নিমাই জানা-র গুচ্ছ কবিতা




নির্বিষ অ্যালকেমি ও ভ্যান গঘ

রাতের অশরীরেরাই বৃহত্তম সংখ্যার মতো মনোবিজ্ঞানী
হাত থেকে ত্রিশূল ও জবা নিয়ে আমি এক পলিসিসটিক ওভারি তৈরি করি , নার্সটি মধ্য প্রস্তর যুগের এক হলুদ পোশাক পরে জীবাশ্ম হয়ে আছে শরীরের তলায়
ঋতুস্রাবের ন্যাপকিনে মরচে রোগের এক পান্থপাদপ কথা লেখা, যাদের কোনদিন মৃত্যু পরবর্তী চিকিৎসক হেঁটে আসেনি যৌন সঙ্গমকালে , সঙ্গমের আবহাওয়া জানেন মেন্ডেলিফ
এক চিরহরিৎ বস্ত্রালয়ের নিচে দাঁড়িয়ে মৃত মানুষের পোশাকগুলো এক্রেলিক কালারের যুদ্ধের ছবি আঁকছে
ইছামতি কোন নারীর নাম নয় , তার পায়ের দুটি ধারালো নখ থেকে বেরিয়ে এসে বুদ্ধ সংহিতা আমাকে কামড়ে দেয়
আমি চোখের এক গলনাংক বিশিষ্ট সোনার পাথর থেকে বের করে আনি কিছু সালঙ্কারা অথর্ববেদ , ও চতুরাশ্রম
হিমায়িত এই ইছামতি নারীটি কতবার সমুদ্র থেকে ফিরে এসে এক লক্ষ নিরানব্বই হাজার কবিতা লিখতে গিয়ে ভ্যানগঘকে গুলিয়ে খেয়েছিলেন প্লাজমার অ্যালকেমি দিয়ে
জিভ থেকে সাপটি বেরিয়ে এসেই নির্বিষ হয়ে যায়





নপুংসক রাত ও ময়ূরী

৮৪ লক্ষ সংখ্যাটি সবার মুখেই রাইবোজোমের ধোঁয়া ওঠা এক পর্যায় বৃত্ত হয়ে উঠেছে
আমি কিছু রাসায়নিক দেহের ঈগলের গল্প জানি , যারা সমুদ্র থেকে আর কোন দিন জীবাশ্ম হয়ে ফেরে না কখনো
একসাথে শাঁখ বাজানোর আদিম পরবর্তীকালে ঈশ্বর নেমে আসেন লোডশেডিং পরবর্তী নপুংসক রাতের সিঁড়ি বেয়ে
কোন পুরুষ মানুষেরই গভীর রাতের বেলায় পা থাকে না
তারা আরো একটি  মৃত পুরুষের অবয়বের উপর দাঁড়িয়ে থেকে গভীর রাতের কর্মে লিপ্ত হতে থাকেন
তারা চতুর্মুখী ঈশ্বর হয়ে যান
চোখের অভাবের ওপর দাঁড়িয়ে থেকেও ক্রমশ বিলীন হয়ে যাবার মন্ত্র জানেন , নিজের ছায়াকে খেয়ে নেবার গুপ্তবিদ্যাটি শিখে রেখেছেন এক গুপ্ত রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে
যে বেডসিটে থাকা ময়ূরের ওপর চড়ে বেড়ায় রাতে




ধনাত্মক দাঁত ও গুপ্ত দরজাটি

ধাতু দুর্ব্বলতার গভীর অসুখটি আর কিছু নয় কয়েকটি নয়ন তারা ও দুটি সর্পগন্ধার ঘোড়ার পাজামা বিষয়ক একটি গদ্য ,
যাকে নিয়ে অযৌন চাঁদ সবকিছু লিখে গেছে মোটা মোটা বাঁকা হরফ দিয়ে
ঈশ্বর কতোবার আমাদের পাশে এসে ভৈরবী মন্ত্রের মতো এক শূণ্য দেহজ মাঠে সব ব্রাহ্মণ গুণগুলি রোপণ করতে চেয়েছিলেন অশ্বগন্ধার চারাগাছের মতো
এই নৌকায় সবকিছু উপুড় দিলেও ঈশ্বর সব জানেন আমাদের কামজ নারীর কথা,  ক্রোধ আসলে পরকীয়া বিনাইন মাংসপিণ্ড ,
যারা সমকৌণিকে থাকেন , ঈশ্বর চেয়েছেন ত্রিভুজের ভরকেন্দ্রে থাকা পুরুষ মানুষটিকে অ্যালজেব্রার দুটি ধনাত্মক দাঁতের ওপর রাখতে হয় চিরন্তন
তারপর আমাদের শরীর থেকে বাবা বেরিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ দরজার দিকে পিঠ করে
দরজায় আসলে আমাদের বাবা





গোলাপি দরজা ও চৈতন্যপুর

অজস্র কালো তিলের ছত্রাক আমাদের এক চৈতন্যপুরের দিকে নিয়ে যেতে যেতে বসিয়ে দিচ্ছেন কৃষ্ণকায়া গহ্বর ও কুঠুরির নিচে
যেখানে কোন পরকীয়া নেই , নিষ্প্রভ সম্পর্ক নেই
এক সময় বিহীন কয়েকটি ঋতু দৈর্ঘ্যের পাঠ পড়ে আছে কলঙ্কহীন পলিয়েস্টার জামার বুকপকেটের কাছে
আমাদেরও আগে যাদের চতুর্ভুজ বিছানার উপর মৃত্যু হয়েছে তারা সকলেই শ্বাসতন্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করছেন তালপাতার উপর, তাদের গায়ে অজস্র স্বেদবিন্দু থেকে অংকুর বের হচ্ছে সরু পাতা মেহগনির মতো
দেবদারু চারার নিচে আমি এক অন্তিম শুঁয়োপোকার দিকে চলে যাচ্ছি ক্রিপিং শরীর নিয়ে , আমার শরীর ক্রমশ অনুচক্রিকা হীন হয়ে পড়ছে
ডিউটি ফেরত নার্সটির সব অন্তর্বাস ক্রমশ গোলাপি হয়ে উঠছে পরকীয়া চামেলীকে বুঝিয়ে দেয় রাত্রিকালীন সন্ধি পাঠের কথা আমাদের কি দেওয়ালের কাছে অন্তিম সম্পর্ক রেখে যেতে হয় নাকি এক চতুর্ভুজ প্রাণীটিকে সব বলে উড়ে যেতে হয় গোলাপি বারান্দার দিকে
যেখানে ১০৮ টি পদ্ম মুখের কাছে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কোন ঈশ্বরী সন্ধি পূজার জন্য





ইছামতি নারী অথবা আকুন্দ ফুল শুক্রাণু

কতক গুলো মন্বন্তর কালের দিনের পর আবারো একবার জন্মগ্রহণের জটিল আবর্তন ঘটবে মেন্ডেলিফ ও ঈশ্বর জানেন না
আমাদের কৌণিক বিন্দু গুলোর হাতে থাকবে পরিযায়ী জাহাজের কার্বনেট খোলস
সব মৌলিক সংখ্যা গুলো একদিন যৌগিকের কথা ভাবতে ভাবতে নিঃস্ব হয়ে যাবে উদয় ভিক্ষুকের মতো
বেজে উঠবে মঞ্জিরা ও যৌন নৃত্যগীত , মহেশ্বর ত্রিশূল এর মধ্য দণ্ড দিয়ে ভেঙ্গে দিবে গর্ভাশয় ও ডিম্বাণুর দেওয়াল
আমি শুদ্ধ বেল পাতার মতো প্রণাম করে উঠবো প্রাচীন ইছামতি নারীটিকে
প্রতিটি বাকল থেকে খুলে পড়বে রেনুর পারদ
তাদের কখনো নূপুরের শব্দে আবহবিকার ও রতিচক্রের পরিবর্তন ঘটবে না
কতবার এই গভীর রাতের স্থলপদ্মটি লালাভ হতে হতে পিচ্ছিল হয়ে পড়বে আরো একবার অন্তিম মুহূর্তের জন্য
ঈশ্বরীর চোখে মুখে লাল ও হরিদ্রাভ বর্ণের এক আকন্দ ফুলের স্নান ইচ্ছা জেগে উঠবে
ঈশ্বরী , শাঁখ বাজানোর মতো কঠিন কাজটি করতে পারেন না

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন