সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারটা এবার আমিই পাচ্ছি

যা হোক আমি নিশ্চিত যে এবারই সাহিত্যে আমাকে নোবেল পুরস্কারটা
দিয়ে দেওয়া হবে
ব্যাপারটা তো ন্যাচারাল আবার কিছুটা এক্সাইটিং
তাই না
হ্যা
এখন আমার উচিৎ হবে না নোবেল পুরস্কারের রাজনীতি বা সন্ত্রাস নিয়ে
মাথা ঘামানো
বানিজ্য বা ব্রাহ্মনণ্যবাদ নিয়ে
শুক্রগ্রহের ধুলিকণা আর চতুর্দশ লুইয়ের শুক্রাণুর
তুলনামূলক ঘনত্ব বিষয়ে
কেন না একজন সম্ভাব্য নোবেল লরিয়েটের অন্যতম গুণ
তার নিরবতা
তার প্রগতিশীলতা
(যার নির্দিষ্ট মানদন্ড আছে আর নির্দিষ্ট একটা প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়েই
তাকে দেখতে হয়)
বিশ্বশান্তির প্রতি তার নিষ্ঠতা
(মনে রাখা দরকার দশ লাখ ইরাকি নারী ও শিশুকে হত্যা
শান্তির স্বার্থে আমরা মেনে নিয়েছি
আর সাধারণ ফিলিস্তিনিরা যা করছে তা সন্ত্রাস
সন্ত্রাস ছাড়া কিছুই না)
এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারেন স্টকহোম থেকে নোবেল প্রাপক হিসেবে
আমার কাছে
যখন সেই মহামূল্যবান তারবার্তা আসবে
তখন
তাৎক্ষণিকভাবে আমার প্রতিক্রিয়াটা কেমন হবে
লেও ঠেলা
আপনাদের কি ধারণা আছে এরকম একটি তারবার্তাকে
সম্ভাব্য প্রাপকের কাছে পৌছুতে
লন্ডন প্যারিস নিউইয়র্ক
অথবা মাউন্ট অলিম্পাস যেখানে দেবতারা বাস করেন
আর সাধারণ মানুষ তা দেখতে পায় না এরকম কত কত কেন্দ্র
বা চূড়া
পার হয়ে আসতে হয়
ততক্ষণে আমার তো হিসু পেয়ে যাবে





লাল

আপনি এমন কি আপনিও পারেন কোন সুন্দরী টাইপিস্টের
প্রেমে পড়তে
যে আপনি খুবই সহজভাবে জীবনকে দেখেন
জীবনকে নিজের ভেতর দিয়ে বয়ে যেতে দেন
জবরদস্তি ছাড়াই
রং নিয়ে কখনো তেমন ভাবেননি
ধরুন লাল রং
একজন পেইন্টার আর একজন জেনারেলের কাছে
ওর মেজাজ নিশ্চয়ই আলাদা হবে
হ্যা
আমি নিশ্চিত যে নার্ভ ঠিক রেখে একটা তেলাপোকাও
কখনো মারতে পারেননি আপনি
সেই আপনাকে হঠাৎ খুন করে ফেলতে পারে
কোন সুন্দরী টাইপিস্ট
আর এই খুনের ব্যাপারটা নিয়ে
ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে কী লিখে নিচ্ছে সে
কি ডকুমেন্ট  তৈরু করছে
সেটা তো আপনি জানতেও পারছেন না
কেন না মনিটর তো সাদা





কামরুল হাসানের মেয়েরা

কামরুল হাসানকে আমি পছন্দ করতাম উনি ছবি আঁকতেন
আটপৌরে জীবনের ছবি জীবনের অশ্রু উপত্যকা অবিমৃষ্যকারিতা
নিজেকে বলতেন পটুয়া
আর নিয়মিত স্বাস্থ্যচর্চা করতেন
হ্যা
ওনার স্বাস্থ্য বেশ আকর্ষণীয় ছিল বলা যায়
আর ওনার ছবির মেয়েদের স্বাস্থ্যও ভাল ছিল
যদিও তা বতেরো বা সুলতানের মেয়েদের মতো পেশিবহুল না
আর এরা কেউ স্বাস্থ্যচর্চা করতেন বলেও শোনা যায়নি
যা হোক
কামরুলের মেয়েদেরকে আমরা কতভাবেই না দেখেছি
নিরুদ্বেগ আর অনায়াশ ভঙ্গিতে সাজতে
জানালা সামান্য ফাঁক করে বাইরেটা উঁকি দিয়ে দেখতে
নাইওর যেতে
আর আপনারা জানেন কি না জানি না পার্টির কাজ হিসেবে
একসময় উনি কিছু পোস্টার এঁকেছিলেন
সেই পোস্টারগুলোতে কিছু মেয়ে ছিল
আকর্ষণীয় স্বাস্থ্যের
যদিও ওদের চোখগুলো ছিল আরও আকর্ষণীয়
কিন্তু পুলিশ ঐ চোখগুলোকেই চিহ্নিত করেছিল মারাত্মক অনিষ্টকর হিসেবে
আর প্রতিহিংসাপরায়ণ
আর রাষ্ট্রদ্রোহী
আচ্ছা ঐ মেয়েগুলো এখন কোথায় কেউ বলতে পারেন





তুমি আর ফ্লোরে তোমার কাপড়চোপড় আমারে হেজিটেশানে ফালাইছো

ফ্লোরে তোমার কাপড়চোপড় পইড়া আছে
ওগুলা
জিদ কোর্তেছে উৎসব না অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া না বুইঝাই
উড়বার চায়
কিন্তু উড়তেছে না
তুমি
ওগুলার দিকে অসহায়ভাবে তাকাইয়া রইছো

বিছানায়
আমি তোমানে দেখতেছি
আর ফ্লোরে
তোমার কাপড়চোপড়গুলারে

দেখতেছি কার জেদীপনা বেশি
আর
ডিপ
অর্গ্যানিক ভায়োলেন্স





কার রক্ত

রাত করে বাসায় ফেরাটা বেশ এ্যাডভেঞ্চারের মতো
রাস্তাগুলো নিজেদের নাম পাল্টে ফেলে
পুলিশ আর মাতাল দুজনই গান ধরে হেড়ে গলায়
রাস্তার জোনাকিদের পুড়ে যাওয়া ঝলসে যাওয়া দেহ
এখন কোথায় কেউ বলতে পারে না
তবে অন্ধকার ঝোঁপঝাঁড়ের জোনাকি আর আকাশের তারাগুলোকে
চেনা যায়
তারপর যখন দরজা খুলে রুমে ঢুকছি
জোনাকি আর তারা নিভৃত আনাড়ির মতো টুপটাপ মেঝেয় গড়িয়ে পড়ে
এতক্ষণ ওরা উপভোগ্য সতর্কতায় জড়িয়ে ছিল আমার চুলে
মুখে জল ছিটিয়ে ফ্রেশ হয়ে ফ্রিজ খুললাম
দুটো আপেল টেবিলে রাখলাম
ছুরি দিয়ে কাটলাম
টেবিলে রক্ত
টেবিল চুঁয়ে মেঝেয় রক্ত
আপেলের রক্ত না জোনাকির রক্ত না আকাশের তারাদের রক্ত
কার রক্ত কে জানে


শিশির আজম

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন