মহাকাশ মহাশূন্য
শৈলেশ্বর ঘোষ
নক্ষত্রহীন আকাশ....স্বপ্নলোকের ছায়া, তোমাদেরই আমি সম্বোধন করি..
এসো সরস্বতী, এবারের বসন্তে আমরা মাটি থেকে শূন্যে জেগে উঠি,
এখানেই আমাদের পরিচয়, দূরত্ব ও ব্যবধান...এখানেই আমাদের সহবাস,
এখানে যে সূর্য ওঠে তাকেই আমরা কাছে পাই- সকলের মাঝখানে থেকে
হঠাৎই বড় নিঃস্ব বোধ করি- যথেষ্ট দূরে আছি বলে মাধ্যাকর্ষণ ছিন্ন হয়,
যে নিয়মে একদিন আগুন ছিলাম সেই নিয়মেই আবার মাটি হয়ে যাই।
তবে নিঃস্বত সম্পর্কে আরও কিছু কথা আছে- মানুষেরই রক্তে ফুল ফোটে
এ শূন্যে এখনও কিছুটা জায়গা আছে- পাহাড় আর সমুদ্র ভালবাসার দুই চিহ
ছুরি আর বন্দুক ফেলে দিতে হল তাও ধর্ম আছে বলে নয়,দরিদ্র যে চায় অন্ন !
য আমি চেয়েছি তাই আমি পাই- তারপর এক অন্ধকার নামে- যে মাঠে
সন্ন্যাসী শুয়ে আছে- বুকে এক ফুল, উদ্দীপনাময় – গণিকারা চেনে তাকে
এ আকাশের রং ক্লে পালটে দেয়- কালো মেঘ আর তার পালিত পাখি ভিন্ন?
দুঃখে মানুষ কাঁদে কিন্তু দেবতারা তাকে প্রতিভাত করে খুনে আর ধর্ষনে-
আমার মাস্তুল সমুদ্রকে চায়, কল্পনায় ভেজে,প্রতিটি জোয়ারের টানে !
আগুনের ধর্মে যে জ্বলে সেই হয় মাটি আর জল- অস্থিমজ্জা
আর-এক নির্সগ আনে-
না-শোয়া শব্দতরঙ্গগুলি একে একে জড়ো হয়, বলে, ‘পার হও দেখি এ
দূরত্বসমুদ্র, ভালবাসায় স্বচ্ছ করো কালো এ আকাশ’- আদিবাসী শরীরের ঘ্রানে
শিউরে ওঠে প্রতি লোমকূপ- কি ভাবছো সরস্বতী, পা তোল আমার বুকে-
অনাবিষ্কৃত ধাতুর মত গোপন থেকে যাব আমরা- কুয়াশার মত ভেসে বেড়াই
যখন, অর্থ আর তাৎপর্য সব হারিয়ে মিশে যাই মানুষ আর পাখিদের গানে !
কালো এই রাত্রির বুকে আমরা কি যে খুঁজে পাই, বুক থেকে রক্ত ঝরেছিল বলে
আজ সে ফুলেদের চেনে... একা আছি এ উপত্যকায়...লিপি সরস্বতী হলে,
পাহাড় আর তার বুকে প্রপাতের মত ওতঃপ্রোত হই... ছিন্নভিন্ন করি সংসার
সুর্যকে পেয়েছে বলে গাছ সবুজ, বহন করে নিজের ওজন আর শুন্যতার ভার !
এ নির্সগে মৃত্যু আর কল্পনা নয়- স্বপ্নের শবের উপর সন্ন্যাসীর আরাধনা-
ফুল তাকে চিবিয়ে খাই, পাপড়ির অন্ধকারে আমি পুরোপুরি কানা,
সরস্বতী পা তোল- সম্মোহিত আকাশ আসছে নেমে....রক্তের জোয়ার
শুরু হলে ধূলিময় শূন্যে নক্ষত্রের খেলা....ছড়িয়ে দাও পাখা আকাশের নৌকা!
দৃষ্টিহীন যে সেই বেদনাহীন- আমি যে দেখেছি তোমার অভাবনীয় আকার
এ মহাশূন্যে প্রবেশ করার আগে উন্মুক্ত কর ঊরু, স্তন, যোনি আর পা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন