শর্মিষ্ঠা সাহা-র গুচ্ছ কবিতা
সূত্র
যে জলে ন্যাড়া পাহাড়ের ছায়া পড়ে
সূর্যস্নাত অবুঝ সবুজেরও।
পাটাতনের নিচে ছড়িয়ে আছে নাওদের সংসার
সেই জলে আমার মায়ের বাড়ি
একলা ঘর অপরিমেয়।
তাই জল ছুঁইছুঁই খেলায় অধরা বাড়ির ছায়ারা।
মা নিশ্চুপ জলের ধারে বসে
দেখে, বরফ জলের চেয়ে কতটা হালকা।
চিহ্ন
একদিন উৎসের অভিমুখ খুঁজতে গিয়ে ঝাঁপ দিই
জলের অতলে ভাসতে থাকি।
বহুদূরে হাঁটুতে মুখ গুজে বসে আছেন আলোকপুরুষ।
অহেতুক সেদিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভুলে যাই
আমার ফেলে আসা পথের ঠিকানা।
আসলে, জলের নিচে নিশানা রাখা যায় না।
তল
বলে যায় পাথর
জলে বাঁধি আমাদের ঘর।
বয়ে যাও তুমি বর্ণহীন রক্তের মতো
শব্দরা জমে থাকে জল-পাথরে, পাথর-জলে, জল-পাথরে।
ঘরকে জীবন্ত বলেই ডাকে সবাই।
জানিনা, দুঃখ কতটা গভীর হলে
জলও এসে থমকে দাঁড়ায়।
বিচূর্ণিভবন
আমাদের পোশাকের ঘ্রাণে লেগে থাকে অসমাপ্ত মুহূর্ত
টেবিলজোড়া অগোছালো কফির কাপ
আচমকা থেমে যাওয়া হুল্লোড় বৈঠকি সন্ধ্যায়
সময় ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় বাহুদ্বয়ের পার্শ্ব পরিবর্তনের দিকে।
কিশোরী প্রেমে জমা স্পৃহাদের প্রত্যয়ে রূপান্তরণ
এমন মুহূর্তে আনক্যাটাগরাইজ্ড ইন্দ্রজাল চৌমাথার মোড়ে,
থেমে গেছে ভেঁপুদের শব্দ
শুধু স্ফটিকের স্বচ্ছতা জুড়ে হৃদিভ্রমর ছুটে যায় আর অসহায়তা।
আমরা হেঁটে যাই ভিড় ঠেলে, নীড় ঠেলে
আমরা হেঁটে যাই জল ভেঙে, সায়াহ্নে রেঙে
আমরা হেঁটে যাই আহ্নিকগতি আর মুক্তিবেগ জানার আশায়।
ঋ
এই যে অহেতুক পৃথুলা বৃষ্টি গড়িয়ে নামে টিনের চাল থেকে, অকারণে কাঠকরবীর গুঁড়িতে বাকলের ফাঁকে পৌঁছে দেয় সঘন সাইরেন পিঁপড়ের দরজায় | সরু সরু লাল কালো রেখায় তীব্র দংশন শরীরে | ঝুরঝুরে বালি হয়ে যায় সুললিত গাঁথনী | মঙ্গলঘট আর আল্পনা আঁকা আঙুল চপল আঁখিতে ভাসে নর্মদায় স্থির দাঁড়িয়ে থাকা শৃঙ্গখানি | ধ্যানমগ্ন ঋষি | জিভ থেকে খসে যায় বিরহবেদন জরতীর মতো | তারপর থাকে শুধু অনুগমন আর অব্যয় অনেকটা নদী আর বালির মতো... যথাক্রমে |
পড়লাম। ভালোই লাগলো।
উত্তরমুছুনভালো লাগলো। জল ও বরফের ওই জায়গাটা দারুণ
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন