শববাহক ও শূন্যতা


(১)
মৃতদেহের মুখ দেখে নাও
গন্তব্যের পথ শুভ করে তোলার জন্য!

গাছ শুকিয়ে যায়
পাখিদের পথ মসৃণ করার আশায়?

চোখ বন্ধ করে দেখে নিই
আমার মৃত মুখ দেখে তুমি চলে যাচ্ছো সংসারে…




(২)
হাত দুটো জোড় করে কপালে ঠেকাই
আসন পেতে দিই আত্মার সামনে
নাভিপদ্ম থেকে জেগে ওঠে অনাহার…

একটা শববাহী গাড়ি চলে যাচ্ছে
আমার বুকের উপর দিয়ে

তুমি চালক হয়ে, ধূপকাঠি জ্বেলে রেখ…





(৩)
লুকিং গ্লাস থেকে দেখে নিচ্ছি
এইসব শীততাপ নিয়ন্ত্রিত দিন

তোমার চোখের উপর ঠাণ্ডা বাস্প
কাঁদছো? এই গভীর যুদ্ধক্ষেত্রে…

চলো, তোমাকে পৌঁছে দিই
গ্রিন সিগন্যালের ভিতর 





(৪)
তুলসি, নির্বাণ দাও
এই পুতুলনাচের জীবন থেকে
সুতো ছিঁড়ে চলে যাচ্ছে আয়ু

কাচ ঝাপসা হলে
মুখ দেখে নিও মন্ত্রে…

ছাতা দাও অথবা জল
অপেক্ষার ভিতর
শববাহক জেগে আছে
আমার পাশে…





(৫)
দৃষ্টিহীন নিথর শূন্যতায়
মুখ গুঁজে পড়ে আছে শেষ সঙ্গমচিহ্ন

এরপর শববাহী গাড়ি থেকে 
ফেলে দিলে যে রজনীগন্ধা

সবগুলি কুড়িয়ে নিয়ে
ট্রাফিক জ্যাম, ফুল বিক্রেতা বালক

তুমি কিনে নিলে
তোমার প্রথম সঙ্গমের দিনে...





(৬)
অতএব কোলন, চন্দনের দিনে
আগুনের আত্মকথা লেখা হচ্ছে
হাড় বেছে দেখে নিচ্ছে শ্মশানবন্ধু
কোনটি পোড়েনি!
অথচ তুমি জানো
জীবনে অভিযোগের চিহ্নতত্ত্বে
একটি সেমিকোলনও পোড়েনি…





(৭)
চালক টাকা গুনে ফিরে গেলো
শূন্য শববাহী গাড়ি নিয়ে…

জল দিয়ে, ধুয়ে মুছে দিচ্ছে
আমার শেষ ঘুম

মৃতদেহ বদলে নেয় শববাহক
যেমন বদলে যায়

শ্মশানে খরচ হওয়া নোটগুলি…





(৮)
ফিরে আসার পর তোমরা
ছুঁয়ে নিচ্ছো লোহা
জিভ ভিজে যাচ্ছে নিমরসে?

এমনই কঠোর সময়ে
আমি চিবিয়ে ফেলেছি
তিক্ততা…






অরিন চক্রবর্তী

1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন