নীলিম কুমার

মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ– বাসুদেব দাস







যাত্রা

অন্ধকার হওয়ায় লঙ্গর ফেলে আমরা নৌকায় 
বসেছিলাম। হাতের মুঠোতে ছিল আমাদের জীর্ণ হয়ে যাওয়া 
পান্ডুলিপি। ডানা ঝাপটে ধপ ধপ করে উড়ে গিয়েছিল ধূসর পাখিটা।
প্রত্যেকেই বোবা, নিথর এবং অন্ধকার হয়ে পড়েছিলাম
হাতের রেখায় ভবিষ্যৎ দেখব বলে একে অপরের হাত তুলে নিয়েছিলাম।
শীর্ণ হাতগুলি স্পর্শ করেই বুঝতে পেরেছিলাম শকুনেরা নেমে আসবে।
আমাদের সঙ্গের কারও একজন স্ত্রী এই দুর্যোগের সময়ে 
একটি সন্তান প্রসব করেছিল। কেউ একজন
বড় আনন্দে চিৎকার করে উঠেছিল 'এটাই সূর্য'!
কয়েকজন ক্লান্তিতে অসংলগ্ন দৃশ্যের স্বপ্ন দেখে বিড়বিড় করছিল।
সোঁ সোঁ  করে বইতে থাকা বাতাসে, কোনোমতে প্রদীপ একটা জ্বালিয়ে
ক্ষীণ আলোতে বাইরে তাকিয়ে দেখেছিলাম
রক্তে মাখামাখি অনেক মানুষের জীবনের পান্ডুলিপি ভেসে গেছে।
শেষ বারের জন্য আমরা প্রদীপের সামনে মেলে ধরেছিলাম আমাদের মুখগুলি
গাল দিয়ে গড়িয়ে আসা চোখের জল কোনোমতে সম্বরণ করে
আমরা পুনরায় হাতে হাতে তুলে নিয়ে ছিলাম বৈঠা।
ভয়ার্ত নৈঃশব্দের  মধ্যেও জল ভেদ করে করে 
শব্দ করে করে এগিয়ে যাচ্ছিল আমাদের নৌকা 
অবশেষে তুফান বৃষ্টি না হওয়া উপত্যকাটির 
নীল পতাকা আমাদের চোখে ঝলসে উঠেছিল।







তোমাকে দেবার মতো কিছুই ছিল না

কোনো আয়োজন ছিল না
তুমি তোমার কবিতার থেকে উঠে এসেছিলে মাত্র
আর আমার বিষাদে ভিজে থাকা হাত দুটি
খুঁজে বেড়াচ্ছিল তোমাকে

বৃষ্টি হয়ে হয় শেষ হয়েছিল মেঘগুলি
তোমাকে দেবার মতো কিছুই ছিল না আমার হাতে
তোমাকে দেবার মতো যদি কিছু ছিল
যদি কিছু ছিল আমার ঠোঁটে
সেটা ভেঙ্গে-ছিঁড়ে যাওয়া একটি কবিতা।
একটি স্বপ্ন শেষ হওয়ার সময়
আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরেছি
তোমার সঙ্গে।








আমাদের আকাশে চারটি চাঁদ

আমাদের আকাশে এখন আছে
মাত্র চারটি চাঁদ

তার তিনজন
দুধ দেওয়া ছেড়ে দিয়েছে
একজন মাত্র বইয়ে চলেছে
রুপোলি ঝরণা

এই আকাশের নিচে
অনেক কবি চাঁদের জন্য গান গেয়েছে
অনেক কবির হাতে ঠান্ডা লেগে মরল অনেক চাঁদ
অনেক কবি নারীর চুলে মেলে দিল হাজার হাজার চাঁদ
যেগুলি আর ফিরে এল না

এখন মাত্র চারটি চাঁদ আছে
আমাদের আকাশে

কবিদের থেকে
আমি সেই কয়েকটিকে বাঁচাতে চাই
শিশুদের জন্য।











রুদ্র সিংহ মটক

মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ– বাসুদেব দাস







জঙ্গী

যত দোষ নন্দ ঘোষ
হ্যাঁ ভাই
ওদের আমিই উৎসাহ দিয়েছিলাম
কারণ,ভিক্ষার রুটি আমি কখনও
হাত পেতে নিইনি

ওদের আমিই শিখিয়েছিলাম
ভিক্ষার রুটিতে থুথু  দিতে

কালো পড়া বুকের দুঃখের
আঁচরগুলির চেয়ে
ওদের হাত আর পায়ের নখ
দীর্ঘ রাখতে শিখিয়েছিলাম

দুগাল বেয়ে পড়া চোখের জলের
ধারের চেয়ে
দাঁতগুলি বেশি ধারালো করার জন্য
শিখিয়েছিলাম

বলেছিলাম ওদের কলিজাগুলি
বুলেটের চেয়ে কঠিন করার জন্য

কারণ
মৃত্যুর পরে নয়, এই জীবনে কোনো বাধা না মানা তুফানের মতো
আমাদেরই তো খুঁজে নিতে হবে
ক্ষুধা নয়, ভোগের পৃথিবী….

যত দোষ নন্দ ঘোষ
হ‍্যাঁ ভাই, ওদের বারবার
আমিই উৎসাহ দিয়েছিলাম

কারণ, ক্ষুধা সয়ে সয়ে একদিন
সইতে না পারা ক্ষুধার আগুনের
মতোই
জঙ্গী হয়ে উঠেছিলাম আমি।








রাতের ছায়ামূর্তি

সোনালি রাতের মায়ায়
চঞ্চল হইনি কখনও
দীর্ঘদিন পরে কারামুক্ত কোনো দুর্বল, বিরহ- কাতর 
কয়েদির মতো

পাকা ধানের শিশিরে আঁকিনি যুবতি চাঁদের ঠোঁট জ্যোৎস্নার কোষ
শিশির সুগন্ধি শারদীয়া বাতাসে সিক্ত করেনি আমার নিঃশ্বাসের নিশিগন্ধা

মাঝরাতের শহরে ঘুরে বেড়াতে বিমর্ষ ভাবে
হঠাৎ কবরের পাশে শিলের বুকে ভিড় করে জ্বলে উঠতে দেখলাম
মাণিক–আলোর একটি উজ্জ্বল ছায়া মূর্তি
ধীরে ধীরে কাছে গিয়ে ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম,–
তুমি কে রহস্যময়ী, মর্ত‍্যের মানবী না স্বর্গের দেবী?
অদৃশ্য হওয়ার আগে আলোর সেই দুর্লভ পরী
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলে গেল,–
আমি নারী তোমার সাত জন্মের প্রেয়সী
তুমি আমার প্রিয় পুরুষ জন্ম- জন্মান্তরের

তোমার দর্শনের জন্যই আমি অপেক্ষা করছিলাম নির্জন রাতের

এই কবরের আড়ালে






আমার কবিতার সত্য

(কবি রণাল্ডো টাইডের হাতে)

(১)

যখন স্ফুলিঙ্গ গুলি জ্বলে উঠেছিল
হাসি ছড়িয়েছিল হঠাৎ আমার বিষন্ন ঠোঁটে

আর আমি বুঝে উঠেছিলাম আমার স্পন্দিত বুকের
ভেতরে শব্দগুলি ধীরে ধীরে জেগে উঠছে

শব্দগুলি জেগে উঠল যখন, সম্পূর্ণ করতে পারব বোধহয় বিকেলের আগে আগে
অর্ধরোপিত কবিতাটিঃ গাছ এবং খর্গ হারানো
' আমার সেই হতভাগ‍্য কাজিরাঙ্গা'






(২)

যখন সারি পেতে নক্ষত্র গুলি নেমে এসেছিল
তখনই ঠিক তখনই বুঝতে পেরেছিলাম টাউন হলে কবিতার সভা আরম্ভ হল
পূর্ব নির্ধারিত সময় মতোই

হৃদয়ের অতল গভীরে নিনাদিত নীরবতা, নাকি না শোনা শঙ্খের আওয়াজ
রণাল্ডো ভাইটি, আমার হয়তো দেরিই হল
আজকের সভার জন্য…






(৩)

যখন দেখলাম দক্ষিণ থেকে আসা তুফানের ঝাঁক
বৃষ্টির ঝাপটা থেকে বেশি হয়েছে
আমি বুঝতে পেরেছিলাম আমার কবিতায় খুবই সম্ভব সে রকম হওয়াটা

এপাশের  মন্দির আর ওপাশের মসজিদ, সবুজ উপত্যকা স্পর্শ করে
বয়ে যাওয়া প্রবল নদীটি বোধহয় ইতিমধ্যে সাগরে
গিয়ে পড়েছে










সৌরভ শইকীয়া

মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ- বাসুদেব দাস






ফুটবলের জন্ম

পাহাড়ের গর্ভ ভেদ করে শিশু-সূর্য বেরিয়ে এল
সরল, প্রাথমিক
ঐ সূর্যের মধ্যে 
ফুটবলের জন্ম
নির্জন শালবন ভেদ করে জীবন্ত সূর্য উঠে এল
তেজস্বী, জ্যামিতিক
ঐ সূর্যের মধ্যে
ফুটবলের জন্ম

গোলাকার সূর্য মানেই মুক্তি
প্রচন্ড গতি আর শক্তি
হে ফুটবল, উঠে এসো
সোনার দিগন্ত জুড়ে উদ্ভাসিত হও
এখনই উদয় হও হে সূর্য
এখনই, এখনই
অলিম্পিক মৈত্রী হোক ফুটবল
জীবনের ঘোষণা হোক ফুটবল
আর্টের দুর্ধর্ষ  বিপ্লব
চ্যাম্পিয়ন। কারণ, স্বপ্নের ফেরিওয়ালা ফুটবল
স্বাধীনতার আনন্দ ফুটবল।







শ্মশান

প্রতিটি সুন্দরতম কাজের আড়ালে
নরকের শপথ
কিছু যন্ত্রণা লুকিয়ে থাকে। কাগজে লেখাটা কঠিন।
বিশ্বাস কর, এই ফুটবলটিমটিই সেই দেশের
বেঁচে থাকার পাসওয়ার্ড 
মরুভূমিতে এক টুকরো ওয়েসিস।
ব্যর্থতা…
কোপার ফাইনেলের পরে চোখের জল শুকিয়ে গেছে কুয়োটির  
হজম করাটা শক্ত। কথাটা সত্যি
মাত্র একটি গোল।
আর যে গোলটি সমগ্র জাতিটার হৃদপিণ্ড
স্তব্ধ করে দিল।
ট্রুথ ইজ স্ট্রংগার দেন ফিকশন
উপন্যাসের চেয়ে বাস্তব অনেক বেশি শক্তিশালী
কেন বিষ পান, নন্দলাল?
তোমার চোখের জলের দাম
সারারাত পৃথিবীটা ভেসে গেছে
দেখ, নিউইয়র্ক শ্মশান হয়ে গেল
নিউইয়র্ক শ্মশান হয়ে গেল







অবসর

হীরুদা থাকলে এভাবেই বলতেন–
শিল্পী ফুটবলার। বড় আবেগপ্রবণ
কোথায় শুনলে তুমি, কাগজে?
আসলে পরাজয়ের বিস্ফোরণ
ফুটবলে সব কথাই সম্ভব
কোনো কিছুই নয় অসম্ভব।
মেছি অবসর নেবে
এটা একটি ছন্দ।
এই যে সূর্য অস্তাচলে যায়
তা বলে কি শেষ হয়ে যায়?
যায় না। আবার ফিরে আসে
যে কারণে পৃথিবীটা এত সুন্দর।

মেছির মতো ফুটবলার অবসর নিতে পারেনা।
তাঁরা ঠিক সূর্যের মতো।
পুনরায় ফিরে আসে।










পঙ্কজ গোবিন্দ মেধি

মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ– বাসুদেব দাস






প্রেম কথা

ভালোবাসতে আমাদের কেউ শিখিয়ে দেয় না
খারাপ পেতে আমাদের কেউ বুঝিয়ে দেয় না

নিজের ভালো লাগলে আমরা ভালোবাসি
খারাপ লাগলে খারাপ পাই
শিখিয়ে না দিয়ে অনুভব করি জটিল অনামী শিহরণ

কেউ শিখিয়ে দেয় না বলে ভালোবাসা ব্যকরণ মানে না
কেউ বুঝিয়ে দেয় না বলে খারাপ পাওয়া অভিধান জানে না

বুঝিয়ে না দেওয়ার জন্য ভালো খারাপের সমীকরণ অংক শুদ্ধ নয়
বিজ্ঞানের সূত্র প্রযোজ্য নয় জ্যামিতির বৃত্ত গোলাকার নয়

গোলাপের কাটার আঁচর
স্বপ্নের প্রতিচ্ছবির দর্পণ বাস্তবে ঠনঠন করে ভাঙ্গে
সেই জন্য খারাপ পাওয়ায় এত ভুল
ভালোবাসায় এত হুল
মানুষ না শেখানো না বোঝানো কোনো কথাই না মানা
একি অধম ছাত্রের স্কুল

ইচ্ছাগুলির জন্ম কোথায় হয়
আগ্রহগুলি কোথায় লালন করে উষ্মার শরীর
ঠোঁটগুলি কখন কোথায় ধারণ করে বক্র পথ
আঙ্গুলগুলি কোথায় স্থাপন করে স্পর্শ
আমাদের কেউ শিখিয়ে দেয় না
কুঞ্চিত ভ্রূ বিমঙ্গল অভিব্যক্তি 
আমাদের কেউ বোঝালেও বোঝা হয় না
শিখেও না শিখেও বুঝেও না বুঝেও
শেখা বোঝার অলিখিত ঘূর্ণিপাকের  মধ্যে
আমরা শিখি আদি পাঠ আমরা বুঝি চরণের ছায়ায়

এ কি প্রেম কথা






গোল

গোল দিতে আনা বলটা অন্যে কেড়ে নিল
অন্যে গোল দিতে আনা বলটা আমরাও কেড়ে নিই

যে যত কাড়তে পারে
যত গোল দিতে পারে
জয়ের সম্ভাবনা ততই বেশি

সমাজে ল্যাং মেরে গোল দেবার সুবিধা বেশি
রেফারি দুর্বল খেলার মাঠ উঁচু- নিচু
এখানে জয়ের কথা নেই আহরণের কথা
শক্তি থাকা সবাইকে সমাজ এমনিতেও ভয় করে
নিজে আহরণ করে তারা সমাজকে তুষ্ট রাখে
তাঁরা গোল দেবার জন্য বল না ছুঁলেও হয়







পাখি

ডালে বসে থাকা পাখিগুলি ডাল থেকে ডালে

বইয়ের পৃষ্ঠায় বসে থাকা পাখিগুলি পৃষ্ঠা থেকে পৃষ্ঠায়
অনায়াসে উড়ে যেতে পারে

উড়ার আকাঙ্ক্ষা থাকার জন্য আমাদের মন এবং ইচ্ছা
আমরা পাখির ডানায় বেঁধে দিই

আর বসে থাকা জায়গা থেকে উড়তে আরম্ভ করি
উড়ে উড়ে গিয়ে গিয়ে আমরা ফিরে আসি নিজের কাছে

পাখি নিজের কাছে ফিরে আসতে পারে না

সেই জন্য পাখি চিনতে পারে না ওদের ডানায় বেঁধে রাখা
বিশ্রামহীন মানুষের উড়ানের লিপ্সা
  








সত্যকাম বরঠাকুর

মূল অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ– বাসুদেব দাস





জিরাফের মতো

সমস্ত ঋতুই আমার ঋতু
সমস্ত দিনই আমার দিন
সমস্ত রাতই আমার রাত

আমার অহংকারের গজদন্ত মিনারের মতো
আমার অস্তিত্বের সুগভীর স্থিতি
গুরুতেও চাই ভক্তেও চাই

দাঁড় কাকের যুদ্ধে পড়ে  থাকা
নিষ্পাপ শিশুদের দীর্ঘশ্বাসে
আমি রোপণ করি 
মর্ত‍্যের  পারিজাত

ভগদত্ত মরে দীর্ঘশ্বাস হয়
অনেক নদীর বানের অন্তে আমি
সংগোপনে রোপণ করি আমার
পলি মাটি আকুল সূর্যমুখী
 
সহস্র সূর্যের উত্তাপের উষ্ণতা
আমার অহংকারের শিলাসৌধ
জিরাফের মতো দীর্ঘ গলার

ঘনঘোর তমসাময় বরলুইত 
মাঝির ঝপ ঝপ বৈঠার  শব্দে
জিরাফ গলা আমার অহংকার
গলা মেলে থাকে
গলা মেলে থাকে
---
টীকা-বরলুইত-ব্রহ্মপুত্র 








শনি এবং রবিবার আমার কাছে আসবেনা

আমি আমার শনিবারগুলি আপনাকে দিতে পারব না
কারণ, শনিবারগুলিতে আমি প্রচন্ড শীতে ডুবে থাকি
এত শীত, এত শীত , এত শীত যে
পৃথিবীর জন্মের আগের অলিখিত কাহিনিগুলিতেও 
এত শীতের কথা পাওয়া যায় না।

এই শীত আমার সাধনার আশ্রয় পৃথিবীর সমস্ত উত্তাপের উৎস।

আমাকে খুঁজো না আমার রবিবারগুলিতে
রবিবারগুলিতে আমি বুকে ধারণ করে থাকি নির্জনতা
এত নির্জন, এত নির্জন, এত নির্জন যে
একটি গভীর অরণ্যে একটি গাছের পাতা
ধপাস করে খসে পড়লেই বুঝতে পারবে সেই নির্জনতার গভীরতা।
এই নির্জনতা আমার সাতদিনের সংকল্প
জীবনের বাণী
শনি এবং রবিবারগুলিতে আমি আমার কাছে থাকি
কেউ এসো না আমার কাছে।







দক্ষিণের বাতাস

এইমাত্র বাতাসে বাতাসে ছড়িয়ে পড়া খবরটিতে
সে আসার আভাস পেলাম

সে প্রবল বেগে আসছে
অথচ কোথাও পথের একটা পাথরও এদিক ওদিক হয়নি

তাঁর উড়তে থাকা কাপড়ের শুভ্রতা আকাশ স্পর্শ করেছে 
অথচ কারও অঙ্গ স্পর্শ করেনি

তাঁর ত্রাসে নরখাদক গুলি দৌড়ে পালিয়েছে
অথচ সে কোথাও একটা পিঁপড়েকেও আঘাত করে নি

সে আসবে বলে গ্রাম এবং শহরের প্রবেশ দ্বারে
লাল-নীল তোরণ সাজানো হয়েছে
অথচ প্রত্যেকেই জানে,তাঁর পথ কেবল  সেই জানে 

তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য ছেলেমেয়েরা মাঠটিতে
অনেকেই সমবেত হয়েছে
কৃষক, শ্রমিক, মহন্ত, মহাজন, চোর, দাগাবাজ ,সাধু, পতিত ,পাপী, পুরোহিত

বাতাসে বাতাসে ছড়িয়ে পড়া খবরটা শুনে
প্রত্যেকেই পূবের দিকে তাকিয়ে রয়েছে সে আসবে বলে
অথচ কেউ জানে না
সে পূব থেকে আসবে না পশ্চিম থেকে
নাকি এক ঝাঁক দক্ষিণের বাতাস হয়ে সে 
আমাদের মধ্য দিয়ে পার হয়ে যাবে
আমাদের অজান্তে
আমাদের বুঝতে না দিয়ে








বাসুদেব দাস

(অনুবাদক)

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন