অঙ্কোলজি ওয়ার্ডের নার্সকে
কষ্ট বলতে ফুল, পাখি আর আজীবনের মুত্রথলিটি
সামলে রাখি গান, অস্তিত্বের সুগন্ধ, সাদা বেডকভারের দেশ
কষ্ট বলতে সুসজ্জিত ট্রে, টিপয়ে দানাদানা মেঘ
আমাকে কাঁদতে দেখে তুমিও আশ্চর্য হয়েছিলে,
নুলিয়াকে সুনামির সামনে নিঃস্ব হতে দেখে ভেবেছিলে
তোমার সাদা জুতোতে কাঁকড় ঢুকল বুঝি!
তখন কষ্ট বলতে কিছু নেই। নীলফ্যানায় একাকী শঙ্খচিল
ক্যাথিটারে চাপ চাপ বিষাদ। আকাশভর্তি কেমো......
যদি দেখা হয় ফের, সমস্ত মেডিক্যাল রিপোর্ট
পাখি ভেবে উড়িয়ে দেবো। একবার বলেই দ্যাখো,
সমস্ত শ্রাবণ রেখে আসব কামনার দ্বিতীয় প্রহরে!
ঘষেটি বেগম
দু’হাতে দুটি জলের বোতল হাতে দাঁড়িয়েছিল মেয়েটি
কখনও বুঝিনি ওর চোখে আগুন, দাউদাউ শরীর
কখনও বুঝিনি সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে গেলেও
পাতার রন্ধ্রে রন্ধ্রে অতিবেগুনী স্বপ্ন লেগে থাকে।
দুএক বিন্দু অন্ধকার, সন্ধের চতুর্দিকে ঘোর অনুশাসন
বিষাদ জমে বাঁশঝাড়ে; ও মেয়ের কপালে ষড়যন্ত্র,
নখের কিনারায় খঞ্জর...
জলের বোতল থেকে গড়িয়ে গেছে ধাতব তরল
ফোঁটা ফোঁটা আতঙ্কে এখনও কি সুপুরুষ ভালোবাসা!
নত হও, দেখো মেয়েটির বুকে একদিন সূর্যোদয় দেখবেই।
কন্যালগ্নের জাতিকারা
আজকাল প্রতিটি কবিতাই জহরদা’র কন্যার চলে যাওয়ার
সমকালীন। হাতে বোনা চটের আসন, বেতের ঝুড়ির পসরা
সাজিয়ে মেলা থেকে উঠে যাওয়া বানজারা দুলালী।
প্রতিটি কবিতার পাশেই এক ঠাণ্ডা সরোবর। জলে জলে
বিষাদ, প্রতিবাদও। সুখ ঠুকরে খাওয়া রাজহাঁস। জহরদা’র
মেয়ের মত অসুখ নিয়ে চলে যাওয়া মেঘের দল।
সমকালীন সব কবিতাই যেন কন্যাশোকের মত, গাঢ় বেগুনী।
অসহায় পংক্তির ফাঁকে ফাঁকে এক একটি দূরপাল্লার রেলগাড়ি।
যান্ত্রিক গোলোযোগের জন্য স্থগিত আছে বেশ কয়েক যুগ।।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন