পরিতোষ হালদারের কবিতা





১. 
বোতাম


বোতাম খুলে দিলেই বর্ণ; যার কিছু রাত, বাকিরা আদর্শলিপি।

পঞ্চগ্রাম থেকে আসা ক্যালেন্ডার, তারিখগুলো যেখানে ছিটকে পড়ে সেখানে জন্ম হয় দেহ।
দেহরা পোশাক পড়ে, দেহরা ভদ্রলোক।

[দেহ = দীর্ঘশ্বাস / অসীমসংখ্যা (১...২...৩................ n)]

পোশাকের ভেতর যে দশমিক থাকে, তার ডানের সমস্ত সংখ্যা তুমি ও সে।
তুমি, একটি মহাজাগতিক জোড়,
সে, দলছুট কোন পাসওয়ার্ড।

আর্যভট্টের আগে কোন শূন্য ছিল না কিন্তু বোতাম ছিল
সুতরাং,
এসো, জামা পরি আর সমস্ত বর্ণ আটকে রাখি।


২. 
দীর্ঘশ্বাস―এক


ছুঁয়ে দেখো শব্দও দীর্ঘশ্বাস। ওয়েটিং-লিস্টে নাম থাকলেই খুশি।
তারপর সমস্ত শরীরে হংসগ্রাফের খোঁজ।

১০ শব্দে এক স্পর্শ
১০ স্পর্শে এক রূপ
১০ রূপে এক রস
১০ রসে এক গন্ধ
১০ গন্ধে এক দীর্ঘশ্বাস।

অতএব একলক্ষ শব্দ শেষে জন্ম হয় একেকটি দীর্ঘশ্বাস।

শব্দের পেছনে যাবে― অন্ধকার।
অন্ধকারের পেছনে― অন্ধকার।
মোহের সামনে― অন্ধকার।

দীর্ঘশ্বাস কাল তোমার বাড়ি যাবে, তাকে আঁচলভর্তি শব্দ দিও।



৩. 
তুমি


সেট―০

শব্দ ভেঙে গেলে, শূন্য ইচ্ছামত সীমায় আর সীমা শূন্যে থাকতে পারে।
আর
তুমি = একই সাথে শূন্য ও সীমা = শূন্য | সীমা

সেট―১

স্পর্শও নদীমাতৃক কণা যাকে তার কাঁপন দিয়ে গুন করলে শক্তি ফুটে ওঠে।
আর
তুমি = ভিন্ন ভিন্ন কণা ও কাঁপন = কণা | কাঁপন

সেট―২

রূপ একটি ভ্রমণ, যার বর্ণ অসংখ্য চমকে রূপান্তর হয়।
তুমি = বিন্যস্ত বর্ণ ও চমক = বর্ণ | চমক

সুতরাং
তুমি = শূন্য | সীমা | কণা | কাঁপন | বর্ণ | চমক.…...........n




৪. 
তুমি°

এক.
রূপের নামে প্রতারণা উসকে দাও তুমি। তোমার ভেতর ফল ও বি-ফল একাকার।

অংশ এলে তাকে চাঁদনিচক দিও, বক ও বাচ্য দিও।
অভেদে ঝুলিয়ে দিও―
ভেদ-সূচক, কারিগরি সব শিক্ষা সনদ।

দুই.
একটা পুতুল তার পৌণ হারিয়ে ফেলে, কল-কব্জায় ষড়যন্ত্র করে।
মার্গ থেকে ফিরে আসে চিৎজল, পাথর ও অন্যান্য মৌল।

পাণিপ্রার্থী সেইসব নদী ফিরিয়ে দেয় শষ্য, চর্য ও জলাঙ্গ নীল।
ঘরে ঘরে টাঙানো গোল, গোলগোল ত্রসরেণু।

[সংযোগ]
মাথার উপর যত শূন্য তোল না কেন, তুমি আসলে একজন।

তুমি° = ১





৫. 


সংখ্যার ভেতরে কেন কাঁদতে থাক তুমি...

ক. এক শব্দ ও দুই স্বর যোগে সমান আগুন। তিন ঘুমের কাছাকাছি যা দুরন্ত হরিণ।

তোমার প্রজাতন্ত্র দাও―শরীর ও শর্বরী দাও। চুপিচুপি বলো―আমি প্রাচীন জল।

খ. চারে মৌন রেখে, পাঁচটি ভৌতজামা উড়াও এবং বদলে যাওয়া পাথরে ছয় প্যারাডক্স আঁকো।

তোমার সংসারে নদী যাবে; তাকে জল ও জলাঙ্কের বর্গ দিও।
উঠতি লজেন্স আর বাগানভর্তি পাখির সংসদ।

গ. সাত লোক ও আলোক। অষ্টম আপেলে নিষ্ঠুর রেখে জ্বেলে দাও নয় অন্ধকার।

অসীম কোন সংখ্যা নয়, তোমার চিন্তার একটি শুদ্ধ বানান মাত্র।
অথচ আমাদের মাঝের দূরত্ব ০ হলোনা আজও।

০ = যে কোন সংখ্যা/ অসীম।




৬. 
বিরহ

তুমি মূলত একটি গোল, গড়িয়ে গড়িয়ে ইহ থেকে ঐশাণে যাও।
অসংখ্য তুমি―তুমি থেকে তুমি। তুমি। তুমি। তুমি।

আমিও বৃত্তআমি―অহং-ত্বরণে কেবল তোমার দিকে যাই।
অসংখ্য আমি―আমি। আমি। আমি।

যোগ-বিয়োগ-গুন-ভাগে আমরা।
রুট-বর্গ-কিউবে আমরা।
মেঘা-গিগা-টেরা-পেটায় আমরা।
ডেসি-সেন্টি-মিলিতে আমরা।
মাইক্রো-ন্যানো-অ্যাটোয় আমরা।

অগণিত আমরা, আমাদের প্রেম ও টানের অনুপাত একটা ধ্রুবক, যার নাম বিরহ।

(বিরহ = প্রেম / টান) দশমিকের পরও সে চলতে থাকে।

সাত থেকে দশ-এগার হয়ে ৭০০ পর্যন্ত যায় নির্দ্বিধায়। ট্রিলিয়নে গেলেও প্রকৃত প্রেম কখনো শেষ হয়না।


৭. 
বর্ণ

কোন কোন নক্ষত্র পুড়ে যায়।
স্বরে ও
ব্য
ঞ্জ
নে
আবার সে দীর্ঘ দীর্ঘ পথ...

ভাবনা থেকে বর্ণ
জগৎ থেকে বর্ণ

নদী মরে গেলে আরও নদী, আরও আরও বর্ণনা।
শরীরও লালখাতা, যেখানে অসংখ্য জলের হিসাব।

প্রথম―বর্ণ, দ্বিতীয়―অক্ষর, তৃতীয়―রং
আর
শেষত তুমি।

তুমি মানে, ছিদ্রযুক্ত আকাশ―ব্যোম → ব্রহ্ম → শূন্য (০)
তুমিও বর্ণ―



০ ← বর্ণ → ০




৮. 
শরীরাংক = ০০ ব্লাকবক্স

ভোর দেখতে এসে তিনটি দূপুর খুন হয়ে যায়।
তারা সমকোন
প্রতি রেখায় বর্গ এঁকে দেখেছি আমি মূলত রোদ।
তোমার বুকে আকা কিউপিড আর আমি এক দূর্বিনীত পিথাগোরাস।

আমাদের শরীরাংক = একটি ০০ ব্লাকবক্স।

যার দরজায় ঝুমঝুম ইভ, ইভ যত বড় হয়, অন্ধকার তত ছোট হতে থাকে।
আর
পতনোন্মুখ কোন আপেল―
নিজেই ইভ
নিজেই অন্ধকার।

বিন্দু থেকে বিসর্গ আবার বিসর্গ থেকে বিন্দু অব্দি একটা লোকাল ট্রেনের যাত্রী আমরা। স্টেশনগুলোও কি অদ্ভুত চলমান...

বিন্দু। ভোর। দূপুর। রোদ। ইভ। আপেল। বিসর্গ।
বিসর্গ। আপেল। ইভ। রোদ। দুপুর। ভোর। বিন্দু।
@শূন্য।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন