গোপন আগলে রাখে ডাহুকের ডিম    
এখানে নির্দ্বিধায় লিপিবদ্ধ আছে 
পাছায় চিমটি কেটে ওর সাথে শুরু হয়েছিল প্রেম 
শেষ হয়েছিল বিছানায় সোশ্যাল মিডিয়ার মেঘমুক্ত আকাশে অজস্র মিম         
ডেকেছিল স্বপ্নে তখন ঘড়িরকাঁটা ঠিক রাত বারোটা 
এক গলা গিলে বেহুশ ভাতার আর ছেলেটিও ফেরেনি 
দখিন দরজা দিয়ে এলো উত্তরের কিম






ভক্তি কিংবা ভক্তের আরাধ্য 

তিন বছরের চিকু বলে রেডি হও রেডি হও দাদাভাই। 
তখন যন্ত্রচালিত মন্ত্রমুগ্ধ গাছ হয়ে যাই। 
বাম কাঁধে এসে বসে একটি চাবি দেওয়া বাঁদর 
আর একটা রহস্যময়ী নীলকন্ঠ ডান হাতের পাতায়। 
সারা গায়ে অজস্র নাম না জানা রংবেরঙের পোকামাকড়ের ওঠানামা। 
চিকু তখন ভাবগম্ভীর মাস্টারমশাই এর ভূমিকায় 
আমি তার রূপগুণমুগ্ধ ছাত্র মাত্র। 
খামখেয়ালি নানা এলোমেলো প্রশ্নের অপেক্ষায়। 
সে বলে এখন সংগ্রহ করা হবে নমুনা। 
অন্তর্গত রক্ত কতটা ঈশ্বরাসক্ত। শুনেছি তুমি বজরংবলির ভক্ত। 
বললাম হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন ধর্মাবতার 
তিনিই তো পরম আরাধ্য আর নমস্যও তিনিই। 

মুচকি হেসে চিকু বলে কিন্তু তিনি তো নিজেই ভক্ত তবে কেন উপাস্য 
তাহলে তো তুমি ভক্তকেই করো ঈশ্বরীয় আরাধনা। 
বললাম হ্যাঁ বাবা ভক্তের ভক্তিইতো ঈশ্বরের আরেক রূপ 
চারপাশে চেয়ে দেখো ভগবানের চেয়ে ভক্তেরই মন্দির 
বেশি করে আছে ছেয়ে






ফিরে যেও কলিঙ্গ যুদ্ধের পর

ঘেঁটু ফুলের কষ্টে আমারও মন খারাপ হয়। 
জল ভরা মেঘ জড়ো হয় কাঁদো কাঁদো বুকে। 
দমবন্ধ স্বপ্নে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় খুব। তখন তোমাকেও  
মা বলে ডাকতে ইচ্ছে করে। 
না বিন্দু না বিসর্গ জেনেও পাখিরা শূন্যতা মেপে নেয় ডানায়। 
গিরগিটি বুঝে যায় পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক রং। 
লাউলতায় জালি পড়া দেখে যেভাবে 
মদনার গর্ভবতী বউ হেসে ওঠে 
আমি সেভাবে কাঁদতে পারি না তুমি নেই বলে। 
আবার এসো আমাদের বাড়ি। 
কলিঙ্গ যুদ্ধের পর রক্তাক্ত শরীরেও 
যেভাবে ফিরেছিলে ছায়াঘরে। 
মা তোমার জন্য পান সাজিয়েছেন আর আমি আঘাটে নোঙোর 
আবার ধর্ষণ করে ফিরে যেও ওদের বাড়ি







খোঁপায় গুঁজেছিলে যে পাখিদের

অর্কাইভে রাখা ছিয়াত্তরের মন্বন্তর আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। 
হাতেআঁকাস্বপ্নে পেরিস্কোপে চোখ রেখে হাঁ করে দেখি 
নিরুপিসির খুরতুতো বোন ঘুমের ভেতর পায়চারি করছে 
আর উঠোনময় ফুটে আছে তারা। তালপুকুরের জলঘোলা করে 
ঘরে ফেরা কিশোরীর অসম্পূর্ণ শরীরে 
সেঁটে থাকা ভিজে জামার নগ্নতায় চোখ আটকে তপোভঙ্গ হয়। 
এরপর গল্প আর বেশি দূর গড়ায়নি। 
সবাই ফিরে গিয়েছিল যে যার বাসায়। 
শুধু একটা পাখির পালক পড়েছিল ঘুমের ভেতর। 
তুমি সেটা কুড়িয়ে খোঁপায় গুঁজেছিলে






মুক ও বধির কলমের মালবাহী স্বপ্নে ভাসা নৌকোদের উদ্দেশ্যে

পুঞ্জিভূত মেঘে আকাশ সাজিয়ে বর্ষাকালের আয়োজন করছি। 
ভাবলাম একটু বৃষ্টি হলে বেশ হয়। 
সেইমতো মেঘলা চায়ে চুমুক দিয়ে দেখি কেমন কবিতা কবিতা পাচ্ছে 
আর মনের মধ্যে জমছে দুঃখ কষ্টের পাহাড় 
পাশে পড়ে আছে জুড়িয়ে জল হয়ে যাওয়া মুদিদোকানের হালখাতা 
মুক ও বধির কলমের মালবাহী স্বপ্নে চেপে 
ঘুমন্ত টেডিবিয়ার চলেছে মূর্খের স্বর্গে 
কোনদিন যাদের হাসতে দেখিনি তাদেরকেই কিন্তু কেঁদে ভাসাতে দেখলাম 
ছোট ছোট কাগজের নৌকো এখন ভাবছি তোমাকে কাছে পেলে বেশ হতো।




শান্তনু রায়চৌধুরী 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন