নকশি চুমুর হইহল্লা 

আমি যে এখনো ৯ ÷ ৩ = ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বরে
পড়ে আছি, একথা জানার পর ফুলদানির ছোটো 
মেয়ের নিভিয়াচর্চা ফিউজ হয়ে গেল।
গন্ধ-পাগলি বাতাস বেডশিটের হুপিংকাশি অনুবাদ
রেখে এই গল্প রোদ্দুরে ছড়িয়ে দিতেই,
আইবুড়ো ঢেকুর মায়াবী জলঘুম গোলাপি বদ-অভ্যাস
আর সনেটকুমারীর লিরিকে ফুটে উঠল,
আঁশবঁটির শোক। 
উত্তেজনাগুলো জামার বোতাম খোলার আগে স্পষ্ট দ্যাখা যাচ্ছে, 
পোর্সিলিনের প্লেটে হার্টফেল করা চিলিচিকেন ডুমোমাছির বিদঘুটে ধ্রুপদ 
আর নিরক্ষর নাচ।
ঠিক এই মুহূর্তে জানালার জরায়ু ছিঁড়ে ঘরে ঢুকছে
মেঘের ডুগডুগি আর বৃষ্টির দোআঁশলা ইয়ার্কি।
এ-সব দেখেই সাদা দেয়াল অর্শে ভোগা  আরশোলার
অ্যালজেবরা দিয়ে দিনকানা রজনিগন্ধার দীর্ঘশ্বাস 
ডিকোড করতেই স্পষ্ট হয়ে গেল, জ্বর বিলাসের
সব রূপকথাই মিথ্যা। শুধু তাই নয় খিলিপানের
শিহরন দিয়ে কোনোদিনই আধখেপি নদীর
ধিঙ্গি শাড়িটির মনখারাপের কাছে পৌঁছানো
যাবে না। আজ প্রেমে ফেল ভ্রমর টুথপিকের
রাষ্ট্রচিন্তার কাছে, তার সুরেলা ডানার স্বপ্ন বন্ধক
দিয়ে যেভাবে ইহকাল নিয়ে লোফালুফি করছে,
তাতে অনায়াসেই বাঁকা মনের কদমতলা থেকে
হারিয়ে যাবে নকশি চুমুর হইহল্লা। 









সত্যযুগ 

মৌরিফুলের রোদচশমা নিয়ে আমি
কী করব? আর কী-ই-বা হবে কদমগাছের জ্বর
বিলাসের রূপকথা শুনে? বিরহমেকার যেভাবে
আমার মনখারাপের বায়োডাটায় সরলরেখার
একাকিত্ব ঢুকিয়ে দিয়েছে তাতে কি আমি
চৈত্রসেলের মিনাবাজারে, 

পিংপং বলের কত্থক বাইসাইকেলের সন্ধ্যাহ্নিক 
গোলাপি প্যান্টির হাহাকার আর রূপসির
বগলের গন্ধমঞ্জরী বিক্রি করতে পারব? 

--- পারব না। 

পাশবালিশের আলস্যের পাশেই ব্যাংকান্নার
স্বরলিপিগুলো আমার মগজের সব এক্কাদোক্কা 
হ্যাং করে দিয়েছে। 

আমি বুঝতেই পারছি না, 
কষাইয়ের উল্লাস কতটা গণতান্ত্রিক ভাতঘুমের
পাসওয়ার্ড কেন নীল হরিবোল ইউনিয়নের সদস্যরা
কতটা পবিত্র অথবা স্মৃতির জাবরকাটা 
জানালাগুলো কোন ভাষায় কথা বলে। 

আজ সাদা কাগজের তলপেটে কলমের রোমিওমি
দেখে হ্রেষাধ্বনি ভরা শরীরটা হালকা হয়ে 
যাচ্ছে। 

এবার কি আমার রক্ত-মাংসে সত্যযুগ নেমে
আসবে? 








আয় শূন্য  

বেইমানির রেসিপি জানি না। 
আমাকে সরলরেখার ছোটো বোন বলল,
আপেলের ভিতর পিংপং বলের কত্থক খুঁজে পেলেই
বুঝতে পারবি, নোনা ধরা দাঁতে ধর্ষিতা খিলিপান
কেন পরাশক্তির বিরুদ্ধে কথা বলে। 

আমার মোবাইলে,
পোলিওগ্রস্ত গেঞ্জির কোনো আর্তনাদ নেই,
টেবিলের নীচে দুশ্চরিত্র পা-এর কোনো রূপকথা নেই,
ব্রজবাসী মাখনের কোনো জাতিস্মরবাদ নেই। 

আমি যখনই গুগল সার্চ করে দেখি,
জঙ্ঘার বরফ গলানোর জন্য ব্ল্যাককফির 
ফিজিওথেরাপি কতটা জরুরি, 

ঠিক তখনই চুমু ভাঙা ক্ষোভ মনখারাপের 
গর্ভযন্ত্রণা প্রেমে ফেল বৃষ্টি আর অন্ধ দাঁতের
মাংস-জপ আমাকে সতর্ক করে দ্যায়, 

বেইমানি না জানলে শূন্য ছাড়া কিছুই পাবি না। 

আমার চারপাশে ভ্রমরের শোক কমলালেবুর পিয়ানো
ফাটা গোড়ালির অভিমান আর বৌদ্ধ আঙুলের
নীরবতা। 

তারইমধ্যে আমি গেয়ে চলেছি, 
আয় শূন্য লিপস্টিকের চিঠি হয়ে আমার বাড়িতে, 
তোদের দিয়েই আমি দেয়াল সাজাব। 








উর্বশী বিড়ির ধোঁয়া 

আমি বোকা জানালাটিকে 
বললাম, ঊরুবিলাসী ঘুণপোকার সঙ্গে দোস্তি করলে, 
জবাফুলের গর্ভে অভিমানের কতগুলো 
শ্যামাসংগীত আছে জানতে পারবি না।
শুধু তা-ই নয় অন্তর্বাসের অন্তর্দ্বন্দ্বের রহস্য তোর
অজানা থেকে যাবে। 

কে শোনে কার কথা,
আজ আমি ওর অবিশ্বাসের ডেডবডির পাশেই 
দেখছি, শিহরনের সিরাপ খেয়ে হাইব্রিড অভিমান
আর চৌকো পরশ্রীকাতরতা অসভ্য মোমবাতির
সঙ্গে ভোকালকর্ড ভাতঘুমে কী কী স্বপ্ন দ্যাখে
তা-ই নিয়ে কথা বলছে। 

বুঝতে পারছি না,
আমি কি এখন জানালাটিকে
ত্রিভুজের রক্তবমির কথা বলব? স্তনের জোরে
নিভিয়ে দেওয়া ক্যারেকটারের কথা বলব? নাকি
আলজিব অ্যালজেবরা ভুল করলে কেন
টম্যাটোর ব্রহ্মচেতনায় শিশির পড়ে সেই কথাই
বলব? 

টেনশনে আছি।
তারইমধ্যে দেখছি, গন্ধ-হ্যাকার হাওয়া 
উর্বশী বিড়ির ধোঁয়া লুফতে লুফতে চলে যাচ্ছে,
মশা মারা ধূপের ফুলশয্যায়। 









টাইটানিকের SOS আর ৯ /১১-র নীরবতা

শ্রীকৃষ্ণের পরকীয়ার গল্প দিয়ে আমি
যে ব্যবসাটা শুরু করেছিলাম, এ বছর মহিষাসুর 
হে রাম বলার আগেই তার মূলধন উর্বশীর ঊরু। 
এখন আমি স্বপ্ন দেখছি, আমার দোকানের শোকেস ১০০ সমুদ্রমন্থনের বাই-প্রোডাকটে ভরে যাবে। 

আজ মশা মারা ধূপের রাজধানী থেকে 
৫০০০ স্কোয়ারফুট সত্যভামার হাসি অর্ডার পেলাম।
স্লিভলেস রোদ্দুরের দ্বীপ থেকে ১০০ মাইল গায়ত্রী-
মন্ত্রের স্বরলিপি চেয়ে পাঠাল। জ্বরবিলাসের রূপকথা
দেশের প্রধানমন্ত্রী ৫ ওয়াগন সম্মোহনী বাঁশির সুর
পাঠানোর অনুরোধ করলেন। 

কিন্তু এখন আমি বুঝতে পারছি, আমার ব্যবসাটা
কিছুতেই ভীমের মজবুত পাছা হয়ে উঠতে পারবে না।কেননা, 

এক্সপোর্ট ডিউটি পুন্যিপুকুর থেকে হয়ে গেছে 
বৈতরণি। জিএসটি  মেনকার বিউটিস্পট থেকে
হয়ে গেছে মন্দারপর্বত। ইনকামট্যাক্স ব্যাঙের হাঁচি 
থেকে হয়ে গেছে দুর্যোধনের অট্টহাসি । আর তোলাবাজদের হাঁ হয়ে গেছে কুরুক্ষেত্রের রণভূমি।

ওদের দাপটে সব অর্ডার বাতিল করে দিলাম।
এখন দোকানটার দিকে তাকালেই হৃৎপিণ্ডে ছড়িয়ে পড়ছে টাইটানিকের SOS আর ৯ /১১-র নীরবতা। 






সুশীল হাটুই 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন