লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল -এর কবিতা





অনিশিক্ত 


নির্দিষ্ট কোন সন্ধ্যা নেই  – তারা মিলিত হতে থাকে বর্তমানে কিংবা পরবর্তীকালের কোন সাঁকো পেরিয়ে –   ফোঁস ফোঁস করে মুখের ভিতরের  সাপ  – এখানে মাতাল অঢেল , তারা নীল দুপুরের কোরাসে শৈশব ভুলে গিয়ে হাতে নেয় নলখাগড়া  – যার পথ মিশে গেছে সমুদ্রের দিকে  

যেহেতু মাতাল হবার কোন বিধিনিষেধ নেই - কিংবা বলা যেতে পারে  –  মাতাল হওয়ার জন্য ট্যাক্স নিচ্ছে আইসোলেশন  – সুতরাং শ্যামা সঙ্গীতের নামে তারা খুলতেই পারে জামা প্যান্ট অন্তর্বাস  – এই ভাবে ইহুদিদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া পানশালাগুলি   পিচ রাস্তার ধারে ধারে জড়িয়ে ধরে সব বয়স। বকাটেদের তাড়নায় একটা একটা পরিচিত নয়ানজুলি  গোপন করে রক্ত কফ ও বীর্য  – আর অনিষিক্ত ডিম্বাণুর জন্য ফুটে থাকে রোগা রোগা শাপলা          





আস্তিক 

    
যে কোন রিপুই সুযোগ পেলে চুমু দেয় গাছের কপোলে ,  তখন চাঁদ কাঁপতে থাকে থরথর । গোপন ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে টান মেরে সরিয়ে দিই বিছানার চাদর । নীরবতা পালনের পাখিরা নদীর আকাশে পাখনা মেলে ,  তারপর শুধু ক্ষতমুখ – স্তনিত পালকে  ঢাকতে ঢাকতে ফিরে যায় মাটির বুকে 

আমি সেই মাটির কাছেই বসে থাকি নিজস্ব বিভায়  – আস্তিক অন্ধকারে ক্রমশ জ্বেলে যাই উই খাওয়া বাঁশির ছিদ্রপথ – আমার মুখের ভাঁজ থেকে আশাহত সব কালো কাপড়ে ঢাকা বাইকগুলো   ফিরে যায় মেট্রোর ধর্ণায় 

নিজেকে মেরে ফেলবার পূর্বেই  আবারও সেই অনন্তের কাছে হাঁটু গাড়ি – আমার বুক চোখ কপাল নাও – আমাকে  ভুলো না  সৃজন  






ভূতভৌরির গল্প 


দেখতে চাইনি কখনো ফুলের প্রদীপ ; রাতজাগা আকাশের অন্ধকার উড়ে যায়  -  সে সুখ বাসা বাঁধে অস্তমেঘের  নিচে  

এ পথের ধারে বেণুখালটি কচুরিপানা বুকে নিয়ে শুয়ে আছে ঝোপঝাড়ের গরিমায় – তার বুকেই হাঁস চরে এতকাল ,  তার কাছে যে জীবন খোঁজে –খুঁজুক ; কেটে ফেলুক হলুদ কেশরীলতা – বোলমুখ থেকে সারি সারি ভুতভৌরি ফুটে আছে – আরো তৃষাতুর – তাকে দ্যাখে নি কেউ – 

রতন কাকি ফুলগুচ্ছ খোঁপায় গুঁজে পেরিয়ে যায়  অবিবাহিত সাঁকো 





রাইচকের ভোর 


মাটির ভিতর শুয়ে থাকা বিছেটির ঘুম ভাঙলে নদীটি শুকিয়ে যায়   ;   শীতল পায়ের পাতায়  শুরু হয় শব্দঝড়  -  পুরো ছয়মাস কাল শুয়ে থাকার পর এই স্নায়ু স্পন্দনে উড়ে আসে এক ঝাঁক কাক 

তাকে রাইচক বলে চিনি , নতুবা কোন সিঁড়ি নেই  – পথের ধাপে বসে রতন বিড়ি টানে  – তা ছাই হবেনা কোনোদিন ,  চাকা বসে যাওয়া আহ্নিকে যতই হিজল পাতার বাতাস লাগুক,  সুন্দরতম পায়ের ছাপের জন্য চুপচাপ বসে থাকার কোনো দর্শন নেই ,  গত সনে চইতকাকি যে গালে  নিশ্বাস ফেলেছিল সেদিকে নাহয়  বুক পাতি ,  আর মিশিয়ে দেই অবাধ্য রোদ  ;  ফরেফরে বাংলা ক্যালেন্ডারটা কেঁপে উঠুক প্রথম বৈশাখে   




নিউটন রং 


একটানা কুড়িয়েছি বকুল  – তারপর দীর্ঘতম তামাটে রং পেরিয়ে একটা পুকুরে চান করতে চায় যে পাখিটি তার ঠোঁটে ঘননীল আকাশপথ  ; তবুও তলানিপ্রায় জলের কাছে ডানা ঝাপটাতে ভালো লাগে  – বৃষ্টির প্রতীক্ষা করা সমস্ত রতন কাকাদের  কাছে বসে মেঘের ক্লান্তিতে বসে স্থলপদ্ম হই 

ভাসমান নীল থেকে  ঝুলতে থাকে থোকা থোকা শিমুল   – ধীরগামী নিউটন  হাওয়া চায় নীরব হৃদয় – তাকিয়ে থাকি পথের দিকে – না চাইলেও আসবে কাটফাটা রোদ ,  হাঁসফাঁস করা ইতিহাসের প্রণয় থেকে  বিন্দুবিন্দু ঘাম  
বাঁকে হারিয়ে যায় ঝরাপাতার উৎসমুখ   

1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন