কলম যার জীবনের প্রতীক। 

বিপ্লব দত্ত


যা কিছুই ঘটুক বেঁচে থাকে ছেলেবেলা। যাঁর লেখনী বলে দেয় বয়স বাড়লেও ছেলেমানুষিটা রেখো। দেখবে প্রাণহীনতার কষ্টে থাকবে না কখনো। অটুট থাকবে যৌবন আর সে যৌবনে খেলা করবে তোমার শাশ্বত এক সাবলীল ছেলেমানুষী। খেলবে সবসময় যেমন মায়ের কোলে খেলতে। আজও মানুষটাকে দেখলে মনে হয় তার বাল্যকাল এখনো অটুট। বইমেলা যেখানেই হোক সে বর্ধমান বা মুর্শিদাবাদ অথবা কলকাতায় দ্বিধাহীন যুবক চলেছে চওড়া বুকে। প্রাণবন্ত এই মানুষের নাম প্রভাত চৌধুরী। দীর্ঘদিন সাহিত্যসেবক আর তার লেখনী বলে দেয় - এস হে যুবকবৃন্দ একসাথে বাস করি। তরুণদের যেমন আহ্বান তেমনি তার লেখনী অফুরন্ত সাগর জলের মতো। ভালোবাসার প্রাণপুরুষকে অভিবাদন না জানিয়ে উপায় নেই। একদিকে কবি আর অন্যদিকে তারুণ্য স্বমহিমায়। লেখা পড়তে পড়তে কখন যে আমাদের শিশুকালকে টেনে নিয়ে আসে কবিতার শব্দে আর সেখানেই বলে দেন.......একটা মিটারগেজ লাইনের বিবর্ণ ট্রেন ধুঁকতে ধুঁকতে /ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে /কু - ঝিক ঝিক করতে করতে /পার হয়ে গেলো সিয়াকুলের ঝোপ ...... ছোটবেলার এক স্বপ্নের ছবি। যা আমাদের মনিকোঠায় আজও। যৌবনের গতিপথে টেনে নিয়ে যান....... আসলে ছুটতেই হয়/ছোটার জন্যই মানচিত্র, নদীপথ,পাকদন্ডী/ছোটার  জন্যই ফ্লাইওভার,জাতীয় সড়ক........  যৌবনদীপ্ত মানুষ খোঁজে সুখনীড়। সে সুখের অলিন্দে খোঁজে ভালোবাসার অলিন্দ।  কবি লেখেন......... চাবির গোছা থেকে সঠিক চাবিটি চিনিয়ে দেবে/সেই নির্ঘণ্ট চাবিটি পেলে/আমি একের পর এক/ঘর অলিন্দ ঘর এবং ঘর অলিন্দ ঘর/পার হয়ে পৌঁছে যাব অভীপ্স কক্ষে/যেখানে সেই নির্দিষ্ট বাদ্যযন্ত্রটি আছে  ....,... এখানে তিনি ভালোবাসার রূপকে সুচারুভাবে উপস্থাপনা করেছেন। দেখেছেন আর জানতে চেয়েছেন প্রকৃতির কাছে বর্ষাকাল শীতকালকে  ....আমার জানা নেই এই বর্ষাকালের ভিতর কতটা ঝড় এবং বিদ্যুৎ আছে  ... প্রাণিজগতেরব কথা ভেবেই উনি লিখেছেন যা আজ ও কালের কথা। যদি ঝড় আর বিদ্যুৎ সম্পর্কে জানা যেত তবে হয়তো মানুষ প্রাণহীন থেকে বেঁচে যেত। উনি শীতকালকে তেমনভাবে আমল দেননি আর বলেছেন  ......বরফকুচি দিয়ে একটা বল বানালাম,আমি,স্নো বল/এভাবেই আমার স্বপ্নের গাছটা চন্দ্রমল্লিকা হয়ে ডেকে আনলো শীতকাল। যে শীত এক শ্রেণীর মানুষের কষ্টের কারণ। কাঠের ঘোড়া কবিতায় লেখেন  ......আমার একটা কাঠের ঘোড়ার শৈশব ছিল/চোঙা লাগানো গ্রামাফোন ছিল/ আমার কোমড়ে একটা ঘুনসিও ছিল  .......কি সুন্দর ফিরে যাওয়া এক শৈশবে যেখানে আছে মাটির টান আর সে টানেই উনি বুঝিয়ে দেন শৈশব চিরকালীন। আবার অন্যদিকে দেখান  .....কাঠের পায়ের কেন বাকযন্ত্র নেই/কেন শ্রবণ ইন্দ্রিয় নেই/কেন যৌনক্ষুধা নেই  ....... এ প্রশ্ন আমার তোমার আর সকলের। তবে কি কবির কথা অনুযায়ী আমরা  ...... ত্রিভুজের তিনটি কোণের কৌণিক বিন্দুতে/যথাক্রমে হেনাদি কনক এবং আমি অথবা পাতকুয়া দড়িবালতি এবং জল/অথবা যজ্ঞভূমি ঘৃত  .......


এসো কবির সঙ্গে আমরাও বলি - শৈশব যেন অটুট থাকে। আমরা যজ্ঞভূমিতে কখনই যাবো না। 


এই শপথেই কবি অবিচল আজ এবং কাল। 



Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন