১ 

ধর্মহীন

বিশ্বাসের কাছে সব ধর্ম যায়

ধর্মহীন বসে থাকে দূরে, তাদের বিশ্বাস নেই

                                  অপার্থিব আলো নেই

কোথাও আত্মনিবেদন নেই

দুর্বিনীত ভিক্ষাপাত্র ভরে কেবল অহংকারে


সামনে তাকাই,পিছনে তাকাই, ঝাঁকে ঝাঁকে অসহ্য নামে

অসহ্যরা কেউ পাখি নয়,তবুও পাখির মতো ডাকে

আমাদের বসন্ত-শীত কেটে যায় ধর্মের উৎসবে

কিছু কি মাহাত্ম্য আছে তবে? মাহাত্ম্য কি বিপ্লব আনে?


সভ্যতা কেঁদে ওঠে রোজ রক্তপাতে

ধর্মসভার কোলাহলে কখনো বজ্র নামে

আমরা সবাই ভেসে যাই, বিশ্বাসের নৌকায় চেপে

একটি জীবন আমরা করে যাই পার

         

            




বিবেচনা

বিবেচনা নেই, দুয়ারে দাঁড়িয়ে থাকি

দেখা হবে বিবেচনা এলে

কতকাল এ পথে আসিনি, মাঝখানে মরুভূমি

যুদ্ধের পাহাড়, মৃত ঝর্নার কাতরানি

সব ডিঙিয়ে এসেছি,শত্রুর হাতে বেঁধে রাখি


বিবেচনার কথা কম, আলো কম

যেন সে মধ্যরাতের পাড়া-প্রতিবেশী

ডেকে পাওয়া যায় না, আবার এমনিই আসে

আমাদের স্বপ্নের কাছে এসে বসে

তারপর, তারপর,ছড়ায় অনেক উদ্দাম


ভাঙাঘর তখন মেরামত হতে থাকে

স্নানের জল তুলে দেয় বউ

বিকেলে নতুন জামা গায়ে বসিয়ে দেয় দরজায়

আত্মীয়রা ফিরে এলে গানও ফিরে আসে

শেষ বেলাটুকু যেতে যেতে হাতে হাত রাখে


অনেক রাতের দিকে ঘুম ভেঙে গেলে

পুরনো প্রেমের স্বাদ পাই

রাঙা ঠোঁট এখনো লেগে আছে ঠোঁটে

স্মৃতিদের কেউ কেউ জেগে আছে

কেউ কেউ নিহত,অর্ধমৃত,বিবেচনা এসে কথা বলে।




           



খ্যাতি

এমন বিচক্ষণের কাছে যেতে পারি?

সমস্ত খ্যাতির দোকান ঘুরে ঘুরে

এই অবেলায় ফিরছি বাড়ি। 

খাওয়া হয়নি, স্নান হয়নি,

রাস্তাগুলিও চিনতে পারিনি;

অনাদর আর যানবাহনের গর্জন শুনে শুনে

একটি ক্লান্ত বিপন্ন জীবন

শ্রমসিক্ত ঘাম শুকিয়ে ঝরিয়েছে নুন।


অনেক বিচক্ষণ দোকান দিয়েছে

এক একটা ছোটখাটো খ্যাতিরও চড়া দাম

কত লোক কিনে নিয়ে যাচ্ছে

তাদের যানবাহন ভরে যাচ্ছে খাতির ভারে!


থরে-বিথরে সাজানো আছে খ্যাতি

সোকেশ আলমারি জুড়ে খ্যাতির বিড়ম্বনা

মহত্ব আর বিরাটত্বের আস্ফালনে ঢাকা

বাড়ি ফিরবার রাস্তা কোথায়? সব রাস্তা বাঁকা

বেরিয়ে যাচ্ছে চাপা দীর্ঘশ্বাসও

অন্ধকারেই হাঁটছি একা একা….



    



অথঃ শেয়াল 


কত যে শেয়াল আসে! শেয়ালের কথা শুনে শুনে

আমাদের রাত কেটে যায়

একটি গল্পের ভেতর বহু গল্প ঢুকে গেলে শেয়ালের বুদ্ধির তারিফ করে করে

আমাদেরও আয়ু ফুরিয়ে যায়


জীবনের জ্যোৎস্নাগুলি কখনো চকচক করে ওঠে

কাকতাড়ুয়ার মতো আমরা দাঁড়াই ফসলের মাঠে

সারারাত শেয়ালের গান শুনি,আহা কত গান!

আমাদের মাথার ওপর দিয়ে ওড়ে চন্দ্রযান… 







তৈমুর খান

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন