মধুমিতা চক্রবর্তীর কবিতা
মধ্য কলকাতা
এই গলি দিয়ে
সাইকেল চালিয়ে যান তিনি প্রায়শই
বয়স সাতান্ন-আটান্ন হবে, পাজামার ওপর শার্ট, মধ্যদিনের ঘোর লেগে
মাথাটা ঝুঁকে পড়েছে ঘাড়ের কাছে,
শিথিল দুই পা দুদিকে ছড়িয়ে পড়ে তবু রাখা আছে প্যাডেলেই
অভ্যাসে পাশ কাটাচ্ছেন মানুষ, গাড়ি ও
কুকুরের
রাস্তার দুধারের গাছে
একান্ত নিজস্ব বেদনার মত কিছু পাতা
শুকিয়ে গিয়ে তবু আটকে রয়েছে ডালেই
লোকটার মাথায় ঘুরছে হেগেলে আটকে রাখা পেজমার্ক, শঙ্খ ঘোষটা বোধহয় ব্রতীনের কাছে
তাঁর গমন উপেক্ষা করে
বিরাট মাপের ফ্ল্যাটবাড়িরা
একটা বদমেজাজী কাক লাইটপোস্টে ধাক্কা মেরে তাচ্ছিল্যে বলে গেল,"খ্যঃ!"
ঘোর ভাঙে বুঝি, তিনি চাইলেন এবার চোখ তুলে
এ কি দৃষ্টি!
এ কি বলিলিখন!
এই এত লেখা কে পড়ে দেবে নিরক্ষর সমাজকে,
হে বন্ধু, তুমি যদি না বলো কিছু ?
স্থির রৌদ্র, নিঃস্তব্ধ গলিতে
মাথা দোলাতে থাকে কৃষ্ণচূড়া, অমলতাস
"কিছু বলো! কিছু বলো!"
সম্ভ্রমে পথের ধারে দাঁড়িয়ে থাকে সভ্যতা
তিনি এগিয়ে চলেন
মহাকালের সযত্নলালিত দিনলিপি,
অথবা
মনুষ্যজন্মের এক খোঁড়া অজুহাত
'সম্ভ্রমে পথের ধারে দাঁড়িয়ে থাকে সভ্যতা
উত্তরমুছুনতিনি এগিয়ে চলেন'...
এ 'সম্ভ্রম'অর্জন করতে হবে আমাদের আবারও, হারিয়েছি যা বহুকাল –
যেতে হবে জাগরণের পথে...
নতুন করে ভাবতে শেখার কবিতা 🌹
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন