আলোক মণ্ডলের কবিতা
১.
ইঁদুর
ইঁদুরটি বড় হচ্ছে। একটা অস্মিতা নিয়ে।
তার লেজটি সবিশেষ সুন্দর ও দীর্ঘতম।
বেড়ে ওঠার পথে বড় বাধা সতীর্থরা।
প্রায়ই তাকে একটা গোঁফওয়ালা বিড়ালের মুখে ঠেলে দেয়।
বেঁচে আসে। আক্কেলমুনির যাদু দণ্ডে। রুমাল হয়ে।
লেজ খতরনাক। ৪৪০ ভোল্টেজ।
লেজহীন মানুষের নিফটি ভ্যালু জিরো।
রোদডহরে লেজপুরান হজমকারী পোস্টমর্ডানও সংস্থাপিত লেজুড়বৃত্তিতে ।
গোঁফওয়ালা বিড়াল জানে গিলে খেতে। ইঁদুরটিও জানে অকল্পনীয় লেজ কথা!
২.
পোকা
ফলের বাজারে সুপুষ্ট রঙচঙে ফল গুলির মধ্যেই বেশী পোকা থাকে
শুধু রঙ আর পুষ্টতা দেখে কামড়ালে পোকা
মুখ থেকে ইসোফেগাল ট্যানেল বরাবর পেটে চলে যেতে পারে!
অনেকেই পোকা হজম করতে পারে না
কেউ-কেউ পারে,তাদের ক্ষিদে অনন্ত।
পোকারা নিরাপদ বাসা ও খাদ্যের আশায় ফলের ভেতরে ঢোকে
এ বিষয়ে পোকার কোন দোষ দেখি না,
মানুষের শরীরে পোকা প্রথমে মাথার ঘিলু তারপর শিরদাঁড়াকে খেতে বেশি পছন্দ করে
কেননা পোকার কোন শিরদাঁড়া নেই
পোকালাগা মানুষ ভোটার লিস্টেরই সম্পদ
ভোটার লিস্টে পোকা লাগে কদাচিৎ!
৩.
ভারচুয়াল
একটি বন্ধুকে আর দেখতেই পাই না
দু'টি বন্ধুকে প্রায়ই দেখতে পাই
তিনটি বন্ধু কথায় কথায় দূরে চলে যায়
তিনটি বন্ধুর কথা আর শুনতে পাই না
দু'টি বন্ধু কোন কথা বলে না
একটি বন্ধুর ডেলি এস এম এস পাই
বন্ধুর মৃত্যুতে বন্ধুটি 'লাইক' মেরে দেয়!
৪.
অরম্য
অস্বস্তি বিরক্তি আর চাপা কান্নার
দখলে মাটি
পা ফেললে ঘাসের ওপরে শিশিরের ছোঁয়া নেই,
হাত বাড়ালে কোন নরম হাত আসেনা এগিয়ে
লোম ওঠা কুকুরের চামড়ার মতো একটা ঘ্যানঘেনে চিত্রকল্প ভেসে বেড়াচ্ছে দৃষ্টিতে
রম্যানি বীক্ষা কই? থেৎলানো মন!
আগাছায় ভরা নদী ক্ষীণ জলরেখা নিয়ে পড়ে আছে,মধ্য শ্রাবণে!
৫.
হুইপ
গতরাতে ঘুমের স্কোর ছিল ৮৬. মোট ঘুম ছিল ৬ ঘণ্টা ১২ মিনিট এরমধ্যে ১ ঘণ্টা ১৩ মিনিট ডিপ,লাইট ৩ ঘণ্টা ৪৭ মিনিট। জেগে ছিলাম ১১ মিনিট। REM মানে,rapid eye movement ছিল ১ ঘণ্টা ১২ মিনিট। এটুকু সময় চোখ মুভমেন্ট করে স্বপ্ন দেখার সময়।কী দেখলাম? দেখলাম আকাশ থেকে একটা থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল আর সবচেয়ে দামি কলম ইতালির" মন্তেগ্রাপ্পা তিবালদি ফুলগর নকটারনাস" যার দাম ৫৫ কোটি টাকা। ৯০০টি হীরা এবং ১০০টি চুনি বসানো সেই কলমটি এসে পড়ল আমার পড়ার টেবিলে। তাড়াতাড়ি এক হাতে রাইফেল অন্য হাতে কলম তুলে নিলাম।তারপর রাইফেলের নলে কলমটি রেখে ট্রিগারে চাপ দিতেই কলমটি হুশ করে উড়ে গিয়ে বিঁধল মহারাজার বুকে।কলমটি পেয়েই তিনিও খচখচ করে লিখে ফেললেন আমার রাতে দেখা স্বপ্নটাকে। তারপর সাংবাদিক ডেকে হাতে তুলে দিতে যাবেন এমন সময় মাননীয় রাজামশাইকে সানুনয়ে বললাম, স্যার ওটা আমার ব্যক্তিগত এবং গোপনীয়! জনসমক্ষে তুলে দিবেন না,প্লীজ! মহারাজ কটাক্ষে বললেন,আরে পেগাস্যাসের যুগে ব্যক্তিগত, গোপনীয়তা বলে কিছু আছে? তুমি তো কমোডিটি, তোমাকে যে কেনে বা বিক্রি করে সে তো তোমার স্বপ্নকেও বেচে বা কেনে,কেনা-বেচায় আবার গোপনীয়তা কি! যাও, চিন্তা কোর না। আজ রাতে তোমার ঘুমের স্কোর যেন হয় সেন্ট পার্সেন্ট সেটা দ্যাখ -এটাই আমার হুইপ!!
৫টি কবিতাই মুগ্ধ করলো। শেষেরটি চমৎকার। অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।
উত্তরমুছুনকবিতাগুলো বিপুল রকমের ভালো।
উত্তরমুছুন৫টি কবিতাই মনোগ্রাহী বিশেষ করে পোকা কবিতাটি মন ছুঁয়ে যায়।কবিকে শুভেচ্ছা।
উত্তরমুছুনঅনবদ্য হয়েছে
উত্তরমুছুনএকটি মন্তব্য পোস্ট করুন