গিঁটতত্ত্ব

কফির চুমুক কিংবা সিগারেটের ধুম্রমধুর টানে

অংকের জটিল গিঁট খুলে যাবার প্রচলন আছে

খোলা মাঠ-- প্রশ্নহীন সমস্যাপ্রবণ এলাকা...

পাখিরা নিরাপদ আশ্রয়ে উড়ে যায় গাছে

 

এক্স এর মান নিয়ে যে মারাত্মক সংশয়

তা সমাধানেই চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হয়!

রাজনৈতিক যে কৌশল-গিঁট অংকের বিকল্প

তা জোটের কল্যাণে নিঃস্বার্থ খোলে কিন্তু অল্প

বন্ধুত্ত্বের যে আন্তরিক গিঁট-- তা খুলতেও পারে

আবার নাও পারে! সৌজন্যতার ব্যাপার--

এখানে সংখ্যা নেই হারে;

সংসারে মায়ার গিঁটের খেলা...

 

মুর্শিদ যে অলৌকিক গিঁটের কথা বলেছেন তারে--

তা খুলতে দ্বিধাহীন জনম জনম লেগে যেতে পার।

 

 

 

  

 

ক্যালকুলেশন

ক্যালকুলেশন মানুষকে পথ দেখায়-- ঝড়ের রাতে দৃষ্টিসম্বল যে লণ্ঠন তা-ই হয়ে ওঠে দুর্দান্ত সহায়, যদিও পথ আর পথিকের আশ্চর্য সমন্বয়।

 

ক্যালকুলেশন এক: মানুষের সাথে মানুষের যে মর্মরময় কাচের সম্পর্ক তা শুধু ক্যালকুলেশনের অভাবেই ধাতব মনেহয়। কোনো এক অপার্থিব দৃষ্টিতে-- জগৎ মায়ার বন্ধন।

ক্যালকুলেশন দুই: বহুবছর পর বৃষ্টির আর্দ্রতা একই থাকে কিন্তু যে ভেজে তার মাহাত্ম্যের পরিবর্তন হয়। কারণ সেখানে আলাদা ক্যালকুলেশন!

ক্যালকুলেশন তিন: হায়! দূরে মায়ের যে পরিণত অপেক্ষা-- নিঃস্বার্থ ও অশ্রুসিক্ত, সেটা ক্যালকুলেশন না করেই বলে দেওয়া যায়!

ক্যালকুলেশন ভুল হলে সমস্যা কিন্তু বিস্তর... রিয়েলিটি! দূরে কারো মৃন্ময়ী অপেক্ষায় কাটতে চায় না দিন কাটুক! তা সে ক্যালকুলেশন বুঝুক আর না-ই বুঝুক। তবে, সারাজীবন ভালোবেসে যে কিছুই পায়নি তার ক্যালকুলেশন কী?

 

 

 

বন্ধনী

অংকের মধ্যে যেসব সংখ্যা বা চিহ্ন নির্দিষ্ট সম্পর্কের মধ্যে আবদ্ধ থাকে সেটাই বন্ধনী-- প্রথম বন্ধনী, দ্বিতীয় বন্ধনী, তৃতীয় বন্ধনী, রেখা বন্ধনী... যৎসামান্য বন্ধনীগণ! এভাবে মানুষে মানুষে যে আত্মিক সম্পর্ক, পরিবারে পরিবারে যে পারিবারিক সম্পর্ক, সমাজে সমাজে যে সামাজিক সম্পর্ক, দেশে দেশে যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক... এইসব রহস্যময় সম্পর্কের বিষয়গুলোও বেসামরিক দৃষ্টিতে নিবিড় বন্ধনীগত!

এই সম্পর্কসূত্র নিয়ে আমরা আরও ভেঙে ভেঙে ছাই করে উড়ায়ে দেখতে পারি আরও আরও নতুন সম্পর্ক-বিন্যাস! সেখানে দেখা যাবে চাঁদের ঝিকিমিকি জ্যোছনা সম্পর্ক, সন্ধ্যার ম্রিয়মাণ গোধূলি সম্পর্ক, শীতের ভেজা ভেজা কুয়াশা সম্পর্ক... । সম্পর্ক কিন্তু রচনা ও গ্রন্থিত হয় ভালোবাসার নরম ভিত্তিতে... চূড়ান্ত পরিণত!

সম্পর্ক ভেঙে ফেলা সহজ-- গড়ে তোলা কিন্তু নিদারুণ কঠিন ব্যাপার-- যেহেতু প্রত্যেক মানুষের সামনে বিশাল এক অসম্পর্কের অন্ধকার দেয়াল দাঁড়িয়ে থাকে... অনড় বন্ধনীর মতো।





শৈলজানন্দ রায়

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন