রাতভোর খেলা

বাঘবন্দি খেলা রপ্ত করিনি
জানিনা জলের অতল জীবিত না মৃত
যেটুকু জেনেছি পথের ধুলো ওলোট-পালোট হলে 
আত্মহত্যা করে টহলদারী রুমাল।
রাতভোর খেলায় ব্যস্ত তুমি 
জানতেও পারলে না
মধ্যরাতে গাছেরাও অসংযমী হয়
অরণ্য জুড়ে তখন শুধুই পাগল প্রেমের ছায়া...






আত্মজ

কাদামাটির সংসারে দুপুর নামে নিঃশব্দে
অলীক রোদেরা ভাসে বহুদূর, মারে উঁকি
মাঠ জুড়ে তখন শুধুই খেলা করে শব্দ ও অক্ষর
ইচ্ছে মতো ছিন্ন করছে...
পেরিয়ে যাচ্ছি চাঁদমারির মাঠ, চিতাভস্ম
ক্লান্ত ছায়ায় লুটিয়ে পড়ছে ক্ষুধার্ত আগুন।

ছুটছি যেভাবে ছোটে প্রতিদ্বন্দ্বীরা
ক্ষতের ভিতরের ক্ষত জুড়ে কল্পনায় আঁকা অবয়ব
এভাবেই অজস্র ফ্লাশ ঝলসে ওঠে,
আলখাল্লার দীর্ঘ ছায়াপথে
সঙ সেজে খুঁজে ফিরি সেই জোড়াতালি দুপুরকে।






এখন, এভাবেই

স্বল্পায়ু ভোরের অতল ছায়াপথ পেরিয়ে
কান্নার শব্দ ভাসে মেঘের কারাগারে,
মৃত পাতাদের গন্ধ মেশে অদৃশ্য ধর্মে।

কারাগার ছেড়ে মেঘের ভিতর জমছে যে মেঘ
ধর্ম ভুলে সেই মেঘ নেমেছে তোমার মুখে,
বিষন্নতাগুলি সব ঝরছে বৃষ্টি হয়ে।

কোথায় তাকাও নিবিড় চোখ
শুকনো ঠোঁটে কি কথা আছে,
বলো, আজ বলে দাও সব।

সব কথারাই আজ ঝরুক বৃষ্টি হয়ে...






অপেক্ষার মেঘ

বিষাদময় স্টেশনে
আসো রোজই, চলেও যাও --
উৎকণ্ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে মেঘ
পুড়ে যায় দীর্ঘ অপেক্ষা।

শ্রাবণধোয়া আলোয়
প্ল্যাটফর্ম পেরোয় আলোপাখি,
ক্ষতচিহ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মেঘ
এভাবেই বাঁচে ছিন্নমূল এলোমেলো বৃষ্টি।

দুরন্ত ট্রেন প্রতিদিনই আসে-যায়
তুমিও প্রতিনিয়ত উড়ে আসো, চলেও যাও
একা ছিন্নভিন্ন পাতা ভাসিয়ে দেয়
পুরনো সব চিঠি, বৃষ্টিমেঘের নৌকোয়।







সাঁকো

নেশাতুর রাত
সাঁকো পাশে জোৎস্না
গতজন্মের সেইসব ছায়া
কাঁপে শিহরণে।

উদ্দামতার বিপরীতে মাতাল স্রোত
বাঁক বদলায় নিঃশব্দে
পিয়ানোর মতো বাজে আদর।

ছদ্মবেশী বাউলের সোহাগে
ভরে যায় বৈরাগী রাত এবং
সাঁকোর নিচের অতল।




কুশল কুমার বাগচী


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন