অসমিয়া থেকে বাংলা অনুবাদ- বাসুদেব দাস







সনন্ত তাঁতি-র কবিতা

ভাষান্তর: বাসুদেব দাস 




এখন আমি কোথাও যাই না

এখন আমি কোথাও যাই না। তোমার কাছাকাছি থাকি। কখনও তোমার
উদগ্রীব চোখকে অনুসরণ করি।কখনও তোমার দুঃখের এক ফোঁটা চোখের জল নিয়ে
অস্থির হয়ে পড়ি।

এখন আমি কোথাও যাই না। আগের মতো হত্যা করি না সন্ধ্যেবেলার জ্যোৎস্না।
প্রেছ রিলিজের পরে সিনেমার মন্তাজ নিয়ে আলোচনায় বসি। সুন্দরী
রমণীর নিতম্বের মতো কেঁপে ওঠা কোনো প্রেম অথবা নীলাভ জলের স্বচ্ছতার মতো
কোনো পবিত্রতায় এখন আমি নিজেকে অমল করে তুলি না।যদিওবা আমি বিশ্বাস
করি প্রেম এবং পবিত্রতায়।

আগের মতো হেঁটে গিয়ে কোনো বন্ধ দরজায় করাঘাত করে জাগিয়ে তুলি না 
আততায়ীকে। নিমেষের মধ্যে ঘটে যাওয়া কোনো আবেগ বিহ্বল দৃশ্য বা দৃশ্যাবলীকে
নিয়ে রাতে তোলপাড় করে তুলি না। কোনো দুঃখজনক অবাঞ্ছিত ঘটনায়
নদী যখন ফুঁপিয়ে কাঁদে আমি কেবল তখনই উত্তেজিত হয়ে উঠি।

এখন আমি কোথাও যাই না। শোক সভা অথবা ফিল্ম মহোৎসবে।
আমি সরে আসি কবিতার সভা থেকে যখন দেখতে পাই কোনো কোনো
কবির ভেতরে স্বৈরাচারিতা। উদ্বেল দুটি হাতে যখন  জড়িয়ে ধরতে চায়
অন্ধ প্রশংসায় আমি মৃত্যু যন্ত্রণা অনুভব করি‌।

এখন আমি কোথাও যাই না। তোমার কাছাকাছি থাকি। আরম্ভ করি অনুশীলন
যুদ্ধ করার জন্য। বেদনার সঙ্গে যেন নিরসন হয় অন্ধকার। সুখে আপ্লুত হয়ে উঠে
যেন মুখ তোমার দুঃখে ভিজে উঠা মুখ।

এখন আমি কোথাও যাই না। কেবল জন্ম দিই অমল প্রতিভার।



কবিতাকে

কবিতাকে আমি আমার আত্মার সঙ্গে তুলনা করি
আমার আত্মা যেভাবে প্রজ্বলিত করে রেখেছে জীবন ঠিক সেভাবে
কবিতাও এনে দিয়েছে জীবনের মাঝখানে প্রবাহিত একটি নদী 
আমি নদীর তীর থেকে আমার বুকে জল ছিটাই 

দীর্ঘদিন ধরে আমি কবিতার সঙ্গে সহবাস করছি
কবিতার শরীর ছুঁয়ে আমি দীর্ঘক্ষন ঘুমিয়ে পড়ি
পুনরায় আমি জেগে উঠি কবিতার স্পর্শে দীর্ঘদিন আমি এভাবে জীবিত রয়েছি 
আমার সমস্ত আকুলতায় আমার সমস্ত ব্যগ্ৰতায়
আমার সমস্ত সম্পর্কের সঙ্গে জড়িত কবিতা আমার জন্য এনে দেয়
জ্যোৎস্নার ছায়া জীবনকে দাঁড় করিয়ে আমি মাঝেমধ্যে তার ছায়ায় বিশ্রাম নিই
কর্মপটু হয়ে পড়ি ক্লান্তির পরে

কবিতাকে আমি আমার আত্মার সঙ্গে তুলনা করি
আমার আত্মা যেভাবে প্রজ্বলিত করে রেখেছে  জীবন
ঠিক সেভাবে কবিতাও এনে দিয়েছে দুঃখের মধ্যেও প্রোজ্বল কিছু সংবাদ 
আমি আমার রক্তের মধ্যে তাকে পালন করছি খুব উৎফুল্ল হয়ে

দীর্ঘদিন ধরে আমি একটি যুদ্ধের অপেক্ষায় থাকি
কবিতা প্রতিদিন সেই যুদ্ধের জন্য আমার বুকের ভেতরে 
প্রস্তুত করে দেয়  হৃদয়

আমার হৃদয় আগুনের মতো খুব সাহসী হয়ে উঠে।







কুশল দত্ত-এর কবিতা

ভাষান্তর:  বাসুদেব দাস



ডায়াবেটিক

সব কি শেষ হয়ে গেল?
সমস্ত গান সমস্ত কবিতা সমস্ত কাহিনির রচনা কি
কবেই শেষ হয়ে গেল?

কেন আগের মতো চায়ের কাপে পরিচিত গন্ধটি  পাই না?
কেন আগের মতো কবিতা একটা পড়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকি না ?
কেন আগের মতো গান একটা শোনার জন্য উৎকীর্ণ হয়ে থাকি না?
কেন আগের মতো সুখ পাই না পরম বাঞ্ছিত সঙ্গমে?
কেন আগের মতো আত্মহারা হয়ে যাই না দূরের পাহাড়টির মায়ায়?

মুখোশের মায়ায়? বাজারের মায়ায়? সহজলভ্যতার মায়ায়?

সবকিছুতে খুঁত । নিখুঁত কি কেবল কল্পনা ? তাহলে 
কল্পনাকে  অবাস্তব বলে প্রতিনিয়ত নস্যাৎ করার
কসরত করি কেন?

সুখ খোঁজে
অসুখকে ডেকে আনার জন্য?

চায়ের কাপে চিনি খাওয়া ছেড়ে দেবার পর থেকে
প্রশ্নবোধকের মোহমুক্ত কিছু নতুন মোহ
পুনরায় আরম্ভ হওয়া বলে মনে হচ্ছে



ভালোবাসা

এক.
'আজ কয়েক যুগের অন্তে 
পুনরায় দেখাদেখি হবে তার সঙ্গে'

বাক্যটি পড়ে উঠার পরে 
দুটো কথায় নিশ্চিত হওয়া গেল–
প্রথম– তাঁর সঙ্গে আগেও দেখা হয়েছিল
দ্বিতীয়– আজ পুনরায় তাঁর সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা

তবে 
এই অনুসিদ্ধান্তের পরেও 'তিনি' কে
তা কিন্তু এখনও অনিশ্চিতই থেকে গেল

অনিশ্চিত?

কয়েক যুগ আগে দেখা তিনি অনিশ্চিত ছিলেন?
মাঝখানের কয়েক যুগের বয়ে যাওয়া লুইতের জলটুকু
কি কেবল নিশ্চিত ছিল?

তিনি এসেছিলেন– এটা নিশ্চিত হওয়ার পরেও
তিনি কে– তা অনিশ্চিত থেকে গেল

সম্পূর্ণ কথাটা
কয়েক যুগ ধরে আজও ছায়া ছবির মতো
আমি আমার জন্য কে অনিশ্চিত হয়ে থাকার মতো ?

বুদ্ধ পূর্ণিমা রাতে বোধিবৃক্ষের নিচে
হাজার প্রদীপের হাজার বছরের অপেক্ষার
আলোর প্রার্থনার মতো?

আজ কয়েক যুগের পরে
পুনরায় দেখাদেখি হবে আমার তাঁর সঙ্গে
কিন্তু কে তিনি? নিশ্চিতি? অনিশ্চিতি
নাকি যুগপৎ দ্ব্যর্থক অন্য কেউ–


দুই.

কয়েক যুগ ধরে
অবচেতনার নদীটিতে সাঁতার কেটে থাকার পরে
আমার সামনে অবশেষে এই যে এগিয়ে আসছেন তিনি
সাগর সঙ্গম থেকে উৎস সরোবরে ফিরে 
নদীর নির্মল দর্পণে কেঁপে কেঁপে কেঁপে
চেতনায় স্থির হয়েছে একটি প্রতিবিম্ব

ধীরে ধীরে প্রতিবিম্বটি 
স্বেচ্ছায় চেতনা হারিয়ে হয়ে উঠেছে আমি
আমি হয়ে উঠেছি অপলক -অচেতন প্রতিবিম্বটি 
অথবা যুগপৎ দ্ব্যর্থক– একটি হৃদপিণ্ড
অবচেতনেও চেতন
অচেতনেও

আলোর প্রার্থনার মতো
নির্বাণে বিলীয়মান  বিশেষ্য
নির্বাণে নির্বাপিত বিশেষ






নীলিম কুমার-এর কবিতা

ভাষান্তর: বাসুদেব দাস 


প্রেমের ব্রেকফাস্ট

প্রেমের ইঙ্গিতগুলিই ছিল তোমার সেদিনের ব্রেকফাস্ট
অথচ তুমি ভেবেছিলে– ফুলকো ফুলকো লুচি আর
মিহি মিহি আলু ভাজা দিয়ে তুমি পেটভর্তি করেছ।
স্মৃতির বোতল খুলে পুরোনো গানের স্বাদ পাওয়া
এক টুকরো আচারও তুমি চেয়ে এনেছিলে।আর
জিহ্বাকে দিয়েছিলে চকচকে দুপাটি দাঁত দিয়ে
কামড়ে কামড়ে খাবার জন্য!
অথচ জিহ্বা জানত না আচার টুকরো ছিল 
একটা গানে বাজতে থাকা হারমোনিয়ামের সুর …

ব্রেকফাস্টের স্বাদের ঘূলিটা থেকে 
তুমি যতই বেরোতে চাইছিলে, ততই তোমাকে
কিছু একটা টেনে নিচ্ছিল। তোমাকে টানার জন্য
তোমার ভেতরে যে তুমিই ছিলে, সে কথা 
কেউ তোমাকে বলল না

ব্রেকফাস্ট করে তুমি সেদিন ঠিক করেছিলে–
ব্রেকফাস্টই হবে তোমার প্রধান আহারের সময়।
আর অবজ্ঞা করার জন্য আরম্ভ করেছিলে
দুপুরের আহার

তাই আজকাল প্রেমগুলি দুপুর পর্যন্ত থাকেই না
ব্রেকফাস্টেই শেষ।



খবরের কাগজের নগরটি

এই শহরের সবচেয়ে
বুড়ো মানুষটি
প্রতিদিন বারান্দায় বসে অপেক্ষা করে থাকে খবরের কাগজটির জন্য

তার খবরের কাগজটি না পড়া পর্যন্ত যেন এই শহরে
সকালগুলি আসতেই পারে না।

খবরের কাগজটি  না পড়া পর্যন্ত
তাঁর গলা সকালের
এক কাপ চা ও গিলে না।

তাঁর পত্নী চায়ের কাপ নিয়ে
ঠিক তখনই উপস্থিত হয়
যখন তাঁর চোখ পড়তে শুরু করে
প্রথম পৃষ্ঠার শিরোনামগুলি

চায়ের কাপের সঙ্গে তিনি খবরের কাগজটি পড়ে শেষ করে

তারপরে তিনি
স্নান করতে যান
এবং
খবরের কাগজের সমস্ত অক্ষরগুলি ধুয়ে ফেলেন

তিনি খাওয়া চায়ের কাপটা ধুয়ে ফেলেন তাঁর
পত্নী।







সমীর তাঁতী-র কবিতা

ভাষান্তর: বাসুদেব দাস 


তোমার দেহ অরণ্য থেকে ফিরে এলাম

তোমার দেহ অরণ্য থেকে ফিরে এলাম
অন্য একটি দেহের স্মৃতি হয়ে রইব

আমার দেহের হাড়গুলি বাঁশির মতো বাজবে

আজ শূন্যতাকে বলার মতো কিছু নেই
আজ শূন্যতার হাহাকার কুড়িয়ে নেব 

পাখিগুলি একদিন ঘুড়ির মতো নাচবে

কত সন্ধ্যা খসে পড়ছে গোপনে
নিঃসঙ্গতাকে সাজিয়ে নেব ঠোঁট দুটির মতো

একটি চুম্বনের বিনিময়ে শুদ্ধ হবে পৃথিবী

আমাকে তোমার কোন তারা ডাকছে
তার নিদানে একবার শামিল হতে পারলে

এই নির্জন ছায়াপথ মাড়িয়ে তুমি একদিন  গর্ভবতী হবে 



না জেনেই একদিন

না জেনেই একদিন বিশুদ্ধতার দিকে হাত মেলে ছিলাম
বিশুদ্ধ জল আর বিশুদ্ধ মদ
আমি তখনও জানতাম না নরকের পথ কোন দিকে

আমার পবিত্রতায় মুগ্ধ পাখিগুলি গান জুড়ে ছিল
আমার আত্মার বিশুদ্ধ জলাশয়ে মাছগুলি আলোড়ন তুলেছিল
আগুনকে স্পর্শ না করেও জেনেছিলাম নারী শুদ্ধ

আমি পিছলে না পড়া পর্যন্ত পৃথিবী পবিত্র হয়ে ছিল
আমি কেন পিছলে পড়লাম ভগবান কেন বলবে

সম্ভব সময়ই জীবনের অন্তিম শ্রুতলিপি







চন্দনা পাঠক-এর কবিতা

ভাষান্তর: বাসুদেব দাস 



দীনবন্ধু বরুয়া এখন নিঃসঙ্গ

দীনবন্ধু বরুয়ার একটিই রাস্তা,
নাম ঘর থেকে
বৃদ্ধাশ্রমের বারান্দা,
লাঠিতে ভর দিয়ে
প্রতিদিন হাঁটা।
ঈশ্বরের সঙ্গেও
তাঁর একটিই কথা–
'প্রভু তাড়াতাড়ি পার কর।

দীনবন্ধু বরুয়ার একটিই আশা,
ডনবস্কোতে পড়া  
নাতিটির মুখটা
একবার মাত্র দেখা।
ইঞ্জিনিয়ার ছেলে যে নাছোড়বান্দা

আশির দুয়ারে
ঠোকর মারা
বরুয়ার কাজের বোঝাও একটি,
বিদেহী পত্নীর স্মৃতিতে
চোখের জলের মালা গাঁথা

বৃদ্ধ বিপত্নীক বাতগ্রস্ত
দীনবন্ধু বরুয়া... এখন নিঃসঙ্গ



গোপেশ কাকুর স্যান্ডেল জোড়া

গোপেশ কাকুর স্যান্ডেল জোড়া
বাটা কোম্পানির তৈরি
রোদে বৃষ্টিতে হাঁটা
বছরের পরে
বছর অতিক্রান্ত…

গোপেশ কাকুর স্যান্ডেল জোড়া
মাসে- পাক্ষিকে
সেলাই ছেঁড়া,
রহমত মুচির
দোকান পাওয়া।

 রহমত মুচির একটিই কথা–
'দাদা,এই জোড়া ফেলে দাও,
নতুন একজোড়া নাও।'

গোপেশ কাকুর একটিই উত্তর-
' দাঁড়াও দেখছি,
পেনশনটা খুব শীঘ্রই হবে সম্ভবত'

গোপেশ কাকুর স্যান্ডেল জোড়া
পেনশনের কাজে আসা যাওয়া







রাজীব বরদলৈ-এর কবিতা

ভাষান্তর: বাসুদেব দাস 



কথার ছায়াছবি

আজকাল, প্রকৃতির বাইরে সবকিছু অবিশ্বাসী।
যেহেতু, বাহ্যিকতার কোনো সার্থক অনুভূতি 
মন খুঁজে পায় না
প্রতিটি কথার ছায়া, অংকন করে প্রদর্শন করা হয়
প্রতিটি কথার ব্যাখ্যা এবং প্রয়োগের পার্থক্য তথা সংঘাত
অনুভূত হয়
রহস্যের আবর্তে পড়া এই বাহ্যিক পৃথিবী তেমনই ভঙ্গুর।

কথার সাংকেতিক চিহ্নের জটিলতা এবং কৃত্রিমতা অবোধগম্য।
( হয়তো আমি 'সাধারণ' সংজ্ঞার বিশ্বাসী ব্যক্তি বলেই)
যখন 'মৃত্যু ভয়' জীবনের আদি মন্ত্র
যেখানে উচ্চ লালসার যুদ্ধ এবং দমনের নামে
জীবনের মৌলিকতা নষ্ট করে
প্রকৃতির হৃদয় ভেঙ্গে দেহের ওপরে উলঙ্গ নৃত্য করে
যেখানে অধিকার এবং স্বাধীনতা লৌহ কাঠামোতে বন্দি
যেখানে বেঁচে থাকার অধিকার' সন্ধি'য়ে নির্ণয় করে…
তেমন বৃত্ত, জীবন জ্যামিতির অনুকূল কৌশল নয়।
সর্বত্র অন্ধকারের মধ্যে
নিঃসঙ্গ আসা যাওয়া, যে জীবন নামতার এক না মেলা অংকের সূত্র।
কেবল দুপায়ের বিশ্বাসে সমস্ত আস্থা
যে দুই পা ভূমি স্পর্শ করে, প্রতিনিয়ত প্রকৃতিনির্ভর…
সেই মুসলিম ভালোবাসা বাহ্যিকতাকে প্রত্যাখ্যান করে।

আমার 'মৃত্যুভয়' নেই। সেই কথার ছায়া, মৌলিক।
এই সুবিশাল ভূমির সুবাসিত মাদকতা এবং
সীমাহীন অস্থির নিলীম  জলরাশি দৃষ্টিপ্রিয়।
' ঢেউ ব্যাকুল প্রেমের সৌন্দর্য' জীবন গাথার একটি আভিধানিক শব্দ


ভোলার জন্যই…

ভোলার জন্যই স্মৃতির সমাধানহীন কথাগুলি
এক এক করে বুক থেকে জ্বালিয়ে দিই
শৈশব থেকে সঞ্চয় করে রাখা অদৃশ্য ডায়েরির পাতা
আমার নিঃসঙ্গ দিনে প্রতিনিয়ত যে বিরক্ত করে।

যেভাবে আজ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেনি কেউ
জীবনের উজ্জীবিত সময়ের প্রবাহ
সেই গতি ডায়েরির পাতা কীভাবে বাধা দিতে পারে
পায়ে পা মিলিয়ে বিশৃংখল করে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস।

অনেকদিন হল, যে কথা থেকে গেল সেভাবেই
সেই কথায় উঁকি মারে
কপালে কেবল এঁকে রেখে  যায় শুভ্র তিলক
সেই তিলক আমার  না হলেও চলে।

একজন যোদ্ধা ছিল , আমার প্রপিতামহ।
শ্যামল করে রেখেছিল দেশ এবং মানুষ
মৃন্ময় ছিল গায়ের রং, সাজ পোশাক এবং হাসি
সময়ের কোলে ভেসে শেষ হয়ে গেল সব।

কেউ ধরে রাখতে পারল না, শূন্য ঘর, ভিটে
ভুতুড়ে বাড়ি হয়ে পড়ল, ভুতুড়ে বাড়ি।
সেই শ্মশানে এখন একঝাঁক শিয়ালের চিৎকার।
এক সময়ে একজন যোদ্ধা ছিল,মানুষের জন্য যুদ্ধ করা।
যে ডায়েরির পাতা কথা বলার অবকাশ রাখে
সেই আশা একদিন প্রপিতামহের মতোই শেষ হবে 
একই অজুহাতে নিজ হাতে জ্বালিয়ে দিয়েছি 
দিকভ্রান্ত সময়,
কে কোথায় কখন যায় কোনো ঠিক নেই।










Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন