গোবিন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর গুচ্ছ কবিতা
পথভুলো মেয়ে
আর্তনাদের নিজস্ব আড়ালে বসে পকেট খুঁজি
আর ছককাটা ঘরের ঘুঁটি সামলে তৃপ্তি শুঁকি,
বেলা বাড়লে...শক্তি হারিয়ে গেলে
এবং দিনের কারসাজি ধরা পড়ার আগেই
রোমাঞ্চকর কিছু আয়োজন টায়োজন...
এখানে যারা হাটবাজারি ঢঙে এসেছিল
বসেছিল গোড়ালি উঁচু ক'রে...
জল ঝরার শব্দকে পাখির ডানা ঝাপটানো ভেবে
কেঁদে ফেলেছিল... অথচ জঙ্গল সাফা আগেই..
নট নড়ন চড়ন ঠকাস গুরুম চাই...
এসব হয়তো অবান্তর বোধ জড়ো হবেই
যদিও ঐ যে... পোশাকের ভাঁজ গুনে গুনেই
বেলা বয়ে যায়... চোখ মটকে সময়টা পেরোলো
নতুবা মেয়েটা কেনোই বা পথ ভুলে যায়...
পথ তো তাকে ভুলতে পারছে না...
ধুলোরও গন্ধ থাকে কোথাও.. নিশ্চই থাকে...
অন্ধকার রাতের পরিধি
গোটাকয়েক পাথরের উপবেশনক্ষেত্র
সাজানো আছে সেখানে
পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে উন্মুখ নদীস্রোত
পাথরে ব'সে নেই কেউ,
ধুলো আর হাওয়া এসে বসে
কবিতা লেখা শেষ ক'রে উঠে গেছেন কবি
তাও দশক পেরিয়ে গেছে সে উচ্ছ্বাসের
আকাশটা নেমে আসে রাত বাড়লে
তারাদের স্নান দেখে আদিম চোখে
নদীর উছলে ওঠা জলরঙ্গ ছুটে যায় তট ছেড়ে
উদাসীন পাথরের ঘুম আসে উদাসীনতায়
দু'পাশের পাহাড়ী দেয়াল বেয়ে উঠে যায়
অন্ধকার রাতের পরিধি
গাছেদের পাতা ছুঁয়ে হিম নামে অপূর্ব
নদীজল কেঁদে ওঠে অদৃশ্য রোমন্থনে
এই অবসরটুকু
এই বিলি হতে থাকা বয়ে চলাটাকে
লিখে রাখে মাটিতে ঘাসে টুকরো নুড়িতে
তারপর সময়ের গভীর তলদেশে নিভে যায় সব
অসংযত কথামালা
প্রিজমের তল থেকে অন্য তলে
জড়িয়ে যাচ্ছে অধরা আফসোস
তিনটে বৃহদাকার যুগসময়
ছেনি বাটালির স্ফুলিঙ্গে
অগ্নি সংযোগ করছে যাপনের মানচিত্র
চোখ থেকে সারা শরীরে আছড়ে পড়ছে
অসংযত কথামালা
স্বপ্নেরা এই সময়গুলোর ভিতর হাতছানি দেয়
উড়িয়ে নিয়ে যায় রোমকূপের অন্দরমহলে
টুকরো হয়ে প'ড়ে থাকে ঠিকানাহীন চিঠি
বিলুপ্ত ফোন নম্বর
আর একটা অস্পষ্ট অপসৃয়মান ছায়া...
দিন যায় না খ্যাণ যায়...
বন্ধুরা...
হাতগুলো মেলে রেখো সবুজ পাতার নীচে
এখানে ঝ'রে পড়ে বুকের কানাচ জুড়ে প্রেম
এখানে মান্দাক্রান্তা ছন্দে লেখা হয়
অসীম প্রপাত
নিভে যাওয়া আঁচের গান
আজন্মের শিকড়
ওসব জানা হয়ে গেছে
ওই তো শরীর
ঐ তো কপাল কপোল নাসিকা এবং মুখগহ্বর
তারপর তার পর...
চেনা চেনা চে না
অন্যকিছু বল
শুনতে থাকি আমৃত্যু
জলের কথা, নদী তীরের কথা
হারিয়ে যাওয়ার গল্প...
তোমাকে প্রণাম করি
হারিয়ে ফেলোনা আজন্মের শিকড়
করতলের রং
আনকোড়া কাপড়ের মাড়
খসখসে শরীরে শিহরণ
খসা শব্দে আলতো উচ্চারণ
নম্রতা এবং ঔদ্ধত্য
মন বিগঙ্গ ওরে বিহঙ্গ
শান্ত চরুবীথি ছায়ায় চল্
তমালতলী কিম্বা ঘন্টা ঘরের তলায়
রবীন্দ্রগানে অথবা বাউলে নেচে উঠলেই
সাত তরঙ্গ খানখান।
উন্মোচনের আড়ালে
অজয়ের জল থৈ থৈ
একটা দু'টো ঘটনা
তিরতিরে স্রোতে খেয়া পারাপার
আর হৈ চৈ এর আবডাল দেখে
কোপায়ের তল থেকে
চল্ খুঁজে আনি করতলের রং
অসাধারণ সব। মুগ্ধতা রেখে গেলাম কবিবর।
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন