ভুসুকপাদ
সন্দেহপ্রবণ এই সময় ক্রমাগত ডিগবাজি খাচ্ছে
বাহুতে ট্যাটু আঁকা বখাটে হাওয়া
এইমাত্র তার শার্ট খুলে রাখল;
বেশরম লজ্জারা কোথায় যে নিরুদ্দেশ…
ফন্দিফিকির করে মানুষকে বোকা বানাচ্ছে
রাজনীতির ঘোড়েলরা।
কবিরাও আজকাল রাজনীতি করছে
সর্দার কবি তার পারিপার্শ্বিক স্তাবকদের
স্মিতহাসি উপহার দিচ্ছেন…
উপমা উৎপ্রক্ষায় ছলকে উঠছে বাংলা কবিতা।
আর আমরা শুধু কাহ্নপা নদীর জলে
পা ডুবিয়ে বসে থাকি কখন একটা ভুসুকপাদ ঠেলে উঠবে….
বিনির্মাণ হোক
আজকাল কোনো সেমিনারে গেলে
কেমন চটচটে আঠার মতো কতকগুলো শব্দ শুনি
পুরনো কাঠামো ভেঙে বেরিয়ে আসে না
কোনো আপডেট সত্য…
খড় মাটি প্রলেপস্তর থেকে নতুন উদ্ভাস চাই
রঙের জেল্লা শুধু না
প্রতিমায় প্রাণ ফিরে আসা চাই…
অলৌকিক বিভায় বিনির্মাণ হোক
আমাদের উৎসবের আসল কবিতা !
ফসল বুননের গান
কে কাকে ঘাড়েধরে শেখাবে
ফসল বুননের গান…
চাষীর তন্ত্রিতে বেজে উঠুক আবাদী সুঘ্রাণ
নিড়োনো ঘাসের থেকে যত আবর্জনা
যত ক্ষতিকর কীট
তাকে সযত্নে আড়াল করো,
অনুভূতির মাঠে ওই যে সামান্য চাষাবাদ
তাকে নির্বিঘ্নে নির্বিষ করো…
সময় বলে দেবে কত মণ ধান আর কতটা খড়
আমাদের চেতনা জুড়ে পড়ে আছে অবিন্যস্ত…
পুণ্য তীর্থে
ফুল্লরা নদীর জলে পা ডুবিয়ে হাঁটছে মানুষ
সংক্রান্তির মেলা বসেছে ওপারে
আবাস যোজনার ঘর নেই
বুনুম হেমব্রমরা খালি গায়ে মেলায় যাচ্ছে
নাচ ভুলে গিয়ে তারা এখন খাদ্য খোঁজে
মেলায় হয়তো শহুরে বাবু-বিবিরা আসবেন
টাঁড় মাটিতে খালি পায়ে তাদের সঙ্গে নাচের
লোভ দেখাবে, টাকার লোভ…
মোবাইলে ছবি তুলবে পটাপট
পরদিন সকালের দৈনিকে
আদিবাসী উন্নয়ন নেচে উঠবে ধেই ধেই…
'হে মোর চিত্ত পুণ্য তীর্থে জাগো রে ধীরে…'
শকুন সন্ধ্যা
এসো হে গোপনন্দিনী, সুবল সখা
ধুলোমাটি ধরে রাখি অঙ্গে মাখি কাদা
আমার বিচিত্র সখ গুলাল পার্বণ
কালোধন যেন হয় বিচিত্র সাদা।
এসো হে যমুনাবতী, এসো তুমি ধীরে
ডিজের বাজনার সাথে উত্থিত চিৎকার
তোমার নূপুরধ্বনি শিঞ্জিত আবেগ
রাত্রিশেষে বেজে ওঠে বিরল শীৎকার।
এ ভূমি বাংলাদেশ, এ নয় গোকুল
নাগরিক মৃত্তিকায় অকাল বন্ধ্যা
শ্রীরাধার উরুসন্ধি বলাৎকার মাখে
চারণভূমিতে নামে শকুন সন্ধ্যা!
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন