১. 

গমক্ষেত


[সঙ্গের আগে সে দেহই থাকে। আসঙ্গে আর থাকেনা। কিন্তু নিঃসঙ্গ হলে পূনরায় সেই-ই দেহময়।]

নতজানু হও, বলো বীজ― ফুঁ দিলে কনকচাঁপা।
(চাঁপারা ভাই ভাই, চাঁপাদের ভয় নাই।)

হংস দেখ― বাম দিক থেকে ধ্বনি, ডান দিকে বর্ণ; মাঝখানে অক্ষর ঘুমায়।
তবু কত বিশ বহন করো তুমি।

আছ, তার বড় প্রমাণ ছিলেনা !! কোথায় ছিলে !!
---------------------------
জল থেকে জল হয়,
আবার জল থেকে
জল নিলে জল থাকে।
---------------------------
অরণ্যে যোজনগন্ধা, পুরুষ দৌড়ে যায়... শিশির যায়...
সামনে অমৃতদেহ...

[যেন গমক্ষেত, সারাদিন বেহালা বাজে।]






২. 
সতর্ককরণ

আদিপর্ব
[একেকটি দেহ, নিজস্ব উড়াল নিয়ে ভীষণ সন্দেহ]

চলো, জনজলে যাই; চিৎকার করি― আমি দেশ। যার মৌলনীতি, চিৎ ও চার্বাক। জয় ও জীবিতা যার অধিকার। প্রতিরক্ষায় আমিরা দল বাঁধে, সংঘর্ষে মাতিয়ে রাখে ভূমি। অরণ্য অভয় মানি, কখনো কোল, কখনো অহুর। দপ বাজাই, নাচ থেকে খসে পড়ে কুণ ও কলা।

আমারে জাগাবে যে, ভেতরে জাগিছে সে।

চিহ্নের কাছে যাই, বুক পেতে নিয়ে আসি স্বর। যতটা গ্রহণে আসে ততটা অগ্রমাস। রংপাতার মতো সময়বেলা, একবার সাদা, বারবার আঁকিবুকি। অংশ পেতে থাকি, যা আসে অংশু, যা যায় অন্ধকার। সংকর্ষে অরূপ দেখে, অজস্র লীলায় লীন ও আলীন।

সতর্ককরণ
সন্দেহ জগতের অধিক দেহ





৩. 
ত্রিভুজ যাপন

কি ভাঙছে, কাচ না কাহিনি না সিমেট্রিপাখি...

দেখো― দাঁড়িয়ে আছে শ্রীমতি বনলতা সেন, সুরঞ্জনা সেও যায়নি যুবকের সাথে।

―১ ও ১-এর মাঝামাঝি তুমি।
০ + ০
০ - ০
০ × ০ সেও তুমি।
অথচ ০ ÷ ০ সেই অসীম, যাকে দেখেছিলে শরীরের তারায় তারায়।
আর বনলতা যেন শক্তির নাম, যা তুমি আর শরীরে লুকানো সুরঞ্জনা ও তার বর্গের গুনফল।

কবি জীবনানন্দ দাশ !
তুমি ও বনলতা, বনলতা-সুরঞ্জনা, সুরঞ্জনা ও তুমি।
তোমাদের ত্রিভুজ যাপন।

ঘুমাও কবি, আজ তীব্র বসন্ত।





৪. 
গোল্ডেন রেশিও

তিনি চিৎকার করেন― ইউ আর দ্যা লাস্ট সেকেন্ড--- দ্যা লাস্ট সেকেন্ড...
সুবর্ণ না মোনালিসা ! শিল্পি কার দিকে তাকিয়ে আছে।
চোখ যেন আলট্রা-ভায়োলেট, যেন দেখা মাত্রই দর্শন।

ইজেল থেকে ততক্ষণে শিল্প বেড়িয়ে গেছে। সামনে ১.৬১ অনুপাত শরীর― মোনালিসা, দ্যা ফাস্ট সেকেন্ড।
অনেক সিম্ফনি, অনেকগুলো আগামীধ্বনি।

বর্গ থেকে সুবর্ণ যায়। যেতে যেতে তার গতি বাড়ে।
যেতে যেতে উচ্চারণ করে―
৩৬০°+ অথবা (-)মাইনাসে এসো, স্পর্শ করো আমার শূন্যতা।





৫. 
শুভ জন্মদিন

মার্চের ১৪ তারিখ। ১.৫৯ মিনিটে ফু দিয়ে মোমবাতি নিভিয়ে ফেলিস। সমস্ত গোলের পরিধি ও ব্যাসর অনুপাত তুই।
হ্যাপি বার্থ ডে টু য়্যু....

তারপর―

২.৬৫ মিনিটে শব্দ করিস...
৩.৫৮ মিনিটে স্পর্শ করিস
৯.৭৯ মিনিটে রূপ খুলিস
৩.২৩ মিনিটে রসের আধার
৮.৪৬ মিনিটে গন্ধময়।

২২.৪ ট্রিলিয়ন পর্যন্ত নির্ণিত তুই। কতদূর যাবি !
৬৭,৮৯০ ঘরের পড়ে ব্যর্থ, আমি ও একজন। তাকে করুণা করিস―

বলিস― লাভ য়্যু লু চাও...






৬. 
যুক্তরাষ্ট্র

দৃশ্যত শরীর একটি রাষ্ট্র, ঝরাপাতা, পাতাদের বাতাস বহন।
রাজ্যগুলো সাদাকালো, লালনীল সবুজহলুদ
আসমানি।
তারা রঙ্গন। রঙ্গন।

তাদের আকাশবাতাস, গাছফুলনক্ষত্র, পাখি, সব আছে।
সংবিধান আছে...

মাটি-জল আাছে―
স্রোত-আলো আছে―

তুমি আছ― তুমি স্বর ও শরীর, একেক রাজ্যে একেক নাম।
কোথাও জ্যোতি, জুহু-আম্রপালী, কোথাও ছয়কোটি মৃত জোনাক।

পালাতে পারোনা; প্রতি অংশে অংশ মিলিয়ে থাকো; স্পর্শ দিয়ে গুছিয়ে আনো দেশ।

তুমিও স্বেচ্ছাচারী অথচ শাসন করো―
আর
যখন শাসন করো, তখন সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র কেমন অশান্ত। উত্তেজিত।

আর একটু একটু কম্পমান।






৭. 
রাক্ষস

কাল সে শরীর দেখে গেছে, আমি তার এগার মাসের বিশ্রাম।
চড়ুইভাতি
ছৌনাচ
তুমিতুমি খেলা।

যদি উড়ে আসে, শীত তার নাম ভুলে হয়ে যাবে ফিনিক্সপাখি।

আমিও গ্রাম, ভেতরে কুন ও কুঞ্জ বাজে,
আর
যখন বাজি তখন রাক্ষস ফোটে।

প্রথম... দ্বিতীয়... তৃতীয় রাক্ষস...

তারা পঞ্চম করে, রক্ষণ ও ভক্ষণ করে― ভেঙে যায়।
তারা ২৮৫০ কবিতা, ১৯ উপন্যাস, ১২৭ গল্প, ৪০০০ পৃষ্ঠার ডায়েরি, প্রকাশ না করেই মরে যেতে পারে।






পরিতোষ হালদার 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন