সংযুক্তা পাল-এর কবিতা
সাধন
স্তন্যপায়ী শৈশব
চামড়ের বাতাস গায়ে বড় হল
যেদিন!
বাঁশি তো একান্তে নিল হৃত
সন্ধ্যা–
রাগিনী ছু'ল রাগের নীল
কৌপিন।
দোলনার দড়ি পায়ে
বসন্ত বুকে হেঁটে পৌঁছে গেছে
বিরহীর কাছে,
রঙ্গন–রাঙা ছোপ–রাঙা সূর্য
অস্ত যাবে
এমনই শর্ত দেওয়া আছে;
ভস্মের আঁধার নীড়ে বিনুনির
বেহাগ অনুতাপ
হে জন্ম, আয়ুষ্মতী হও, দীর্ঘ
প্রেমের কাছে
নত হোক ইন্দ্রিয় সন্তাপ।
কাহিনী
আমগন্ধ শুকনো হয় বিছানায়
ঝাড়বাতির নীচে বসে থাকে সুন্যায়না,
ফতিমা,জনমজলি পদ্মিনী;
রিফিউজি ক্যাম্পের দিকে হেঁটে যায় খরিদ্দার
চেকপোস্টের মাথায় নিজের ভুলে জন্ম নেয় গাছ
বেবাক শোকের মিছিল... কাঁটাতার,
মাছিদের লালারস ভালোবেসে দেহগুলো খায়;
নিজেদের শাড়ি খুলে সেদিন বুঝিয়েছিল ওরা
'সব "মাগি"এক'
দেশের ভিতরে দেশ, দেহের ভিতরে দেহ
কাঁটাতার... রক্তস্রাব
যোনির কাহিনীরা চেরা ভূ-খন্ড হয়ে
ভাতের হাঁড়িতে রাখে
চোখ।
সাম্যবাদ-একটি রূপকথা
পাথর খাদানে ব'সে ভাত মাখে স্নেহ
জলস্তর নেমে গেলে বক্সাইটে ঘসা খায় যৌবন;
রক্তাক্ত জঙ্ঘা হাঁটু গেড়ে বসে–
সারি সারি ঝুপড়িতে আলো জ্বলে ওঠে।
রাস্তায় হোর্ডিং–বিজ্ঞাপনে তৃতীয় বিশ্ব,পরনে উন্নয়ন
ল্যাটেরাইট পথ জুড়ে বাষ্প হীন চোখ–দেহে নুনের শোষণ।
নদীর বাঁধের কাছে ফেলে রাখা লাশ
চিৎ হয়ে থাকে–জ্যোৎস্না তার কিবা কাজে আসে!
একটুকরো জমি,একথালা খিচুড়ি
হাতের সামনে পেলে,রাতের আকাশ ছেড়ে
ব্যঙ্গমা–ব্যঙ্গমীও মাটিকে ভালোবাসে।
সুখ
কাত হয়ে শুয়ে থাকা
সিঁদুর বিকেল
প্রজাপতি ঝোলায় ভরে নেয়
রঙিন আয়ুকাল
মৌসুমী বায়ুর শরীরে হেলে
আছে
পৃথিবীর শোক
নদী-তীরে দুধ-সাদা বকেরাও
জানে
এ সময় গল্পে ভরে গেছে;
নীল ব্যাথা যত গাঢ় হয়,
বনময়ূরীর গা থেকে সবুজ
খুঁটে খায়
রাইমোহিনী–
বিভ্রম... মায়া কন্দরে,সুখ তার
নিজস্ব হরিণী।
মমী
জনৈক সম্পাদকের হাতে
পান্ডুলিপি দিয়ে আদর করতে বললেন লেখিকা।
সাম্রাজ্যের প্রতিটা সিঁড়িতে
সাজানো ছিল ক্লিওপেট্রার
আঙুল,জঙ্ঘা, যোনি,স্তন।
সম্পাদক ভালোবাসলেন
ঈজিপ্ট;
পান্ডুলিপির খাতা বদলে
গেল পিরামিড-এ–
সেখানে শুয়ে পড়ার প্রস্তাব
আসার আগেই বেরিয়ে
এলেন লেখিকা।
হত্যা কিংবা আত্মহত্যা...
মৃত্যুর পূর্বে মমী হতে চায়নি
ক্লিওপেট্রা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন