সবর্ণা চট্টোপাধ্যায় 




নার্সিসাস 

বুকে টেনে নিয়ে ছিঁড়েছিলে ব্রা, ফালাফালা। কী ভীষণ জ্বর। ঠোঁট চুষে যে রক্ত এঁকেছিল সিঁথি সে সময়ের পাশে আজকাল তুমিও নিকছ মিথ্যুক!
স্বার্থপরের মতো অন্তত বলো না, 'বিবাহিত'
আদপে বিবাহ মানে কি গোঁসাই ?
যতবার ওই জিভ ছুঁয়েছে নাভি , ততবার ওই নারীকে স্পর্শ করেছ কোনদিন? যে চোখ মিথ্যে বলেনি কখনও অথচ শব্দের ঝড়ে বারবার চুরমার হয়েছে কাচ, তাকে কী কেবল তোমার নিজেকেই সান্ত্বনা দেওয়া বলি?

শিশ্নে মুখ রেখে আর কে মুখাগ্নি করেছে নিজের? যে আশ্রয় টুকরোটুকরো করছ বারবার সেই তো বোঝে একমাত্র কখন কিভাবে চোখ রাখতে হয় মানুষখেকো বাঘের চোখে! 



 

ঝেড়ে ফেলে দাও, আঁকড়ে ধরব তবু
কতবার যাবে? মন তো তোমারো আছে
ভালো যে বেসেছ, চেয়েছ নিজের করে
তবে কেন আজ রয়েছ দূরেতে সরে?

কেন বলো তুমি ও শাখা পুরোনো বড়ো
ভাঙা ডালপালা শুকনো পাতায় মোড়া
আমি তাতে আজ দেখেছি যে দুটি পাতা
নতুন জলেতে সিক্ত হয়েছে গোড়া।

ডালেতে আবার এসেছে ছোট্ট কুঁড়ি
বিশ্বাস করো, আমিও এখনো কুড়ি!
যেসব ঝরার ঝরে গেছে গত শীতে
ভালোবাসতেই এসেছি এ পৃথিবীতে।

তারপর যদি অগ্নিতে বিঁধে মারো
ছিঁড়ে দিয়ে ফুল করে দাও কুচিকুচি
তখনও বলি তোমাকেই ভালোবাসি
অশান্তিকেই জড়িয়ে জীবন বাঁচি!

'এ কেমন বাঁচা, এ কেমন বোকা তুমি?'
'স্বার্থপরতা, বুঝবে না কোনদিন,
এ বাঁচা নয়তো লাভের হিসাব কোন
বিন্দু জলেতে গড়া এক এক দিন'

কাটিয়েছি আর গড়েছি শরীর যার
ঈশ্বর জানে ভালোবাসা নাম তার!






অহং?
কিসের জোরে তবে প্রেমিক বলো আজও?
যে আকাশ নদীর বুকে ঝাঁপ দিয়ে সূর্যকে ঘুম পারায় তার আত্মহত্যা আর বুঝবে কবে?
তোমারই জন্য তো ঈশ্বরপ্রেম
তবু এ আঘাত কিসের নার্সিসাস?
ভালোবাসি বলেই কি, এত সহজ?
তুমি জানো, যে ফুল কাঁটা ভালোবাসে তার গায়ে সর্বদা রক্তের ঘ্রাণ…আঘাত বোধহয় মজ্জাগত তার!
সে ধৈর্য হিংস্রতাকে মানুষ করার
সখ বন্দীকে মুক্ত করার
সমুদ্রগর্ভ থেকে সে সাঁতরে আনতে পারে অমৃত কলস,
তোমার জন্য শুধু। 
পথ, সেতো বারবার ভুল বোঝে না। শেষটুকু বুমেরাং না হয়, ক্ষতবিক্ষত প্রতিহিংসায় !





এখন হত্যার সময়। হাসি থেকে ঝরে পড়ছে জল। বৃষ্টি নয়, তবে বরফ জমেছে মাটির ওপর। ফোঁটা ফোঁটা রক্ত ফুটে আছে গোলাপের মতো। 

পাঁজরে ব্যথা হয় রোজ। ক্রমশ দূরে চলে যাওয়া সম্পর্ক আর মানুষে পার্থক্য কতটুকু? পথের দুধারে উঁচু
পাঁচিল। বরফের আচ্ছাদনে ঢাকা পড়েছে দেওয়ালের সবুজ লতাগুলো। কতদিন হাসোনি তুমি, মনে পড়ে?

জলের নিচে তাকিয়েছে ছবি। আগুন ছড়ায়। তারপর পোড়া গন্ধ। ঘুণ ধরা পৃথিবীতে আমার কি আর কোন প্রয়োজন আছে?





কাজের গভীরে ডুবে যাচ্ছে সময়। দূর থেকে শুনি, তুমি কাঁদছ। যাওয়া হয় না কতদিন যে কাছ টেনে মাথায় হাত রেখে বলব, 'ঘুমাও' !

বিশ্রামের ভেতর কে যেন ডানা মেলে। ছায়ার আড়ালে রাত্রি বেড়ে ওঠে আরও। বিষাক্ত রক্তে ভরছে ফুসফুস। তবুও এ প্রেম জেনো আমারই। 

নিজেরই শরীরের ছাই ভরে নিই নিঃস্ব মুঠোর ভেতর। সম্বল শুধু এক এই নদী, যে ধুইয়ে দেবে শেষ ক্লান্তিটুকু! 





কাজ থেকে ফিরে, এসো কোনদিন। গরম কফির সাথে দুদন্ড নরম স্পর্শ। না, আমি কোন আশ্রয় নই। বরং বহুকাল ধরে জাপটে ধরতে চেয়েছি ওই বুক। 

আজকাল ঘুমের সময় ভীষণ অশান্ত লাগে। তোমার মেডিটেশনের পরামর্শে কাজ হয় না আর। তলপেট থেকে একটা অবিশ্বাস্য জিভ স্তনের বোঁটা কামড়ে ধরে । আমি খাতা আঁকড়ে ভাবি চেপে ধরেছি চাঁদ আর ছড়িয়ে পড়ছে জ্যোৎস্না শরীর থেকে শরীরে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন