মানিক বৈরাগী-র কবিতা
বেদনার জার্নাল
শীতের দাপট জানে হাঁড়ের আয়ু'র খবর।ব্যাথার গুঙানিতে যদি ভেঙে যায় তার ঘুম
দাঁতে দাঁত চেপে বেদনা বলে কুসুম কুসুম।
তিলে তিলে ক্ষয়ে যাওয়ার উৎসবে
জীবনের রূঢ় বাস্তবতার ক্ষরণ কালে
জন্মান্ধ মোহ মায়ায় মন এখন টলেনা
বুকের মাজারে রক্তক্ষরণ হয় দেখোনা।
কলিজার ঘুর্ণি মুচড় যায় না দেখা
তোমার দেয়া জ্বলন খলা যায় না সহা।
অনিশ্চিত আকাঙ্ক্ষার মোহমায়া ছেড়ে যেতে
ডাকছে নিশ্চিন্ত পুরের কৃষ্ণগহ্বর আলোকায়নে।
অভিমানের রাগে কেন বাড়িয়ে দিস বেদনা
স্যাঁতসেঁতে বালিশের তুলাগুলো পাথরকণা
শুকনো রোদের অনার্দ্র হাওয়ায় অশ্রু ওড়েনা
মিহিন ওড়নাও লাজুক, ফুটেনা ফুল বৃষ্টি আসুক।
চলো সখি বিরহ উদযাপন করি বেদনা তলে
হাঁড় কাঁপানো শীতে ঠনঠনে যন্ত্রণার কোরাসে
মহুয়া পানে জুমঘরে ওম নিই পৌরাণিক নিয়মে
আমাদের সবুজ শীৎকার মুখরিত হোক শ্লোগানে।
মানে নি হুকুম বুঝেছে আজাজিল আত্মমর্যাদা
ঈশ্বরের মতো আদমও পেল ফেরেস্তাদের সেজদা।
তুমি কি অগ্নিদেবী ? ভালোবেসে বিষে পোড়াও সখি।
তোমাকে পূজার ছলে এখন আমি ঈশ্বরকে খুঁজি
অগ্নিশিখা তুমি বহ্নিদেবী নিজে পুড়ে পোড়াও সবি।
প্রেম -ভালোবাসার কাছে ঈশ্বর ও নত হয়
তোমার প্রেমে নেই অভিলাষ
রুদ্রমূর্তি রুশে ইন্দ্ররাজ্য থেকে খসে উল্কাপিণ্ড
বায়ুমণ্ডলে পুড়ে পুড়ে মর্ত্যে সে কালো পাথর
তবুও
জীবন ফুরায় ধীরে ধীরে
তামাক ফুরায় দ্রুতবেগে।
আসে বসন্ত ফুল বনে
টুকটুকে লাল মাছেরা রাসায়নিক দহনে আবাস বদলেছেসুন্দরী ইলিশেরা তীরে ভিড়েছে, শিশির লেগে আছে শাড়িতে
ভোরের তীর্যক রোদে চিকচিকে তীব্রতায় চোখ ধাঁধাঁয়
এমোনি বসন্তে ফাগুনের আগুন ঝরা পলাশ ফুলে
হাইব্রিড কোকিলের গান
লৌহপাতের ঝনঝনানিতে আদি কাকেরা গেয়ে উঠে কোরাস
ব সভ্য খঞ্জরেরা অমরত্বের আশায়
মোড়ে মোড়েগ ড়ে তুলে মসজিদ মাদ্রাসা এতিমখানা
গেলো শীতে খেজুরের তসতসে তাজা রসের পিঠেপুলি উৎসবে
নুতন নতুন মাছের উৎপাদনের ঘোষণা দেয় সরকার
আমাদের মৎস্য কৃষি মন্ত্রী দারুন করিৎকর্মা
মিঠা পানির দীঘিতে ইলিশের প্রজনন গবেষণা চলছে
আগামী বসন্তে সমুদ্র বিজয়ের স্বাদ নিতে পরদেশী
পুঁজি প্রবাহ বাড়াতে গ্যাস কুঁপে ছেয়ে যাক গোটা সমুদ্র
আমাদের পাহাড়েরা সুশোভিত হবে টিলা শ্রেণীতে
প্রত্যাশি মধুকরের প্রতিক্ষায় মাদুকরীরা
সাজবে বসন্ত বাউরিতে
বসন্ত আসে তথাচ কচিঘাসের বিছানায়
গঙ্গা ফড়িংয়েরা সঙ্গমে মেতে উঠে বসন্ত কুটিরে
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন