লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল 






চলো নিরুচ্চার 

একটা ছায়াহীন পোড়া গন্ধের সাথে বাকি পথ হেঁটে যাই চলো – ওপারে খাল কাটা প্রভাতে জড়িয়ে ধরে বিষাদ  – তখন মাটি ঝরে ঝুর ঝুর , ঝিঁঝি পোকার শব্দ শুনে শেয়ালেরা বনবাদাড়ের স্বীকারোক্তি ছাড়াই বটগাছের কোটর ছেড়ে পালাতে চায় – আলো আঁধারের পর্দার কোন কোলাহল নেই – সরলরেখা হতে চাওয়া তুলসীবেলার সুর তছনছে – ফাঁসি থেকে নামে রমনী শরীর ; লেগে থাকে ভরাট ছাব্বিশ আর বসন্তের বীর্যমাখা রঙ 

চলো নিরুচ্চার , বাতাসে বাতাসে মেঘ বদলের পত্র ওড়ে ,  মীন রঙের প্রতিবিম্বে আশালতা ; আরও কাছাকাছি বিষাদ থেকে সাংখ্য  ; যেখানে বিন্দু থেকে কোকিলের চোখের পাতা , অনেকটা অবৈধ হাঁটা আর বিস্তৃত মাঠে কোনো মেগাপিক্সেল নেই , নীল পাতার নীচে দূর খোঁজে পাখিদের ঝাঁক – মুখে নিস্প্রভ আলোর ওপাশে ঈষৎ জলমগ্ন শিশির ও চাঁদ , অসমাপ্ত আমি তার অংশ অংশ কুড়িয়ে জোনাকির মালা বুনতে থাকি 






নিশিপালন 

কতকগুলো নীল ঢেউ নেমে আসছে প্রহর কাটিয়ে  – মাঝে লম্বমান হলুদ রেখাগুলি নড়ছে মাঝরাতের বাতাসে, নির্ভার কলাগাছে কোনো বাহার নেই – আকাশের অর্থ জ্বলছে বিষন্ন  প্রদীপে – অধিবৃত্তিক পথ আঁকা হচ্ছে ব্রহ্ম শিরায় ;  এ কোন দরজার ইঙ্গিত  
অনিমেষের ভিতর উৎসারিত ঈশ্বরের অপেক্ষা – উত্তরীয় কাঁপতে কাঁপতে কশেরুকায় বেঁধে দেয় রোদে পোড়া শ্বেতকরবী  – সব কোলাহলে আমার অনুপস্থিতি সুর পরিবর্তন করে তাকিয়ে থাকে মরমি ধ্রুবতারায়

তারপর রিদম, টকটকে গন্ধরাজ সুবাসে আনন্দপ্রপাত, 
চৈতন্য আসার পূর্বে খোল করতালের শব্দ ভেঙে দিচ্ছে রাত্রির ঘনত্ব 







গ্রাফিতি 

সাইকেলের চাকার দাগে যে অতীত রিদম জড়ায় তার সাথে খালের শেওলা জলের কোনো সম্পর্ক নেই – সমুদ্রের ঢেউয়েরা আসে না এখানে — শিরীষ ফুলের ভোরবেলায় ধোঁয়ার গ্রাফিতি আর পথের উদাস ইশারার মাঝখানে  আমাদের দৃশ্যে শুধু ধানকাটার উষ্ণতা 

ক'কাঠা জমি আমাদের – সূচকের আবেশে বুজে আসে চোখের পাতা  –  কিংবা কত লিটার ঘামে গামছা ভেজে, শুধু অনারিয়াম কম পড়ে, ফিকে হয়ে আসে মেঘের মানচিত্র,  অসীম দূরত্বের বিস্তারিত অস্তিত্ব নির্জন হয়ে আছে ! 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন