সাযুজ্য 

একেকটি মুখ পাখির মতো।
কেউ কেউ টিয়া,দোয়েল,বাজ।
বেড়ালের মতো আর ঘোড়ামুখ কত দেখি
 মুখ আর মন সাযুজ্যে থাকে
কোনো কোনো মানুষের হিংস্রতা বুনো কুকুরের মতো ছুটে যায়
 শিকারের খোঁজে
শহরের কাদা ছিটকে আসে প্রান্তরের শরীরে,
সাদা মাটা বোকা পোকা কত আসে ভিড় করে 
অভাবিত সব বঞ্চনার ঝুলি নিয়ে ওরা আসে।দলে দলে।
সাদা আর নীল দুই রঙা আকাশের কোণে কালো
পৃথিবীর তত্ত্বকথা নিয়ে বিতর্ক করে
সেসব কাঁটাঝোপ সাবালক হলে।
রাত এলে টিয়ামুখ,পেঁচা আর বাদুরের 
একাকার হয়ে যায় অরণ্য নেকড়ে আর কুকুরের সাথে
লালা ঝরে লোভে,সকলের একই রং।

পর্ণমোচী পাতা লজ্জায় মাটিতে মেশে,
সব মুখ এক হয়ে যায় দিনশেষে।।





ছাই

এভাবে নিজেকে ছোটো করি
প্রতিদিন প্রতিবার 
আলো আর অন্ধকার নিয়ে ব্যস্ত থাকি
রোজ ভিক্ষা করি
ঠোঁটে করে খড়কুটো আনি,ঘর বাঁধি
ভেঙে যায় সব আড়াল আবার জল
ভেসে যাই ফের

পড়ে থাকে ছাই 
প্রতিদিন ছোটো হয়ে যাই 
পাথরের কাছে মাথা নত করে।





দহনগাথা

হঠাৎ আঘাতে এমনকি চাঁদও টুকরো টুকরো হয়ে ঝরে গিরিখাতে।
ব্যর্থ হয়ে যায় ধুর্জুটিসমূহ
নীরক্ত বেদনায় পুড়ে পুড়ে পুড়ে 
ছাই গোলাপ হৃদয়।
অবিশ্বাস আজ পঙ্গপালের মতো নিঃশেষ করে দেবে স্বপ্ন শত শত
তোমার কিম্বা আমার
অযৌন তৎসম উল্কাপাতে 
মানুষ আর মানুষের সঙ্গে মানুষের প্রেম পুড়ে ছাই।একদিন যারা
তোমার আমার প্রার্থনা ছিল
তারা ক্ষত বিক্ষত
 স্বপ্নের ভিড় এখন
আতান্তরে সব সরে গিয়ে মরীচিকা 
সন্দেহ আর ঘৃণা, ঔদ্ধত্য আর হুতাশনে ছাই মাইলের পর মাইল
ঘর উঠোন শস্যক্ষেত 

তুমি, কেউ নয় কি আমার?

দীর্ঘ রাত আর দীর্ঘ দিন
দীন দিন দীন যাপনের মতো হলুদ পাতারা
বিকেলের মরা আলোর মতো একেবারে মৃত
টুকরো টাকরা আমি এই নদীমাতৃক দেশে বেশ্যা হয়ে গেছি 
কন্যা থেকে জায়া,মা থেকে প্রেমিকা 
সকলে ব্যবহৃত হতে হতে হতে
অবসণ্ণ শরীর বিছিয়ে দিয়েছি নয়ানজুলির জলে।
আমরা বিকিয়ে গেছি কবে
সমূহ অন্ধকারে কস্তুরী মৃগের নিঃশাসে অন্ধকারে অন্ধকারে সমূহ বিনাশ।
কালো নদী।নদী ঘাট,অপ্রসন্ন মাঝি একা একা 
পূরবে বাদলদিনে 
তারা বলে যাই অরণ্য প্রদেশ কেঁপে কেঁপে ওঠে শোকে

তুমি কেউ নয় কি আমার!

অজর অনন্ত অশ্বারোহী মতো ক্ষুরধার আকাশে সার সার অক্ষৌহিনী আজ জিতে নেবে সব নিবেদন
কেউ নয় কেউ নয় কেউ যে তোমার 
একা একা উল্লঙ্ঘ সমুদ্রমধ্যে বিস্ময় প্রান্তর
হে বৃক্ষ তুমি একা
মনে রেখো এই দুর্বার প্রণয় 
মনে রাখো সেইসব জোনাকির ভালোবাসা,খণ্ড খণ্ড তৃষ্ণার কথা আজও বেহুলার মতো আতান্তরে ইন্দ্রের সভায় তাই ফিরে যাব আমি আবার ফিরে ফিরে কামনা বাসনার ঘ্রাণময় সেইসব উঠোন ঘর তোমার বাগানে 
জল সরে সরে দেখে মৃত বেলাভূমি 
কত দূরে সংসার নিশ্চল দাঁড়িয়ে আছে

কেউ কি নয় আমি তোমার?







জয়িতা ভট্টাচার্য 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন