সুশীল হাটুই
ইডিয়ট, তাড়াতাড়ি কর
আমি জানি না, জাগরণগুলোকেআপডেট করা সহজ নাকি ঘুমগুলোকে।
মাঝরাতে আমি ঘুমগুলোকে আপডেট করা
শুরু করলাম।
কিন্তু এগোতে পারলাম না। কম্পিউটার থেকে
ম্যাসেজ এল, আগে সমস্ত স্বপ্নকে আপডেট করুন।
তারপর ঘুমগুলোকে।
আজীবন আমার ৩টে স্বপ্ন:
১. কাঁটাচামচের ভক্তিগীতি শুনিয়ে ঘুমন্ত
ডিমকে জাগিয়ে তুলব।
২. ছেঁড়া হাওয়াইচটির সেফটিপিনগুলি
বেহায়াদের ড্রইংরুমে পঠিয়ে দেব।
৩. দুশ্চরিত্র বাইফোকালকে পুঁইপাতার
কথামৃত শোনাব।
বুঝতে পারছি না কোন স্বপ্নটা আগে আপডেট
করব?
এদিকে কম্পিউটার স্ক্রিনে ঘুমগুলো চিৎকার করছে,
ইডিয়ট, তাড়াতাড়ি কর। জাগরণ পাচ্ছে।
টি.ভি. দ্যাখা নিয়ে গৃহযুদ্ধ
শ্রীমতী চৌধুরী বললেন:
ছেলেটা খুব ভালো _________ বানাতে পারে।
ছোট্ট একটা শূন্যস্থান। তিনি বললেন: এটা তোমরা
পূরণ কর।
শ্রীতমা বলল : বোমা,
ইন্দ্রাণী বলল : পোশাক,
বিশাখা বলল: কফি,
ছেলেটার বাবা এর আগে চারবার মারা গেছে।
আজ পঞ্চমবার সে একই বাহানা বানিয়ে দেশে ফিরে
গেল।
শ্রীমতী চৌধুরী জানে,
যখন শ্রীতমা ইন্দ্রাণী আর বিশাখার উত্তর
একই হবে।
তখন আর টি.ভি. দ্যাখা নিয়ে গৃহযুদ্ধ হবে না।
কাঁটাচামচের টুংটাং শব্দ
স্বপ্ন দ্যাখা কোনো অপরাধ নয়।
কেউ বাড়ি বানানোর স্বপ্ন দ্যাখে। কেউ আপেল
খাবার। কেউ দামি পোশাক কেনার স্বপ্ন দ্যাখে। কেউ
টম্যাটো-মার্কা মেয়েদের হৃৎপিণ্ডে পৌঁছে যাবার
স্বপ্নে মশগুল। কেউ ডিনারটেবিলে শুধু হুইস্কি
পেলেই খুশি।
ডিনারটেবিলের কথাই যখন হলো, তখন স্পষ্ট
করেই বলি, আঁশ-গন্ধময় এই টেবিলটাই
আমাদের মগজ দখল করে নিয়েছে। তাই আমরা
জানি না,
কুকুর ভাদ্রমাসকে কেন ঋতুরাজ বলে? ডিভানের
ব্রজলীলা কে লিখেছেন? অমাবস্যার বর্গমূল কত?
সধবা সাইকেল কীভাবে চেনা যায়? দাঁতের
মনখারাপের নাম কী?
কেন জানি না আজ খুব জানতে ইচ্ছে হচ্ছে,
ডিনারটেবিলটা যদি কোনো বন্ধুকে উপহার দেওয়া
হয়, তাহলে কি আমাদের খিদেগুলোও সেখানে চলে
যাবে?
হাইহিল-জুতোর টিপছাপ
কোনো প্রশ্ন দু'বার করা যাবে না।
উত্তরদাতা যদি কালা হয়? দুপুর থেকে একটা
হিয়ারিং-এইড-এর দাম নিয়ে কথা হচ্ছে।
যেসব কিশোরের রোদচশমা নেই, তারা নিজেদের
কতটা হতভাগ্য মনে করে মুনি-ঋষিরাও
জানে না।
বাবা-মা-ই কি জানে? ওদের শুধু ৯৮ পেলে
১০০ পেলি না কেন? ৯৯ পেলে ১০০ পেলি না কেন?
হিয়ারিং-এইড আর রোদচশমার কথার মাঝে
হাইহিল-জুতোর কথা চলে এল।
কিন্তু এই জুতোগুলোর সার্থকতা কোথায়,
যদি না কুকথা ছোড়া গালে টিপছাপ রাখতে
পারে...
এসো হে ব্রণ এসো হে
এখন আর কোনো ব্রণ তার
সখীদের নিয়ে আমার মুখে বেড়াতে আসে না।
জানি না,
ওরা কি আমার মুখের ঠিকানা ভুলে কোনো
কিশোরীর মুখে ঘাঁটি গেড়েছে?
চিন্তা হচ্ছে। আমার যত চিন্তা তার চেয়ে বেশি
চিন্তা বহুজাতিক কোম্পানিগুলির।
ওরা আমার
মাথার চুল ঘন করবে বলে, আমার মুখ ফর্সা
করবে বলে, আমার ফাটা-পা মসৃণ করবে বলে,
আমার দাঁত সাদা আর মজবুত করবে বলে
বদ্ধপরিকর।
আমি ওদের খুশি করতে পারব না। তবু মিহি
গলায় গেয়ে চলেছি,
এসো হে ব্রণ এসো হে।
এই ব্রণগুলি আমার মুখে ফিরে এলেই, আমি
কিশোরবেলায় ফিরে যাব...
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন