আমি বলব
কাপড়
শুধুমাত্র পরানোরই নয়
খোলারও একটা জিনিস বটে
অথচ
কাপড় পরাতে পরাতে
শুধুমাত্র যৌনাঙ্গগুলোই নয়
কতজনের
আরও কত কত লজ্জাস্থান ঢেকে দিয়েছি
আমার নিষ্পাপ ঠোঁট
কখনও কোনও প্রশ্ন তোলেনি
যদি তোমাদের লজ্জাস্থানগুলো
হঠাৎ কোনওদিন সীমা ছাড়িয়ে যায়
আর
আমি যদি সহ্য করতে না পারি
সেদিন
তোমাদের পেন্টুলুনের পায়া
এবং জামার হাতল ধরে
পাতালে ঝুলে পড়ব
সবাই বলবে আত্মহত্যা
আমি বলব
জীবন
ভাবসমাধি
ত্যাগের মূর্ত প্রতীক হতে গিয়ে
মাথার উশখোখুশকো চুল
কিছুই বোঝাতে পারে না
মূর্খের মতো দাঁড়িয়ে থাকে
পায়ে একটা হাওয়াই চপ্পল গলিয়ে নেওয়া
অথবা
গায়ে সাধারণ ছিটকাপড়ের জামা চড়ানো
সবটাই
একটা মামুলি ব্যাপার
সবচেয়ে বড় কথা
সবটাই বাহ্য
যার ভাবসমাধি নেই
এবং
যা উপর উপর
অসততা
বর্তমান হলোএক টুকরো আমি
সর্বদাই
আমি তাকে হাতের মুঠোয় রাখি
মাঝে মাঝে
তাকে নিয়ে লোফালুফি করি
এদিক ওদিক ছুঁড়ে দিই
বেলা শেষে
হাঁসমুরগির মতো
আবার ডেকে নিই
অতীত এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে
আমি যে ভাবি না
তা কিন্তু নয়
বর্তমানকে টপকে
কীভাবে অতীত এবং ভবিষ্যৎকে নিয়ে
সারাক্ষণ পড়ে থাকি বলুন তো?
বিশেষ করে
আমাকে পুজো করার জন্য
ভবিষ্যতে একটি মূর্তি গড়ে উঠবে
নিয়াজুল হকের গুচ্ছ কবিতা পাঠ করে একটা নতুন অভিজ্ঞতা হল। কবিতা সম্পর্কে যেমন শেষ কথা হয় না, তেমনি কবিতার নন্দনও হয় না। প্রতি মুহূর্ত জীবন একটা সাধনার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। একটা অভিজ্ঞতার রসায়ন জীবনকে দার্শনিক করে তুলছে। কিন্তু শুধু দার্শনিকই নয়, চূড়ান্ত বাস্তববাদীর মধ্যে দিয়েই তীব্র আইরনি প্রয়োগের ক্ষমতাও এনে দিচ্ছে। কত কম লিখে কত বেশি বলা যায়, গিমিক বা গোলকধাঁধা, ব্যঞ্জনা বা জাদুবাস্তবতা না ব্যবহার করেও কবিতায় অকৃত্রিম স্মার্টনেস আনা যায়, তা নিয়াজুল হক দেখালেন। হাটে হাঁড়ি ভাঙতে গিয়ে যখন দেখা গেল মৃন্ময়ী হাঁড়ি ধাতবের তৈরি, তখন তা আর ভাঙা হল না। কিংবা ঠোঁট যে লোহার চেয়েও অনেক বেশি নরম এ জীবনে বুঝতে পারাও কম কথা নয়। বাংলা কবিতার এক নতুন দিগন্ত খুলে যাচ্ছে। খুব সমীহ জাগিয়ে তুলেছেন আমাদের প্রিয় কবি নিয়াজুল হক।
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন