আমাদের নাসের হোসেন 

সমরেন্দ্র রায়

'নাসের' এক, 'কবিতা পাক্ষিক' দুই, 'প্রভাত চৌধুরী' তিন। অতএব এক+এক+এক = এক, হাঁ একক 'নাসের হোসেন'। আর মাথার উপর একটি ছাতা, যিনি ধরে থাকেন তাঁর নাম যূথিকা চৌধুরী, 'কবিতা পাক্ষিক' পরিবারের অভিভাবিকা। নাসের-একক' থেকে গোটা বাংলা জুড়ে সাহিত্য জগতের প্রবেশ পথে ছিল আমাদের প্রিয় কবি, সাহিত্যিক, চিত্রকর নাসের হোসেন। তাঁর অকালপ্রয়াণ আমাদের  শুধুমাত্র দুঃখের মধ্যে ফেলে রাখেনি, রেখে গিয়েছেন অজস্র সাহিত্য-কর্মকাণ্ড।  এছাড়া তাঁর মানবিক মূল্যবোধ এক পূর্ণ মানুষ হিসাবে স্মরণীয় হয়ে থেকে গেলেন সাহিত্যমনন হৃদকল্পে, অন্তরচিত্তে।

বিশেষ করে ১৯৯৩ সালের 'কবিতাপাক্ষিক' জন্মলগ্ন থেকে আমার ঘনিষ্ঠতা। ১৯৯৬ সালে 'সমিধ' সাহিত্য প্রকাশ কাল থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি ছিলেন আমার চরম হিতাকাঙ্ক্ষী।  এই ২৮ বছর ধরে দেখেছি শুধুমাত্র 'কবিতাপাক্ষিক' এবং 'সমিধ' পত্রিকাই নয়, অনেক পত্র পত্রিকার সাথে, অনেক তরুণ ও বয়স্ক কবি সাহিত্যিকের সাথে জড়িয়ে ছিলেন অঙ্গাঙ্গী-ভাবে, পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ভাবে সহায়তা করেছেন নির্বিবাদে। 


বরহমপুরের ছেলে হয়ে চাকুরি সুত্রে কলকাতায় তার গমনাগমন।  যখন বহরমপুরে আসতেন, তখন প্রতি শনি ও রবিবার সন্ধ্যায় স্কয়ার ফিল্ডে আমাদের নিয়মিত আড্ডা জমে উঠত সাহিত্য সমেত নানা বিষয়ে। মুর্শিদাবাদের কবি, সাহিত্যিকগন পর্যায়ক্রমে এই আড্ডায় যোগ দিতেন। এখন নাসের-এর অদৃশ্য উপস্থিতি টের পাই অবলীলাক্রমে।


নাসের অকালে আমাদের ছেড়ে অদৃশ্য হলেও আমরা কবি নাসের, সাহিত্যিক নাসের, মানুষ নাসেরকে স্বযত্নে সাজিয়ে রেখেছি আমাদের অন্তঃস্থলে, অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন