রুদ্রপলাশ মণ্ডল 




ভাঙা আর্তনাদ

গোল গোল ঘুরতে ঘুরতে পথ দীর্ঘ হয়ে এল

এবং সূর্য মাথায় নিয়ে ধুলো ভাঙতে ভাঙতে

পায়ের প্রথম চিহ্ন খুঁজে পেল কূজনের নাতিশীতোষ্ণতা

 

তাই তো জীবন জুড়ে  নতুন হাওয়ার

অজানা হুল্লোড় এতটাই বেজে উঠল যে

অন্য শব্দের গুঞ্জন গেল চাপা পড়ে

 

ফলে কানে এল না চরাচরের সমুদ্র গর্জন

অথবা নদীপাড়ের ভাঙা আর্তনাদ

 

হয়তো সেটাই স্বাভাবিক

কিংবা আরও বেশি কিছু

 

না হলে আমার জন্য

কেন অপেক্ষা করবে একটি সেতুহীন দুর্বার গিরিখাত  

এবং ঘন বর্ষার কালো মেঘ

 

যারা

ক্রমাগত চেপে বসছিল বুকের ভিতরে আর

মুখের রেখায় আলো আসছিল কমে

 




পাকদণ্ডী পার হয়ে

পালকবাতাস ছুঁয়ে গেল স্তন

আনমনা ঢেউ হেসে উঠল— হেলে পড়া সূর্যের

নিভু নিভু  শিখার ভিতরে

 

ঘাসের আগায় লেগে থাকা ধুলো ঠেলে

জনান্তিক পাগুলো এগিয়ে চলল

আদিম পৃথিবীর অচেনা নির্জনতায়

 

ফলে

দুরন্ত নাক্ষত্রিক আলোয় উবে গেল সমস্ত সংকোচ আর

অজস্র জোনাকির পাহারাদার চোখকে পাত্তা না দিয়ে

ঘটে গেল ভূকম্পন!

গড়িয়ে নামল লাভা; ভিজে গেল গিরিখাত…

 

অথচ আস্তিনে রাখা ছিল অস্ত্র তবু

উপযুক্ত সময় ব্যবহারের কৌশলে হয়ে গেল ভুল

 

কামঘাম ঝরে যেতে নাছোড় হাতগুলো

হারিয়ে ফেলল বিশ্বাস আর

পাকদণ্ডী পার হয়ে হেঁটে গেল বিপরীতে

 

আমরা দেখলাম

সামনে দিয়েই নদী পালটে নিচ্ছে তার আজন্মের খাত

 




প্রশ্রয়ের বাতাস

প্রশ্রয়ের বাতাস দাওয়ার খুঁটিতে বসে থাকত

হেলান দিয়ে আর তাঁর ঘাম থেকে

ছড়িয়ে পড়ত

বাবা— বাবা— গন্ধ

 

সেই ঘামে একসঙ্গে বসবাস করত

কৃষক,শ্রমিক আর শিক্ষকের আলো

 

স্বপ্নের দরজায় দাঁড়িয়ে

বটগাছটা ছায়া দিত

পাখি চেনাত; রুখে দিত ঝড়...

 

অনেক কিছুর মতো হারিয়ে গেছে দাওয়ার খুঁটি

মাটির ঘর, খড়ের চাল,

 

ঝড় রুখতে রুখতে গাছটাই একদিন

উড়ে চলে গেছে মাধ্যাকর্ষণের সীমানা ছাড়িয়ে

 

অন্ধকার ভেঙে আসা ভোরের বাতাসে

আর যাই থাকুক না কেন—

                        অনন্ত আস্কারাটুকু নেই


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন