এলিনা মুখোপাধ্যায়
দহন
আকাশ ভেঙে অ্যাসিড গড়িয়ে পড়ছে
যন্ত্র মানবের শরীর ও মনে।
বৃষ্টির স্বপ্ন ভেবে ভুল করে
বিষাক্ত রাসায়নিক দেখে ফেলেছে সে
ছাতা খুঁজতে গিয়ে সে দেখতে পায়
গাছেরা নিজেরাই সবুজ হারিয়ে
লাল নীল ছাতার চেহারা নিয়েছে
অক্সিজেনটুকু শেষ হওয়ার আগে
সে চোখ বোজে, শেষ স্বপ্নের অভিপ্রায়ে
অঝোর ধারায় অ্যাসিড নেমে আসে
চোখের ও শরীরের চামড়ায়।
আশ্রয়
কাকের দেহের কালো রং
কিভাবে যেন ছড়িয়ে পড়ে
সমাজ ও সভ্যতায়
উলঙ্গ শিশুর দল
প্রতিদিন প্রতিরাতে
বাজারে বিক্রি হয়ে যায়
জীবনের প্রতি ছন্দে
বাজারি সামাজিক মাধ্যমের
সস্তা প্রতিবিম্ব হেঁটে চলে বেড়ায়
আর, মানুষ মনের কালিমা লুকোতে
যন্ত্রের শরীরে আশ্রয় নেয়।
অভিশাপ
অন্ধকার আকাশ ছুঁতে গিয়ে
মুখ থুবরে মাটিতে লুটোয়
বিষাক্ত আলোর দহন চারদিকে
রাত্রির ধর্ষিত শরীরে
আলোর ক্ষতের ছাপ
অন্ধকারের অবসাদ
দিকভ্রান্ত পথিকের মত
ছুটে চলে নিরুদ্দেশের যাত্রায়
নীরবে ক্রূর হাসি
হেসে চলে আলোর অভিশাপ।
ছায়া
রাতের শরীর থেকে
আর একটা রাত নেমে যায়
নিজেরই অবয়ব খুঁজে মরি
চাদরে, বিছানায়
শরীর থেকে শরীর খুলে পড়ে
অন্ধকার হাত ধরে টেনে এনে বসায়
আয়নায় নিজেরই প্রতিবিম্ব দেখে
চোখের, দেখার মৃত্যু হয়।
হ্যালুসিনেশন
রোদ্দুরের হঠাৎ ছোঁয়ায়
থমকে দাঁড়ায় পথ
আজ যে বৃষ্টি আসার কথা ছিল
ছাতি শুকিয়ে ওঠে তৃষ্ণায়
পাখিরা উড়ে চলেছে
এক আকাশ থেকে অন্য আকাশে
ওদের বলে দিয়ো
বসুন্ধরার হৃদয়ে
আজ দাবানলের দহন
জল নেই কোথাও
সমুদ্রের হাতছানি
নীলাভ মরীচিকার প্রতিবিম্ব
তুলে ধরছে দুচোখে
হ্যালুসিনেশন শেষ হলে
দেখতে পাই
আমার ঘর পুড়ে গেছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন