পৃথ্বীশ দত্তের কবিতা 





মায়া-প্রদীপ


প্রেমের প্রবল সম্মোহনে হৃদয়ে শুধুই 
শূন্যতা জাগে,
প্রেমিকের মন উদ্বাস্তু 
আলোর সংকেত খোঁজে আলোর গভীরে! 
কত কী আছে তার তবু কিছু নেই,
অলীক স্বপ্নগুলো ভনভনে মাছি,
তপ্ত হৃদয়ে সফেদ বেদনা যেনো--
ধান ফোটা খৈ,
শুধু প্রেমিকজনেই জানে নিজেকে কতটা 
শূন্য করে দিলে-
হৃদয়ের নাব্যতা বাড়ে !
কতটা কান্নার বিনিময়ে মনোভূমি পুড়তে থাকে
রাবণের চিতার মতো !

প্রেম তবে কী অবিনশ্বর মায়া-প্রদীপ ?

 

দাগ

সময়ের চেয়ে তরল আর কিছু নয়
সেই তরলের গায়ে নানা রং
নানা রং ঢেলে ঢেলে--
প্রবাহিত সময়ের চিহ্ন পড়ে থাকে
দুই তীরে মরে থাকা ঢেউয়ের স্মৃতিতে,

সময়ই তরল বলে
আমাকে সে ভেদ করে চলে যায় বহু দূরে,
আমি বালিতটে খুঁজি জন্মের দাগ !



বাঁধন

সবকিছু ঝেড়ে ফেলে দিয়ে,
আশা ভরসার ঝকঝকে জামা-
স্বজনের প্রীতি ভাষ্য 
গার্হস্থ্যের মরমি অসুখ 
পথ হেঁটে হেঁটে ক্লান্তির হিসাব 
অনাগত পথের রহস্য দ্যোতনা,
সবকিছু ঝেড়ে ফেলে দিয়ে 
নিতান্ত নিরেট একাকীত্ব চেয়েছি,

তবু বার বার রিনি এসে ভেঙে দিলো 
ধ্যান ও নির্জনতা ।



সেলফোন

সারা পৃথিবীটা করতলে রেখে,
গলিত সময়ের গায়ে
ঢেউ তুলে অনায়াসে নিজেকে
ভাসান দেওয়া যায়,
পৃথিবী ভেসে ভেসে ঠুক্কর খায়
অ্যাপসের প্রলুব্ধ গতরে !
ধ্যানমগ্ন মানুষেরা ব্রহ্মাণ্ড দর্শণ করে
হাতের মুঠোয় ।

শুধু স্বজনের মুখটাই ধোঁয়াশার মত লাগে ।



সমীকরণ

দুঃখ আছে বলেই কী না সুখের মুখটা বর্ণময় !
আঁধার গাঢ় হলে পরে স্ফূলিঙ্গটাও আলোকময়,
মুক্ত আকাশ আছে বলেই চাঁদকে দেখায় বিন্দি যেনো,
নদীর দু'পাড় প্রণয় বাঁধে, তাই তো নদী বইছে জেনো I

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন