কবি প্রভাত চৌধুরীকে নিয়ে গদ্য
বিশ্বজিৎ দাস

আক্ষরিক অর্থেই বাংলা কবিতার আমি কেউ নই। তবুও এ কথা বলতেই হচ্ছে, আলাপের সূত্রে ভূবনডাঙা’র সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বললেন; কবি প্রভাত চৌধুরীকে(কবিতা) নিয়ে গদ্য লিখতে। সামান্য কিছুদিনের পরিচয় প্রভাত চৌধুরীর সাথে এক বইমেলায়, সালটা ২০১৬ সাথে আফজল আলি। ব্যস এটুকুই। এখন তাঁকে নিয়ে গদ্য লেখবার যে ভার দিয়েছেন আমিনুলদা এবার সেই বিষয়ের দিকে এগোই—
শত্রু কিংবা বন্ধুর প্রতিচ্ছবি নয়, ভক্তের প্রসাদ নয়; এক আড়ম্বরহীন জীবনের মধ্যেই শুরু হয়েছিল পোস্টমডার্ন কবিতার বিজ্ঞাপন। প্রজ্ঞাপক প্রভাত চৌধুরী। জন্ম - ১৯৪৪, বাসুদেবপুর বাঁকুড়া। হ্যাঁ তিনিই প্রভাত চৌধুরী, যিনি ‘কবিতা পাক্ষিক’ সম্পাদক। ‘শুধু প্রেমিকার জন্য’(১৯৬৬) সাল থেকে আজ পর্যন্ত কলম চলছে নিয়তির মতো! আজ তাই বিতর্কে না গিয়ে, তাঁর লেখাতেই তাঁকে স্বাগত জানাবো।

“‘স্বপ্ন’ নামক একটি টয়ট্রেন, যার জানলায়” বসে কবি দেখেন ‘বিশশতকের যে ব্যাঙটি এখনো ঘুমিয়ে আছে’; তার হৃদয়ে ‘ইন্টারনেটের বৃষ্টিপাত’ এবং ‘করমর্দনের হলুদ সূর্যোদয়’। জীবনের জেব্রাক্রসিং পার হতে গিয়ে কবি রম্বসের আর্তনাদ শুনতে পান। সেই অনুভবে এবং তাঁর স্পর্শে বাংলা কবিতায় ‘হালকা বাদামি রঙের যে নূপুর শব্দটি ভেসে আসছে’, তাকে নিয়ে তিনি এক ‘জন্মান্ধ ম্যান্ডলিনবাদকে’র কাছে ‘সমুদ্রভ্রমণের হলুদ গল্প’ শোনার জন্য দাঁড়ান। যে গল্পে বিবাহমঙ্গল আছে, মায়াডোর আছে। আছে ৪৯ পটলডাঙা স্ট্রিটের না বলা হাজারো মিথ, জৈষ্ঠের নূপুর আর কবিজন্মের নানান কাহিনী। আমার ব্যক্তিগতভাবে মনেহয়, স্বর্গীয় হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিধানে উল্লেখিত সমস্ত শব্দই তিনি কবিতায় ব্যবহার করেছেন। শুধু তাই নয়, কবি প্রভাত চৌধরীর ‘নোটবই’ ও ‘সাক্ষাত্কার, আবার সাক্ষাত্কার’ বইদুটি হাতে করেই বলা যায়; শরীর, গণিত, মর্নিংওয়ার্ক, বাদ্যযন্ত্র, ভূগোল, জীবজন্তু, পাখি, পোঁকামাকড়, ক্যালেন্ডার, মাতৃভবন, বর্ণপরিচয়, ফুল, ফল, খেলা, ট্রান্সপোর্ট, কৃ জাত শব্দ এবং জগতের এক ব্যতিক্রমী কিছু সাক্ষাত্কার নিয়ে বাংলা কবিতায় পোস্টমডার্ন কবিতার নিঃশব্দ বিপ্লব ঘটিয়েছেন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন