মধুমিতা চক্রবর্তী
সকল বিগতযৌবনা নাতনিদের তাদের ঠাকমারা নিশি ডাকে| সোনামুগের হারিয়ে যাওয়া গন্ধ ঠাকমাদের গায়ে, কাঁচা বয়সের বৌ গোলসাবানে চুল ধুতো আর দুধের কড়া চেছে চুপিচুপি সর মাখত মুখে। পুরুষের খেয়ে যাওয়া পাতে তরিতরকারি পড়ে থাকে না থাকে, রোদে পিঠ দিয়ে ডালের সাথে উত্তুরে হাওয়া মিশিয়েই ভাত খেয়ে নিত একথালা | সারাদিন জল ঘাঁটতে ঘাঁটতে দু হাতের তালু কী ফ্যাকাশে, আর গোড়ালি ফাটার জ্বালা বার মাস ! তবু সন্ধ্যে হলেই চুলে গোড়াকষার ফিতে আর মুখে স্নো.....নিয়ম ভাঙতে ইচ্ছে করলেও ভরসা ছিল না | তাদের মায়েরা সহমরণ থেকে বেঁচে গেছিল, সেই তারা মহাভাগ্যি মনে করত আর ঢেঁকিতে পাড় দিতে দিতে গল্প করত | বিধবা হবার পর যাদের আর তোমরা কাঁদতে দেখোনি, সেই তারা..
বয়ঃসন্ধির তোমাদের গালে ফুস্কুড়ি দেখলেই চন্দন বাটতে শুরু করে দিত মনে আছে! পাছে দাগ পড়ে যায়! আর টেনে ধরে চুল বাঁধা, জোরে না টানলে চুলের গোড়া শক্ত হয়না, মনের গোড়াও, মেয়ে তো...
অথচ তোমরা কি হেলায় মনোযোগ সরাও এখন এধার থেকে ওধার! কত অনায়াসে, কিছুই গা কর না যে! ভুলে যাও সরহলুদ, আয়না, চিরুনি...দেখে তো তারা ভয়ে চিন্তায় শিউরে ওঠে, সন্ধ্যেবেলায় সুপুরিগাছের সারির সাথে অস্থির হাওয়ায় মাথা দোলাতে দোলাতে বলে,
চুলে জল পড়ে না, তেল পড়ে না, গা ধুলি নে, কে তোদের ঘর বাঁচাবে লা... মুখপুড়ি !
ফেলে আসা দিনগুলো.... স্মৃতি কি আদৌ সতত সুখের? লেখাটি দারুন l
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন