সুধাংশুরঞ্জন সাহা
অদৃশ্য করাত
রূপশালী ধানের অক্ষরে লেখা দিন আর নেই।
ছেলেবেলায় দেখেছি বিশালাকার করাতে
কীভাবে কাটা হত বড় বড় গাছ!
এখন আর সেসব গাছও নেই, করাতও উধাও।
পরিবর্তে মগজে বোঝাই ধারালো সব করাত,
অদৃশ্য সেই করাত নিরন্তর কাটে শুধু
বিশ্বাস,ভালোবাসা এবং সম্পর্ক।
স্পর্শ
যে কবিতার চিত্রকল্পে স্পর্শের নিবিড়তা নেই,
সে কবিতায় যত কারুকাজই থাক,
তার কোনো ভবিষ্যৎ নেই।
স্পর্শ এক অনুভবের মায়াজগৎ,
যা ব্যাখ্যার বিধি ভেঙে
সৃষ্টি করতে পারে বিশেষ কোনো চেতনার দ্বীপ,
কিংবা ভিন্ন কোনো উপমহাদেশ।
স্পর্শ এক গাঢ় উপলব্ধি।
মনস্তাপ
মাথার মধ্যে মনস্তাপ নিয়ে একসময় রোজ
রেলব্রিজ ডিঙিয়ে যেতাম শহরের কেদ্রে।
সেইসব মনস্তাপ লুকোবো কোথায়?
কালো পিচরাস্তায় আলো জ্বলে উঠলে,
ভীষণ হতাশা নিয়ে একা একা
চলে যেতাম প্রিন্সেপ ঘাটে,
নদীর সঙ্গে কিছুক্ষণ হাঁটব বলে।
শব্দের ময়ূরী
শব্দের ময়ূরী পাখনা মেললে
মেঘলা দুপুর বৃষ্টিমুখর হয়ে ওঠে।
অনাদরে পড়ে থাকা গানের কথা সুর পায়,
আর ছাতায় বিষণ্নতার দিন ঘন হয়।
কাকতাড়ুয়া
কাকতাড়ুয়ার কোনো স্বপ্ন নেই।
মাঝমাঠে ঝড় জল রোদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
শস্যদানাখোর পাখিদের চোখরাঙানো ব্যতীত
তার আর কোনো কাজ নেই।
মনে নেই বর্বরতা।
নেই বারুদ, কার্তুজের জাল বিস্তার।
তবু, পাখিরা তাকে ভয়ঙ্কর শত্রু বলে জানে।
রোদময় দিনের মলাট
রাতের মাতাল মেঘে ভেসে যায়...
কাকতাড়ুয়া তবু স্থির সজাগ!
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন