ছাব্বির আহম্মেদ-এর গুচ্ছ কবিতা 





ঠোঁট থেকে খসে পড়া মেঘ

তোমার ঠোঁট থেকে খসে পড়ছে মেঘ
আমি বেঁচে যাই জিজ্ঞাসা চিহ্নের আগমনে

এখন ঘুমের আগেই তোমার অস্তিত্ব পাই
বসন্তের সুবাসে চারিদিক ম' ম' করছে
শব্দের সঙ্গে জড়ানো কয়েকটা নাম ছড়িয়ে থাকতে দেখে তোমার কথা ভাবি

গোপনে যন্ত্রনা কমায় নক্ষত্র থেকে
ডুবে যাই সুখের গভীরে
তোমার উপস্থিতি যোগ করলে
আমার জীবনে নতুন বছর এসে উপস্থিত হবে

মেঘের ছিপছিপে শরীরে শূন্য আসন
ঠিক আয়নার মতো আমি দেখি তোমার ঠোঁটের যন্ত্রনা

দুপুর রাতের বাটনায় ধীরে ধীরে শান্ত হয়
আর আমি সারাদিন আশেপাশের রাস্তায় পড়ে থাকা প্রেম খুঁজি





ভাতের চামড়া

পৃথিবীর ভেলা এগিয়ে যাচ্ছে
হাতির দাঁতে দাঁড়িয়ে গোটা শিক্ষিত সমাজ
কোথাও এক টুকরো অবকাশ নেই

পাথরের জানলাগুলো উঁচু পাহাড়ের গা থেকে ধাপে ধাপে নামে সূর্য্যের তেজ
জাতির চোখে-মুখে প্রেমের লালসা
হাতের কাছে যতটা দুঃখ ছিল সবই বিলিয়ে দেওয়া

স্বপ্নের তরঙ্গে ভাতের দুর্গন্ধ
নিশির নৈঃশব্দে পেঁচার ঘুম ভাঙে
পথশিশুর কান্নায় কোনো রঙ ছিল না
এমনকি শহরের চামড়ায় সমতলের ঢেউ-আবদ্ধ পেট





ফুলের ধ্রুবতারায় অনামিকা

আমাদের ঘরের কার্নিশে পায়রা আসতো
যেখানে কতগুলো চিঠির গাছ বাঁধা
প্রত্যাশায় ভরিয়ে তুলতাম

ফুলের সৌরভে সমুদ্রের ঢেউ
মরুভূমিতে আমার বসবাস
বুকে যতটুকু নিঃশ্বাস জমে আছে
ততটা মরীচিকার ছাদ ঢেকে রাখে একটি ধ্রুবতারা

কয়লা মাখা আকাশ
আমার বাড়ির দেওয়ালকে ঘিরে ঘুমায়
আর দিগন্তের তর্জনী দিয়ে নাম লিখেছিলাম
রাস্তার পাথরের মতো

আমার অনামিকা খোলা ছিল
পাড়ার পশ্চিমদিকের দুঃখের গলি পর্যন্ত
যত বিশৃঙ্খলা ছিল সবগুলো কুড়িয়ে হাত ধুয়ে নিয়েছি আমি





ডানাকাটা প্রেম

একটা ডানাকাটা পুঁইশাক দিনের মতো বেড়ে উঠলে 
কলমি লতার লোলুপতা নিয়ে ঘুমাই
তখনও আমি ঝলসানো বিকেলকে বুকে জড়িয়ে থাকি

হাতে গোনা দরজার খিল
ঝিঁঝিঁ পোকার প্রেমে যন্ত্রণার গাঢ়ত্ব কমায় 
তাই গনগনে আচের মধ্যে শুয়েও বুকের আগুন নিভু নিভু

ঘুমন্ত পেন্ডুলামে কিছু অর্ধনিমজ্জিত দিন
পোয়াতি নদীর মতো ঘড়ি হয়ে বয়ে চলে 

কয়েকটা ঈশান কোনের ক্রোধ 
দুপুর রাতের বাটনায় ধীরে ধীরে শান্ত হয়
আমি সারাদিন আশেপাশের রাস্তায় পড়ে থাকা প্রেম খুঁজি

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন