জীবন থেকে কবিতায় এবং কবিতা থেকে জীবনে ফেরা (পর্ব - সাত)

আফজল আলি

যে কোনো শুরুর একটা কৌশল থাকে,  মানে শুরুটা ঠিক কীভাবে করা যাবে । কবিতা লেখার ক্ষেত্রে না হয় ব্যাপারটা বেশির ভাগই সেই গাছে পাখি এসে বসার মতো। কখন যে এসে বসবে , আবার আসার পরে কতক্ষণ থাকবে।  একটা লাইন হঠাৎ ই চলে আসে মাথায় কবিতা হয়ে , তারপর সেই স্বরে আবদ্ধ হয়ে লিপিবদ্ধ করা আগত শব্দের স্রোত । সেই লিপিবদ্ধের সময় হল পাখি যতক্ষণ বসে থাকবে ডালে , অর্থাৎ মনের ডালে। এভাবেই বেশির ভাগ কবিতার সূচনা। সংশোধিত সংযোজন বিয়োজন পরে করা হয় , কাঠামো রচনা হলে। এই নিয়মের বাইরেও আবার আছে , নির্মাণ প্রক্রিয়া।  কবিতাকে নির্মাণ করা।  এ সবই পুরনো কথা , নতুন করে পুনরায় বলা । কিন্তু গদ্য লেখার ক্ষেত্রে এভাবে পাখি এসে বসার মতো হয় না।  গদ্য লেখার ক্ষেত্রে ভাবনা দরকার,  জানার পরিসর দরকার,  তারপর একটা শুরু। শুরু করার ব্যাপারে  একটা ইতস্তত বোধ থাকে , ঠিক কীভাবে শুরু করা যাবে । এই ইতস্তত বোধ ক্রমশ ক্রমশ কেটে যায় বিষয়ের উপর কিছুটা দক্ষতা এলে । এবং লেখার অভ্যাস। 


একজন কবির কাছে বিষাদ আর শূন্যতা বড়ো প্রকট হয়ে ধরা দেয়।  জীবন আসলে তো বিষাদময়-ই। যার পরিণতি মৃত্যু তা কীভাবে আনন্দের হতে পারে । মৃত্যুর মধ্যে কেউ কেউ আধ্যাত্মিক পর্ব খুঁজতে থাকেন , মৃত্যুর মধ্যে ঈশ্বরের অস্তিত্বের সাধ পাওয়া বা পরমাত্মার সাথে মিশে যাওয়ার ভাবনা । অস্তিত্ববাদীদের কাছে এগুলো নিছক সান্ত্বনা হলেও ভাববাদী বা ধর্মবাদে এই ধারণা মর্মবোধক। কিন্তু সে সবই তো আমাদের চোখের বাইরে , দৃশ্যের অতিরিক্ত  , তাই সেগুলো ভাবনার মধ্যে খুব বেশি আসে না।  জীবন তো অস্তিত্বে বিশ্বাসী এবং জৈবিক প্রবাহে ব্যপ্ত।  কাজেই যখন জীবনের নিশানা মৃত্যুতে প্রোথিত তখন তো বিষাদময়তা একটা বড়ো  factor . তাই কবিদের চিন্তায় বিষাদবোধ এবং শূন্যতা ঘুরে ফিরে আসে।  কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা আনন্দ খুঁজে নিই , আশার আলো নিয়ে বাঁচতে থাকি , বাঁচতে চাই । মৃত্যুর অবধারিত কোলে আমরা বেঁচে থাকতে চাই প্রবলভাবে যেন হতাশা কোনো ভাবেই না আসে । আসলে জীবন একটা adjustment.  যাকে আজ খুব কাছের ভাবা হয় , আগামীকাল সে কাছের নাও হতে পারে।  আবার যাকে ভাবা যায় না,  সেই চলে আসে কাছে ।  Adjust করে চলতে হয়।  এই মানিয়ে চলায় আবার সকলে অভ্যস্ত হতে পারে না  , কারণ এই ধারণা উঠে আসে মানিয়ে চলা আসলে পরাজয় বা পিছু হটা।  আমার না পাওয়ার জিনিসটি যে আমার কাছেও আসতে পারে এবং এটা পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালানো দরকার,  অপেক্ষা করা দরকার,  বুদ্ধি লাগানো দরকার,  আর এই সব প্রচেষ্টা হল আসলে positive thinking.  ফলের আশা না করার কথা বলা হলেও , আদপে ফলের আশা সামনে রেখেই জীবনের বিস্তৃতি।  ফলের আশা না করে চলার মধ্যে জড়িয়ে থাকে ওই সান্ত্বনা  বা  হতাশার মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে না পড়ার উপায় মাত্র।  আদপে জীবন ফল-কেন্দ্রিক।   পরীক্ষার শেষে চাকরি , চাকরির শেষে মাইনে , অন্য দিকে বলতে গেলে শ্রমের শেষে পারিশ্রমিক।  আসলে জীবনের টার্গেটটির মধ্যেই নিহিত রয়েছে ফল-সম্ভবা।  তাই ফলের আশা এসেই যায়।  তবে সৃজনশীলতা বা আধ্যাত্মিক চিন্তা চেতনার মধ্যে এই ফল নামক অনুদানটি একটু ভিন্ন ভাবে প্রোথিত থাকে।  এক্ষেত্রে মানসিক সম্পদের বিকাশ হল সেই ফল যা মোক্ষ-লাভের কাছাকাছি।  কাজেই ফলের আশা না করলেও  অলক্ষ্যে ফল চলে আসে । জীবনের প্রাণশক্তি নিহিত আছে positive কিছু আশার ভিতরেই।


আত্ম-বিকাশের মূল জায়গাটা যদি ধরা হয় দেখা যাবে,  একজন মানুষ যখনই নিজের ভিতরের শক্তি জাগ্রত না করতে পারছে , তখন সে অস্থির হয়ে ওঠে । বিষয়টি হচ্ছে এমন , নিজের ভিতরের বৈভব যখন হালকা হতে শুরু করে, তখন একজন মানুষ তার চেনা পরিধির মধ্যে বিভিন্ন মানুষের সাথে যোগাযোগ আরম্ভ করতে থাকে।  যোগাযোগ অন্য কিছু কাজের জন্য করার বিষয়টি কিন্তু আলাদা। আমি বলতে চাইছি অন্তরের  হতাশা জনিত কারণে অন্যের উপর নির্ভরশীলতা বাড়তে থাকা। সে অন্যের চিন্তার দ্বারা আচ্ছন্ন থাকতে চায়,  অন্যের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে থাকতে পছন্দ করে,  এবং নিজেকে একটা ভঙ্গুর অবস্থানে রাখতে পছন্দ করে।  অন্যের দেওয়া শক্তিই  তার কাছে চালিকাশক্তি হয়ে ওঠে । একবার ভেবে দেখলে বোঝা যাবে বিষয়টি কীরকম মারাত্মক negative একজন মানুষের কাছে । নিজের দক্ষতা নিপুণতা এবং অগ্রসর হারিয়ে ক্রমশই নানান জনের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন-ই  হয়ে ওঠে লক্ষ্য কারণ তখন সে না পারে নিজেকে চিনতে,  না পারে নিজের ভিতরের শক্তিকে জাগাতে বা কাজে লাগাতে।  অথচ তার দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি পর্যায় তাকেই ম্যানেজ করতে হয় , জীবনের ধকল নিজেকেই পোয়াতে হয় । মাননীয় পাঠক , আমি কিন্তু স্বামী স্ত্রীর পারস্পরিক বোঝা পড়ার কথা বলছি না  , বলছি নিজের পরিবারের বাইরে অন্য পরিসরের মধ্যে নিজেকে খুঁজতে থাকা। এ এক ভয়ংকর রোগ। আত্মশক্তির অভাব থাকলেই এই রোগ বাসা বাঁধে মনে । আর তখন সুযোগ গ্রহণ করে অন্যেরা।  অবশ্যই তা বন্ধুর ছদ্মবেশে।  যদিও প্রকৃত বন্ধু তেমন নয় , প্রকৃত অভিভাবক তেমন নয় ।  একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলে বোঝা যাবে বর্তমানে মোবাইল ব্যবহারের যুগে এই লক্ষণ এবং ঝোঁক তীব্র আকার নেয় । হাতের কাছেই থাকে নানান দিকে সংযোগের একটি মাধ্যম। 


একজন মানুষের আত্মশক্তির অভাব যে হয়েছে বা হচ্ছে তা আসলে সেই মানুষটি টের পায় না।  সে নিজেকে কিছুটা খুঁজতে বা জানতে চেষ্টা করে নিজের অজান্তেই , অন্যের কাছে।  আর এটাতেই ঘটে বিপদ । সে তখন ক্রমশ ক্রমশ ঢলতে থাকে নানান বন্ধু বান্ধবদের suggestion বা মানসিক বিনিময়ের দিকে , ভুলতে থাকে নিজের দক্ষতার নির্ণায়ক শক্তিকে। বেশির ভাগ সময় এই মানসিক অসঙ্গতি সে নিজে বুঝতে পারে না।  তাই বলে কি জীবনে বন্ধু আড্ডা আলোচনা এগুলো দরকার নেই।  অবশ্যই থাকবে , কিন্তু তা হবে আত্মিক বিকাশের জন্য  , আত্ম ধ্বংসের জন্য নয় । আমরা বেশির ভাগই misguided হই , আমাদের অজান্তে । একটা প্রবচন আছে ,  নিজের বুদ্ধিতে ঠকা  ভালো,  অন্যের বুদ্ধিতে  ভালো হওয়ার  চেয়ে।  একটি দেশের নিরিখে অন্য দেশের সম্পর্ক যোগাযোগ এসবের আওতায় নয় কিন্তু।  ওই ব্যাপারটি আলাদা। আমি মূলত আত্ম-শক্তির উপলব্ধির কথা বলছি ।


আত্মশক্তি ক্ষয়ের লক্ষণ চিহ্ন --

১-  বেশির ভাগ সময় অন্যের সাথে গল্পে কাটানো

২- অবাঞ্ছিত এবং অতিরিক্ত চ্যাটে মগ্ন থাকা

৩- নিজের ভিতরে সব সময় এক ধরনের অস্থিরতা

৪-  নিজেকে ঠিক উপযোগী মনে না করা , অর্থাৎ self confidence হারিয়ে ফেলা

৫-  অন্যের মতামতকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া নিজের জীবনে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করা

৬-  সব সময় ভয়ের মধ্যে থাকা

৭- নিজের সম্পর্কে কে কী ভাববে সেই নিয়ে চিন্তিত থাকা

৮- বেশির ভাগ সময় negative আচরণে কাহিল হয়ে পড়া

৯- নিজের মস্তিষ্ক এবং বুদ্ধি কার্যকর না করার প্রবণতা

১০- সক্রিয় কাজের মধ্যে না থাকা এবং অলস হয়ে পড়া


কিছু লক্ষণ আমি বললাম , আরো কিছু থাকতে পারে, পাঠক সংযোজন করতে পারবেন।

এই রোগ থেকে মুক্তির উপায় যে খুব কঠিন তা কিন্তু নয়।  আত্মক্ষয় থেকে বাঁচতে প্রথমেই যেটা খুব দরকারি তা হল  নিজেকে কাজের মধ্যে engage রাখা এবং না-বাচক চিন্তা দূর করা । অতিরিক্ত দূরের চিন্তা করার দরকার নেই।  আর এ বিষয়ে সবচেয়ে বড়ো support ,তা হল বই পড়া । যে কোনো বই । গল্পের বই , কবিতার বই , জ্ঞান বিজ্ঞানের বই , এছাড়া নানাবিধ।  তবে অবশ্যই পর্ণবই বা পর্ণছবি  নয় । বই পড়ার অভ্যাস অর্জন করার মধ্যে দুরন্ত ভাবে নিহিত থাকে নিজেকে জানা এবং চেনার এক অনন্য উপায়।  এটা আমরা সঠিক বুঝতে পারি না।  সেই জন্যই বলা হয় বই হল প্রকৃত বন্ধু  যা কখনও ক্ষতিসাধন করে না।  পড়ার সাথে অর্জন হয় শক্তি,  এ শক্তি হল মানসিক শক্তি যা একজনকে খুব দ্রুত বদলে দিতে পারে ভালোর দিকে , আলোর দিকে।  বই পড়তে পড়তে নিজের ভিতরে এমন শক্তি আসবে যা অবাঞ্ছিত সব কিছুকে ছেঁটে ফেলতে সক্ষম হবে।  আর এতেই কাজ হবে অনেকটা। যদি পরীক্ষা করতে চান তবে আজই  শুরু করতে পারেন । এছাড়াও ধর্মীয় কিছু কিছু নিয়ম মেনে চলা । এটা আপাতদৃষ্টিতে বুদ্ধিহীন মনে হলেও,  আসলে তা নয়।  ধর্মীয় রীতি অবশ্যই ভালোর জন্য,  মানুষকে ঘৃণার জন্য নয় । ধর্মীয় রীতি না মানলে যে আত্মশক্তির বিকাশ সঠিক হবে না,  এই নিয়ে তর্কের মধ্যে যাওয়া এই প্রবন্ধের কাজ নয় । তাই এই বিষয়ে আমি আপাতত বিরতিতে থাকলাম । কিন্তু বই পড়া হল এক শক্তিশালী মাধ্যম বা অভ্যাস যা একটা মানুষকে অনেক কিছু দিতে পারে।  যাদের বই পড়া অভ্যাস নেই তারা অভ্যাস করতে পারেন । ঠিক এখানেই আর একটা বিষয় যোগ করার থাকে তা হল সৃজনী কাজে নিজেকে ব্যবহার করা।  সৃজনী কাজ যে শুধু সাহিত্য বা শিল্প চর্চা , তা নয়।  যে কোনো কাজ-ই  সৃজনী-কাজ হয়ে ওঠে , এ কথা আমি জিরো বাউন্ডারি কনসেপ্টে বলেছি । তাই যারা তথাকথিত শিল্প চর্চায় নেই , তারা তো কাজের মধ্যে দিয়েই সৃজনী চর্চা করতে পারবে।


একজন কবি যখন কবিতা লেখেন , তখন তার মধ্যে চলে আসে বেঁচে থাকার উদ্দীপনা,  নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা , নিজের অন্তরের আবেগ শব্দরূপে নির্গমনে অদ্ভুত অনুভূতির জারণ হওয়া।  এই সব প্রক্রিয়াগুলো একসঙ্গে একজন কবিকে অনেকটা মানসিক support দিতে থাকে  ,  সেই সঙ্গে আত্ম বিশ্বাস বাড়িয়ে দেয় অনেকগুণ।  আর আত্ম বিশ্বাস বাড়লেই আত্ম-শক্তি স্বয়ংক্রিয় ভাবে বাড়ে । ফলে কবি এক সময় নিজেকে king ভাবতে থাকে আপন মনের সাম্রাজ্যে। কবির অনেক ধনদৌলত না থাকলেও , মর্মে সে রাজা । এই রাজা-বোধ -সত্তা তাকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে শেখায় , প্রতিবাদের যোশ নিয়ে আনে এবং স্বাধীনতা-প্রিয় করে তোলে । সেই জন্য একজন কবি আপন ভাবের ঘোরে থাকে নিমজ্জিত,  তখন তাঁর খুব বেশি প্রয়োজন পড়ে না অনেকের আছে শক্তি ধার নিতে। হ্যাঁ কবি সাহিত্য আড্ডাবাজ হতে পারে,  সকলের সাথে মিশতে পারে , কিন্তু সে একা এবং একক। সে তার সৃষ্টির কাছে দায়বদ্ধ ,  বাকি অনেক কিছু হেলায় উড়িয়ে দিতে পারে । অদ্ভুত এক আত্ম-শক্তি।  তবে ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়।  থাকতে পারে । এই নিয়ে কিছু আলোচনা আগে হয়তো করেছি তবে তা অন্য প্রসঙ্গে ছিল । আত্মবিশ্বাসী মানুষের বিপথগামী হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।  কিছু কিছু ব্যতিক্রম তো থাকেই । নেপোলিয়ান বলতেন কোনো কিছুই অসম্ভব নয় মানুষের পক্ষে,  আবার হিটলারের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ছিল বটে , কিন্তু তা কি যুদ্ধবাজ,  ধ্বংসের নয় । যদিও ওটি রাজনৈতিক এবং সামরিক প্রেক্ষাপটে।  আমরা কি আর তৃতীয়  বিশ্বযুদ্ধ চাই । একজন সুস্থ মানুষের ভাবনায় এ সব আসতে পারে কি ।


যে কোনো ভালো কাজের মধ্যে নিযুক্ত থাকলে তা ব্যক্তিসত্তায় সুন্দর effect তৈরি করে।  সুন্দর মন ও মননের পক্ষে অবশ্যই শক্তিশালী।  একজন মানুষ যদি ভাবতে পারে যে এই মুহুর্তের পর থেকে তার দ্বারা আর কোনো কিছু খারাপ কাজ বা চিন্তা সমাধা হবে না,  এবং সেই মতো কাজে নেমে পড়ে তাহলেই তো সে সফল । আর এর জন্য দরকার নিজের মনের শক্তি।  বেশির ভাগ মানুষের প্রকৃতি হল খারাপ কাজ থেকে বিরত হওয়া।  তবে তাই যদি হয় তাহলে এত অপরাধ বা অন্যায় সংগঠিত হচ্ছে কীভাবে।  এর মূল কারণ হল একজন মানুষের মধ্যে ঘটতে থাকা চলমান সঙ্কট এবং ক্ষমতা , আর এই সঙ্কটের অভিমুখ থাকে personal  , political অথবা উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া।  ক্ষমতা এবং প্রভাব অপরাধ ঘটাতে সাহায্য করে এবং ঘটায় ও  । অপরাধ সংঘটিত ভাবে হতে পারে ।  এ সব প্রসঙ্গান্তর।  ফিরে আসা যাক আত্ম-শক্তির বিকাশে।  মানুষ সুখ খুঁজতে চায় এবং সুখে থাকতে চায়।  কিন্তু সুখ এত অস্থির , তাকে ধরে রাখা দায় ।  কবিতা কি কিছুটা সুখ দিতে পারে না অন্তরে । এর উত্তর যদি আমাকে দিতে বলা হয়,  আমি অবশ্যই বলব , হ্যাঁ পারে । কবিতা না লিখলেও সুখ পাওয়া যায়।  কিন্তু কবিতা লেখার মধ্যে কোথাও যেন স্বর্গীয় সুখের অনুভব থাকে  , বিদ্যুত-স্পর্শ থাকে যা কবিকে করে তোলে মাসুম , করে তুলতে চায়। এমনটা নয় যে সমস্ত কবি মাসুম বা নিষ্পাপ।  কিন্তু কবিতা আত্ম বিশ্বাস এবং আত্ম-শক্তি বাড়িয়ে তোলে , তোলেই। কারণ শব্দের মধ্যে ব্রহ্ম-শক্তি আছে যে । অর্থাৎ লেখা এবং পড়া ।  নিহিত থাকে আত্ম শক্তি বিকাশের পথ। অর্থ ধন্ সম্পদ এসবের কথা আনলাম না কেন এই আলোচনায়।  আমি কি রামকৃষ্ণের পথ ধরলাম,  মাটি টাকা , টাকা মাটি।


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন