গৌরাঙ্গ মোহান্তের কবিতা
অকেজো কর্টেক্স
বাজারটির দৃষ্টিশোভনতার কথা শুনে দেখতে বেরিয়েছিলাম। আমি যেখানে ফিরে আসবো, কোনোভাবেই সে নাম করটেক্সে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। প্রত্যাবর্তনের পথও ছিলো না পরিজ্ঞাত। আমি হাঁটতে হাঁটতে একটি পরিত্যক্ত পথের মুখোমুখি হই। সে পথ জঙ্গলে আকীর্ণ--ফার্ন আর শটি ছড়িয়ে দিচ্ছে এমারাল্ডের আলোকচ্ছটা।পরিত্যক্ত পথে একসময় ট্রেন চলাচল করতো বলে মনে হলো। জঙ্গল ভেঙে এগিয়ে যেতে বুকে ডাকাবুকোর শক্তি জাগ্রত হলো না। পথ প্রতিমুহূর্তে পুনরুত্থিত হচ্ছে--এ কথা ভেবে পাশেই খুঁজে পাই একটি শীর্ণ ধুলোপথ। সে পথে এগিয়ে প্রবেশ করি একটি অরণ্যে। বৃক্ষের তলদেশ পরিষ্কার, অদৃশ্য ঝাড়ুদার জড়ো করে রেখেছে ঝরা পাতার স্তূপ। ক্লিয়ারিঙে অর্ধকুণ্ডলিত হয়ে আছে একটি কালো সাপ; তার মধ্যশরীরের ব্যাসের দিকে চেয়ে ভাবলাম আমাকে গলাধঃকরণ করা সহজতর। আমি কালবিলম্ব না করে পেছনে ফিরে এলাম। লক্ষ করলাম ছোটো ছোটো ব্যাঙ শূন্যে লাফিয়ে নিক্সের গুহায় কালঘুমে ঢলে পড়ছে। আমি নতুন পথের সন্ধান করি। পরিত্যক্ত পথটির অপর প্রান্তে একটি অনতিপ্রসর হাঁটাপথ পেয়ে যাই; এগিয়ে যেতেই বাংলায় কথোপকথন শুনে আশান্বিত হই। পথের ধারে উপবিষ্ট একজন তরুণী, পাশে দণ্ডায়মান তার মা। আমি তাদের নিকটস্থ হতেই তরুণীটি আমাকে বললো, 'গৌরাঙ্গ কেমন আছেন?' আমি সম্মোহিত। মায়াদর্পণে কি সে আমার নাম দেখেছে? ভাবছি, তার কাছে নিশ্চয়ই পেয়ে যাবো প্রত্যাবর্তনের কলাকৌশল। আমার সামনে উড়ে গেলো ডাবল-ডেকারের ডাকিনী আতশ। মোবাইলে মুদ্রিত নেই গন্তব্যের কোনো সূত্র। আমি কোন ঠিকানায় যাবো মায়াতরুণী?
পদ্মের মৌলিক প্রসারণ
অভিকর্ষকে অগ্রাহ্য করা সম্ভব নয় জেনেও বাতাস সৌরকিরণের বর্ণতরঙ্গে ছড়িয়ে রাখে নিজস্ব আহিরী, শরীরের কলাবৃত্তে ক্রমশ জেগে ওঠে আর্দ্র ধ্বনি। প্লাতাতীরে ওকাম্পো অনুভব করেছিলেন পেগান পেলবতার প্রকৃতি, অরণ্যকামিনী প্রচার করে সে সংবাদ। আমার জন্য যদিও নারকেলশীর্ষে উৎপাদিত হচ্ছে ২০.৯৫% অক্সিজেন, গুস্তাভ দোহের আঁকা নৌকা জেগে আছে স্রোতের অনুকার শব্দমালায়; হারন হাল ধরবার আগে প্রান্তভবনের নির্জনতায় দেখে নিতে চাই পদ্মের মৌলিক প্রসারণ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন